![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
Durga puja 2021: ছৌ মুখোশের আদলে দেবীর মুখ, পুরুলিয়ার ১২০০ বছরের এই পুজোর ইতিহাস রোমাঞ্চকর
পরবর্তী সময়ে পুরুলিয়ার প্রাচীন সংস্কৃতি ছৌ নাচের মুখোশ কে অনুসরণ করে দেবী দুর্গার মূর্তি পুজো শুরু হয়।
![Durga puja 2021: ছৌ মুখোশের আদলে দেবীর মুখ, পুরুলিয়ার ১২০০ বছরের এই পুজোর ইতিহাস রোমাঞ্চকর Durga puja special Purulia durga 1200 years of puja has its own history Durga puja 2021: ছৌ মুখোশের আদলে দেবীর মুখ, পুরুলিয়ার ১২০০ বছরের এই পুজোর ইতিহাস রোমাঞ্চকর](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/09/29/e52ed2cb37c47c052af8cf9e6b41ad6e_original.jpeg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার ঝালদা থানার দুর্গম পাহাড় জঙ্গল ঘেরা রাজাহেঁসলা গ্রামের রাজ পরিবারের পুজোতে চলছে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি । এখানকার এই দুর্গা পুজো শুরু হয়েছিল প্রায় ১২০০ শত বছর আগে। মোগলদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বেশিরভাগ হিন্দু রাজা আত্মগোপন করেছিলেন। নিজের প্রাণ ও মহিলাদের সন্মান বাঁচাতেই আত্মগোপনের পথ নিয়েছিলেন ছোটো বড় অনেক রাজাই। পাড়ি দিয়েছিলেন পশ্চিম ভারত থেকে পূর্ব ভারতের গভীর অরণ্যের আদিবাসী উপত্যকায়।
জয়পুর এর যোধপুর থেকে এমনই এক হিন্দু রাজপুত রাজা দিগবিজয় প্রতাপ সিংহ দেও এসে ছিলেন পুরুলিয়ার ঝালদা থানার এই দুর্গম অঞ্চলে। চারিদিকে উঁচু নিচু পাহাড় ও গভীর জঙ্গলে ঘেরা হেঁসলা গ্রামে। তৎকালীন সময়ে এই দুর্গম অঞ্চলের আদিবাসীরা ঐ রাজার সঙ্গে সংঘাতে পরাজিত হয়ে রাজার বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। মোট ২৪ টি মৌজার দখলদারী পান ঐ রাজা। পরে রাজা তৈরি করেন কাছারি,বাগানবাড়ি,নাটমহল, ঠাকুর দালান ও ১২ টি সুবৃহৎ পুকুর খনন করান।
পাহাড় জঙ্গল কেটে তৈরি করেন রাজপ্রাসাদ, ধীরে ধীরে এলাকায় রাজত্ব বিস্তার করে প্রায় ১২০০ বছর আগে রাজার তৈরি ঐ ঠাকুর দালানে শক্তির দেবী হিসেবে মা দুর্গার পুজো শুরু করেন। প্রথমত শক্তি রুপে দেবীর খড়গ পুজো শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে পুরুলিয়ার প্রাচীন সংস্কৃতি ছৌ নাচের মুখোশ কে অনুসরণ করে দেবী দুর্গার মূর্তি পুজো শুরু হয়। রাজবাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দুরে পাহাড়ী ঝর্ণা হেঁসলা নদী থেকে ঘটা করে ঢাক বাদ্যের সঙ্গে বন্দুকের গুলি চালিয়ে রাজা ঐ নদীতে ডুব দিয়ে দেবী দুর্গার ঘট রাজবাড়িতে আনতেন।
বর্তমানেও সেই একই রকম প্রথা চালু আছে। তবে বন্দুকের গুলির আওয়াজ এর বদলে শব্দবাজী ফাটানো হয়। আগে ষষ্টি থেকে দশমী পর্যন্ত চলতো ছাগ ও মোষ বলি। এখন আর বলি হয় না। তবে দেবীদুর্গার পুজো সেই প্রাচীন বৈষ্ণব ও বৈদিক রীতি মেনেই হয়। সেদিনের সেই রাজা কিংবা তাঁর রাজত্ব এখন আর কোনোটাই নেই। আছে শুধু রাজপ্রাসাদ, কাছারিবাড়ি,ঠাকুরদালান,নাটমহল এবং পুকুর গুলি। যদিও ঐ বড়িগুলি বর্তমানে জরাজীর্ণ। রাজবাড়ির বর্তমান বংশ প্রজন্ম এখন এখানে কেউ থাকেন না। শুধু একজন কেয়ারটেকার ঐ ভগ্নপ্রায় বাড়িগুলির দেখভাল করেন। একদা মাওবাদী উপদ্রুত ঝালদার প্রত্যন্ত দুর্গম এই রাজা হেঁসলা গ্রামে এখনও স্বমহিমায় দেবী দুর্গা পুজিত হন। বর্তমানে পুজোর সমস্ত কিছুর আয়োজন করেন গ্রামবাসীরাই।
পুজোর সময় আবার নতুন করে সেজে উঠে এই রাজপ্রাসাদ ।ভগ্নপ্রায় ঐ বাড়িটি যেন ফিরে পায় পুরান সেই রাজ ঐতিহ্য। যদিও বর্তমান দিনে এলাকায় আরও অনেক দুর্গা পুজোই হয়। তবুও এলাকার মানুষ ভীড় জমায় এই রাজবাড়িতে । প্রাচীন দুর্গা পুজো হিসেবে ভক্তরা পুজো দিতে আসেন এখানেই। এই রাজ বংশের বংশধরেরা দেশ বিদেশের যে প্রান্তেই থাক না কেন দুর্গা পুজোর সময় সকলেই এখানে এসে উপস্থিত হন। মহা- সমারোহ ও ধুমধাম করে চলে পুজো পাট। এলাকার মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে মিলেমিশে আনন্দ উপভোগ করেন বর্তমান রাজবংশধরেরা।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)