Durga Puja: হারিয়েছে জাঁকজমক-জৌলুস, বাহিন বাড়ির দুর্গাপুজোর দায়িত্ব পালন করে চলেছেন গ্রামের বাসিন্দারাই
Durga Puja 2023: জমিদার রুদ্র প্রতাপ চৌধুরীর উত্তরাধিকারীরা বাহিন জমিদারবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন বহুদিন আগেই। এখনও এখানে পড়ে আছে সেই অট্টালিকা। সেই প্রাসাদে আজও চলে পুজো
সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: বহুদিন ধরেই ঐতিহ্যবাহী বাহিন (Bahin Bari) জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো বর্তমানে সর্বজনীন দুর্গোৎসব (Durga Puja) হিসেবে পরিণত হয়ে এসেছে। নেই জমিদার বা জমিদারির অস্তিত্ব। তৎকালীন জমিদারদের ছেড়ে যাওয়া ভগ্নদশাগ্রস্ত, জঙ্গলাকীর্ণ, প্রাসাদ-জমিদারবাড়ি এখন অতীতের সাক্ষী বহন করে স্মৃতি আঁকড়ে রয়েছে। ক্ষণিকের দৃষ্টিপাতও করেন না একদা জমিদারের বর্তমান শহুরে উত্তরসূরীরা। আর তাই বেশ কয়েক বছর ধরে একসময়ের এলাকার জমিদারের পুজোকে ধরে রেখেছেন রায়গঞ্জের বাহিন গ্রামের বাসিন্দারা।
পুজোর ইতিহাস
উত্তর দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়ির পুজোর মধ্যে অন্যতম পুজো ছিল রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন জমিদারবাড়ির দুর্গা পুজো। অবিভক্ত বাংলাদেশের দিনাজপুরের জমিদার রুদ্র প্রতাপ চৌধুরীর জমিদারি ছিল বাহিন, কুমারজল, মাকড়া, মধুপুর, লহুজগ্রাম সহ বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে। নাগর নদীর ধার ঘেঁষে ছিল জমিদারের প্রাসাদসম অট্টালিকা। আর জমিদারবাড়ির দুর্গাপুজো এলাকার প্রজাদের সাতদিন ধরে ভুড়িভোজ আর আমোদপ্রমোদের আয়োজনও ছিল। সে সময় বাহিন জমিদারবাড়ির দূর্গোৎসবে বসত যাত্রাপালার আসর, থিয়েটার, সার্কাস ও বিশাল মেলা। জমিদার রুদ্র প্রতাপ চৌধুরীর আমলে এই অঞ্চলের প্রজারা দুর্গাপুজোর ক'টা দিন কাটাতেন আমোদে-প্রমোদে।
আজ নেই সেই জমিদার এবং জমিদারি প্রথা। জমিদার রুদ্র প্রতাপ চৌধুরীর উত্তরাধিকারীরা বাহিন জমিদারবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন বহুদিন আগেই। এখনও এখানে পড়ে আছে সেই অট্টালিকা। জমিদারবাড়ির দুর্গাপুজো অবশ্য সেই জাঁকজমকপূর্ণতা হারিয়ে এখন গ্রামের গরীব বাসিন্দাদের হাতেই অর্পিত।
আরও পড়ুন, মধু ও কৈটভের মৃত্যু তো শ্রীবিষ্ণুর চক্রে, তাহলে তাতে দেবী মহামায়ার কী ভূমিকা ?
স্থানীয়দের কথায়, ফিরেও তাকান না স্বর্গীয় জমিদারের শহুরে নবপ্রজন্মের বংশধরেরা। ঐতিহ্যের বাহিন জমিদারবাড়ির পুজো তাই এখন সর্বজনীন। এলাকার বাসিন্দারাই চাঁদা তুলে ও বর্তমানে সরকারি পুজোর অনুদানে জমিদারবাড়ির ঠাকুরদালানে কোনওরকমে মায়ের আরাধনা করে চলেছেন। তবে ঐতিহ্যের ধারাকে অব্যাহত রেখে আজও দশমীতে মেলার আয়োজনটুকু করছেন আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন। আর ওই দশমীর মেলাটিকে আঁকড়ে ধরেই বাহিন জমিদারবাড়ির পুজোর ঐতিহ্য বজায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টায় এলাকার বাসিন্দারা। বাকি ইতিহাসে পড়েছে ধুলো, সময়ের ধারায় মলিন হয়েছে স্মৃতি।