Cyclone Dana Effect: বিঘার পর বিঘা চাষের জমি জলের তলায়! 'দুবেলা খাব কী'? চিন্তায় কৃষকরা
Cyclone Effect in West Bengal: ফুল চাষি বাসুদেব গোস্বামী বলেন, '৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে চাষ গোলাপ চাষ করেছিলাম। জানি না কী করে শোধ করব।'
ঝড়ের তাণ্ডব থেকে রেহাই পেলেও ভারী বৃষ্টিতে ভাসছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলা। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুরের বিঘার পর বিঘা চাষের জমি জলের তলায়। জমা জলে পড়ে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের।
পূর্ব মেদিনীপুরের ফুল চাষি বাসুদেব গোস্বামী বলেন, '৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে চাষ গোলাপ চাষ করেছিলাম। জানি না কী করে শোধ করব। মৃত্যু ছাড়া কোনও উপায় নেই।' পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষক দুর্গা জানা বলেন, 'পাকা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। আলু শেষ। সব সবজি নষ্ট হয়ে গেছে।'
জলে ডুবে আছে ধান গাছ। সবজির জমিতেও জল থৈ থৈ করছে। আর কদিন পরেই ধান কাটার সময়। তার আগে মাথায় হাত কৃষকদের। ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায়।
বাঁকুড়ার কোতুলপুরে কংসাবতী সেচ ক্যানাল ভেঙে হরিহট্টপুর মৌজা সংলগ্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। কোতুলপুরের কৃষক কালু রায় বলেন, 'ক্যানেলটি কোনোরকম সংস্কার করা হয়নি এবং রক্ষণাবেক্ষণেরও অভাব রয়েছে। গাফিলতি রয়েছে সেচ দপ্তরের। যার জেরে ক্যানেলের পাড় ভেঙ্গে বিপত্তি।'
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিষ্ণুপুর সাব ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, তেমনভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি ধানজমির। ক্যানেল মেরামতের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
রাইপুর, সারেঙ্গাতেও টানা বৃষ্টির জেরে জল জমে গেছে বেশিরভাগ চাষের জমিতে। বাঁকুড়ার কৃষক অজয় নন্দী, 'প্রচন্ড ক্ষতি হয়েছে। দুবেলার খাবার জোগাড় করব কী করে বুঝতে পারছি না। ধার শোধ করা তো অনেক দূরের কথা।'
পশ্চিম মেদিনীপুর, গড়বেতা, ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, দাঁতনের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। টানা বৃষ্টির জেরে বেশিরভাগ ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে। একই ছবি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বৃন্দাবনপুর, পঞ্চমদূর্গা, নস্করদিঘি, গোঁসাইবেড়, মাইসোরা- সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, 'দুর্যোগ থেকে বাঁচতে রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে এবং চাষিদের কাছ থেকে লিখিত নথি জমা পড়লে প্রশাসন সঠিক ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারবে।'
গত মাসেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল এই জেলায়। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের যন্ত্রণা বাড়ল কৃষকদের। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, লালগড়, বেলপাহাড়ি এলাকায় শীতের সবজি চাষ শুরু হয়ে গেছে। টানা বৃষ্টির জেরে জলের তলায় সবজির চারা।
মাঠের ফসল না থাকলে পেটের ভাত কীভাবে জোগাড় করবেন, তাই ভেবে চিন্তায় কৃষকরা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে