Durga Puja 2023: সপ্তমী ও দশমীর বার অনুসারে দেবীর কীসে আগমন-গমন, তারফলই বা কী ?
পঞ্জিকা মতে এবার সপ্তমী শনিবার তাই দেবীর আগমন ঘোটকে এবং দশমী মঙ্গলবার তাই গমনও ঘোটকে।
সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : জানুয়ারি মাসে নতুন ইংরিজি ক্যালেন্ডার হাতে পেলে আপামর বাঙালি সেপ্টেম্বর - অক্টোবরে পরপর চারটে লাল দাগ খোঁজে। অর্থাৎ কিনা দুর্গা পুজো কবে পড়ল সেটাই প্রথম খোঁজ পড়ে। পঞ্জিকা হাতে পেলে বা আকাশে পুজো পুজো ভাব এলে আমরা জানার চেষ্টা করি দেবী এবার কিসে আসছেন আর কিসেই বা যাচ্ছেন। পঞ্জিকা মতে এবার সপ্তমী শনিবার তাই দেবীর আগমন ঘোটকে এবং দশমী মঙ্গলবার তাই গমনও ঘোটকে।
আমরা যেমন অফিস যেতে, স্কুল - কলেজ - আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়ি যেতে কখনো বাস, কখনো মেট্রো, কখনো ট্যাক্সি বা কখনো অন্য কিছু ব্যবহার করতে পারি, তেমনই দেবী দুর্গাও কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসতে যেতে চার ধরনের যান ব্যবহার করেন।
- সপ্তমী বা দশমী কী বারে পড়ছে তার ওপর নির্ধারিত হয় দেবীর সে বছর কীসে আসবেন ও কীসে যাবেন। আবার তাঁর নির্ধারিত যানের ওপর নির্ভর করে সে সময় প্রকৃতি কেমন থাকবে।“ রবৌ চন্দ্রে গজারূঢ়া, ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ, গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং নৌকায়াং বুধবাসরে।” অর্থাৎ সপ্তমী বা দশমী যদি রবিবার এবং সোমবার হয়, তাহলে দুর্গার আগমন ও গমন হবে গজে অর্থাৎ হাতিতে। এর ফল- “গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা”। পৌরাণিক কাল থেকে দেব-দেবী, রাজা- মহারাজাদের কাছে গজ অর্থাৎ হাতি রাজকীয় মর্যাদা পেয়েছে। হয়তো সেজন্যই দেবী দুর্গার গজে আগমন ও গমনকে কেন্দ্র করে বসুন্ধরা শস্যপূর্ণ হয়ে মানুষের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যের কল্পনা করা হয়েছে।
- একই ভাবে শনিবার বা মঙ্গলবারে সপ্তমী বা দশমী পড়লে দেবীর আগমন ও গমন হবে, ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায়। এর ফল- “ছত্রভঙ্গস্তুরঙ্গমে”। ঘোটক বা ঘোড়া যেমন ছটফটে কেমনই ঘোটকে আগমন ও গমনে সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, গৃহযুদ্ধ, রাজনৈতিক উত্থান- পতন ও সাংসারিক ক্ষেত্রেও অস্থিরতা, দুর্ঘটনা, অপমৃত্যু প্রকাশ পাবে।
- সপ্তমী বা দশমী যদি বৃহস্পতি ও শুক্রবারে হয় তাহলে দেবীর আগমন ও গমন হবে দোলায়। এর ফল- “দোলায়াং মরকং ভবেৎ”। দোলায় আগমন ও গমন সবচেয়ে অশুভ। দোলা যেন চরাচর দুলিয়ে দিয়ে যাবে। মহামারী, ভূমিকম্প, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, খরা ইত্যাদির প্রভাবে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হবে।
- যদি বুধবারে সপ্তমী বা দশমী হয় তবে দেবী দুর্গার যান হবে নৌকা। অর্থাৎ আগমন ও গমন হবে, নৌকায়। এর ফল-“শস্যবৃদ্ধিস্তুথাজলম”। এ ক্ষেত্রে প্রবল বন্যা, ঝড়, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির ফলে একদিকে প্লাবন ও ক্ষয়ক্ষতি অন্যদিকে দ্বিগুণ শস্যবৃদ্ধি।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, একমাত্র গজ ছাড়া দেবী দুর্গার অন্য তিন যানবাহনের ফলই ধ্বংসাত্মক। শুধুমাত্র গজই প্রয়োজনীয় বৃষ্টিধারায় বসুন্ধরাকে ধন-ধান্যে সমৃদ্ধ করে তোলে। যদিও এই শ্লোক বা তার ফলের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কারণ হিন্দু শাস্ত্রে সবকিছুই নির্ধারিত হয়েছে তিথি অনুসারে। তার সম্পূর্ণ উল্টো পথে হেঁটে এই শ্লোক তৈরি হয়েছে বার অনুসারে।
আরও পড়ুন :