Nadia News: ছেলের মৃত্যুর পর ৪ দিন পার, দেহ আগলে রাখলেন মা
Nadia Death Mystery: ছেলের মৃত্যুর পর ৪ দিন পার, মৃতদেহ আগলে রেখেই দৈনন্দিন কাজ সারলেন মা। চোখ কপালে প্রতিবেশীদের।
সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার নদিয়ার রাণাঘাটে। ছেলের মৃত্যুর পর চার দিন ধরে দেহ আগলে রাখলেন মা। দুর্গন্ধ বের হতেই স্থানীয়রা খবর দেন পুরসভায়। পরে রাণাঘাট থানার পুলিশ উদ্ধার করল পচা গলা দেহ (Dead body Rescue)।
রাণাঘাট শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর ৭৫ সাধনা দাস। স্বামীর মৃত্যুর পর বড় ছেলে স্বপন দাসকে নিয়েই এক চিলতে বাড়িতে থাকতেন তিনি। বছর ৫৭-র স্বপনের শহরের কামারপাড়ায় একটি জেরক্সের দোকান রয়েছে। দিন চারেক আগে শেষবার তাঁকে এলাকায় দেখা গিয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সোমবার সকালে ওই বাড়ি থেকে বিকট দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। ছেলের মৃতদেহ আগলে রেখেই অন্যান্য দিনের মতো দৈনন্দিন কাজ করছিলেন বৃদ্ধ মা। তাঁর এই কর্মকাণ্ডে হতভাগ প্রতিবেশীরাও। পরে রাণাঘাট পুরসভা ও পুলিশের তৎপরতায় মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বাইশ সালেও এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। মৃত ছেলেকে জীবিত ভেবে ২৪ ঘণ্টা আগলে রেখেছিলেন মা। প্রতিবেশীদের দাবি, দশ বছর আগে ছোটছেলের মৃত্যুর পর আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন বছর ৫৮-এর ওই মহিলা। স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল। মেঝেতে শুয়ে আছেন ছেলে। জল খাওয়াচ্ছিলেন মা। তবে, সেই জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছিল মেঝেতেই। মহেশতলার (Maheshtala) চককেন্দুয়ার এই বাড়িতে ঢুকে এমনই ছবি দেখেছিলেন বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Pargana) মহেশতলা। মৃত ছেলেকে জীবিত ভেবে ২৪ ঘণ্টা আগলে রেখেছিলেন মা।
মৃতের মা বলেছিলেন, 'ছেলের শরীর খারাপ, তাই আজ অফিস যায়নি। ওর বন্ধু-বান্ধবরা হাসপাতালে নিয়ে গেল।' প্রতিবেশীদের দাবি ছিল, দীর্ঘদিন ধরে এই বাড়িতেই ভাড়া থাকছিলেন বছর ৫৮-র বকুল সেনগুপ্ত ও তাঁর বড়ছেলে কৌশিক সেনগুপ্ত। স্বামীর মৃত্যুর পর আয়কর দফতরে চাকরি পান বকুল।দশবছর আগে ছোটছেলের মৃত্যুর পর আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন। সকাল থেকে কোনও সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্দেহ হওয়ায় রাত ১০টা নাগাদ বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন কয়েকজন। বছর ৩৯-এর কৌশিক সেনগুপ্তকে দেখেই বুঝতে পারেন মৃত্যু হয়েছে তাঁর কিন্তু, ছেলের যে মৃত্যু হয়েছে তেমনটা মানতে রাজি ছিলেন না মা। প্রতিবেশীরা খবর দেন স্থানীয় কাউন্সিলরকে। এক চিকিৎসককে বাড়িতে আনার ব্যবস্থা করেছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর।
আরও পড়ুন, মা দুর্গার পাশে পূজারীর বেশে মদন মিত্র ! নিজের প্রতিকৃতি অবাক TMC বিধায়ক
চিকিৎসক জানিয়েছিন, অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে কৌশিক সেনগুপ্তর। মহেশতলা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর মুকুল মণ্ডল জানিয়েছিলেন, আমি আমার উদ্যোগে ডাক্তার এনেছিলাম। শেষকৃত্যের ব্যবস্থা। মৃতের প্রতিবেশী মহুয়া নস্কর জানিয়েছিলেন, ১০ বছর আগে ছোটছেলে মারা গিয়েছে, অথচ বলেন বাইরে আছে। স্বামী মারা গিয়েছে বহু আগে তবু বলেন এখানে থাকেন না। শেষকৃত্যের জন্য ছেলেকে যখন শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনও ষাট ছুঁইছুঁই একাকী বকুল সেনগুপ্তর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল চিকিৎসার পরই ঘরে ফিরবে ছেলে।