Yass Cyclone Update : ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা ; চাষিভাইরা পাকা ধান কেটে নিন, সবজি-ফলের ক্ষেত সুরক্ষিত রাখুন
২৩ মে থেকে ২৬ মে-র মধ্যে উপকূলবর্তী এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু হতে পারে। তুমুল ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।
কলকাতা : বাংলার আকাশে ফের ঘূর্ণিঝড়়ের ভ্রুকুটি। ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিয়ে 'ইয়াস' ধেয়ে আসতে পারে বাংলায়। মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে উপকূলবর্তী জেলাগুলিকে। সতর্কীকরণ বার্তা দিতে কৃষকদের ফসল রক্ষায় নির্দেশিকা জারি করেছে কৃষি দফতরও। কী কী রয়েছে সেই নির্দেশিকায়, দেখে নেওয়া যাক। কৃষি দফতরের বার্তা মূলত দক্ষিণবঙ্গের কৃষকদের জন্য।
- মাঠে যাদের পাকা বোরো ধান রয়েছে, সত্বর কেটে গুদামজাত করার ব্যবস্থা করুন।
- তৈলবীজ, ডালশস্য দ্রুত কেটে ঝেড়ে সুরক্ষিত জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
- তিল ও পাটের জমি থেকে বৃষ্টির জল যাতে দ্রুত বের করে দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে
- সবজি ও ফল, বিশেষ করে পেঁপে, কলা জাতীয় ফলের গাছ যেগুলির ঝড়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে সেগুলি যাতে ঝড়়ে ভেঙে না পড়ে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
- সবজির মাচা, পানের বোরোজকে শক্ত করে বেঁধে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে ভেঙে না পরে।
- সবজির জমিতে জমা জল দ্রুত বের করার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর প্রয়োজনে ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হবে।
- উপরোক্ত কাজগুলি করার সময় কোভিড ১৯ সংক্রান্ত নিয়ম মেনে চলুন। দূরত্ব বজায় রাখুন। সাবান দিয়ে হাত ধোবেন।
কৃষি দফতরের তরফ থেকে আরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে গৃহপালিত পশু-পাখি সহ সকলের নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা নিতে হবে। এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত খবরে নজর রাখতে হবে।
এদিকে, আসন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় আজও বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে প্রস্তুত থাকতে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সাইক্লোন সেন্টার ও আশ্রয়স্থলগুলিকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে তৎপর থাকতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক কাজও শুরু হয়েছে জেলায়। সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, সাগর ব্লকে আঠেরোটি সাইক্লোন সেন্টারে আপাতত দুর্গতদের সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তৈরি রাখা হচ্ছে চৌত্রিশটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল,একশো চব্বিশটি প্রাইমারি স্কুল এবং কিছু শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ও ICDS কেন্দ্র। বৈঠক করেছেন কাকদ্বীপ, ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসকরাও। প্রাথমিকভাবে ঘোড়ামারা উপকূলবর্তী এলাকার প্রায় ৪০০জনকে বিবেকানন্দ হাইস্কুল ও ফুলাবাড়ি শীতলা হাইস্কুলে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। সাগরে কর্মতীর্থকেও বিকল্প আশ্রয় হিসেবে তৈরি রাখা হচ্ছে।
প্রস্তুতি শুরু করেছে কলকাতা পৌরনিগমও। আধিকারিকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় বৈঠকের পর পৌরনিগমের তরফে দেবাশিস কুমার জানান বিদ্যুৎ চলে গেলে যাতে পানীয় জল সরবরাহে সমস্যা না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকছে। মূল জল সরবরাহ স্টেশন, এবং বুস্টার পাম্পিং স্টেশনগুলিতে জেনারেটরের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। প্রতি বরোর জন্য থাকবে টিম। রাস্তা পরিষ্কার, গাছ উপড়ে গেলে তার ব্যবস্থা নেওয়া এবং যে কোনও জরুরিভিত্তিক প্রয়োজনের জন্য তৈরি থাকছে কলকাতা পৌরনিগম। কাউকে স্থানান্তরের প্রয়োজন পড়লে স্কুল বাড়়ি এবং কমিউনিটি হল তৈরি রাখা হচ্ছে।