(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
East BurdwanNews : ৮৮৩ জন পড়ুয়ার জন্য শিক্ষিকা মাত্র ৭ জন! এই স্কুলে অঙ্ক করান ক্লার্ক
East Burdwan Purbasthali School : পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে, যে বিজ্ঞানের শিক্ষিকা না থাকায়, সপ্তম শ্রেণির অঙ্কের ক্লাস নিচ্ছেন স্কুলের ক্লার্ক!
রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান : পঞ্চম থেকে দ্বাদশ। ৮টি ক্লাসে ১৪টি সেকশন। ৮৮৩ জন পড়ুয়া। আর সেখানে, প্রধান শিক্ষিকাকে ধরে স্কুলে শিক্ষিকা মাত্র ৭ জন। এমনই করুণ অবস্থা, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের একমাত্র গার্লস হাইস্কুলের। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে, যে বিজ্ঞানের শিক্ষিকা না থাকায়, সপ্তম শ্রেণির অঙ্কের ক্লাস নিচ্ছেন স্কুলের ক্লার্ক!
আপনি কি অঙ্কের শিক্ষক, এই প্রশ্ন করতেই সাবিত্রী বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লার্ক সুমন্ত সাহা জানিয়েছেন, তিনি অঙ্কে অনার্স গ্র্যাজুয়েট। তাই প্রধানশিক্ষিকা তাঁকে ক্লাস নিতে বলেন। তাই তিনি পড়ুয়াদের স্বার্থেই ক্লাস নিয়ে থাকেন তাঁর অফিসিয়াল কাজ সামলে। প্রধান শিক্ষিকা জানিয়েছেন, গত দেড়বছরে ১৩ জন শিক্ষিকা মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে বদলি নিয়েছেন। ৪ জন শিক্ষিকা অবসর নিয়েছেন। বদলি নিয়েছেন একজন ক্লার্ক ও ২ জন গ্রুপ ডি কর্মী।
প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী পাল আরও বলেন, ' যাঁরা স্বাস্থ্যের কারণে বদলি নিয়েছেন, স্কুলে থাকাকালীন তাঁদের অধিকাংশই মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে কোনওদিন ছুটি নেননি। এমনকি, শিক্ষিকারা চলে গেলে পঠনপাঠনে সমস্যা হবে, এটাও শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছিল, '
যদিও, এবিষয়ে মুখ খুলতে চাননি জেলা স্কুল পরিদর্শক। রাজ্যের সরকারি স্কুলে শিক্ষক বদলি নীতি নিয়ে, বারবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। পর্যবেক্ষণে তিনি বলেছিলেন, যেখানে ছাত্র নেই কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিক্ষক আছেন, সেখান থেকে শিক্ষক অন্যত্র বদলি করতে হবে। ফাঁকা স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে যাওয়ার বিরোধিতা কোনও শিক্ষক করলে, তাঁকে বরখাস্ত করার কথাও বলেছিলেন বিচারপতি।
পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, সবাই বাড়ির পাশের স্কুলে বদলি চাইলে স্কুল চলবে কী করে? ছাত্রের অভাবে স্কুল উঠে যেতে বসেছে এরকম বহু স্কুলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিক্ষক আছে,আবার প্রচুর ছাত্র আছে কিন্তু শিক্ষক নেই এই পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। আদালত পড়ুয়াদের ভবিষ্যত ভেবে শঙ্কিত।
এই পরিস্থিতিতে, পূর্বস্থলীর এই সকুলের প্রধান শিক্ষিকার বদলি-দাবি ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। টাকার লেনদেনে বদলি হয়েছে বলে দাবি, বিজেপি, কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সীমা ভট্টাচার্য। তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্য়ায়ের দাবি রাজনীতি করছেন প্রধান শিক্ষিকা ।
১৬৭ জন পড়ুয়া। চলতি বছরে সংখ্যাটা কমে ৪৩ হলেও, পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪-এ সংখ্যাটা হবে ১০০ জন। সেখানেই, এই দশা ! সপ্তাহখানেক আগে, পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের নিরোল কনকলতা জুনিয়র গার্লস হাইস্কুলে ভাড়া করা শিক্ষক-শিক্ষিকা দিয়ে স্কুল চালানোর অভিযোগ ওঠে। এবার পূর্ব বর্ধমানের আরও এক স্কুলের করুণ ছবি সামনে এল।