Kolaghat Thermal Power Station: দূষণের জের, কোলাঘাটে ভেঙে ফেলা হল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি চিমনি
East Midnapore: ১৯৮৪ সালে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের তিনটি ইউনিটের উদ্বোধন করেছিলেন।

বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: দূষণের (Air Pollution) জেরে আগেই বন্ধ করা হয়েছিল কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের (Kolaghat Thermal Power Station) প্রথম দফার ১ ও ২ নম্বর ইউনিট। এবার ভেঙে ফেলা হল দুটি চিমনি। ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রবেশদ্বারে এবার দেখা যাবে ৬টির বদলে ৪টি চিমনি।
ভেঙে ফেলা হল দুটি চিমনি: পূর্ব মেদিনীপুরের প্রবেশ দ্বার কোলাঘাট বলতে এককথায় চেনা যেত কোলাঘাট থার্মল পাওয়ার স্টেশনকে দেখে। আর থার্মল পাওয়ারের ৬টি চিমনিকেই যেন ল্যান্ডমার্ক হিসেবে চিনত সবাই। তবে আজ থেকে সবই ইতিহাস। কারণ, বিদ্যুৎ দফতরের পক্ষ থেকে আজ দুটি চিমনি ভেঙে ফেলা হল। এখন থেকে ৬টির বদলে ৪টি চিমনি থাকবে কোলাঘাট থার্মল পাওয়ার ইউনিটে।
১৯৮৪ সালে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের তিনটি ইউনিটের উদ্বোধন করেছিলেন। ১৯৯২ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ের চার,পাঁচ, ছয় এই তিনটি ইউনিট চালু হয়। প্রতি ইউনিটে ২১০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মোট ১২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হত একসময় প্রতিদিন। এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা লাগত প্রত্যহ। কয়লা পুড়িয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চলত বলে প্রতিদিন প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টন ছাই উৎপন্ন হত কেন্দ্রটিতে। ফলস্বরূপ তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে থেকে নির্গত ছাই দূষণে কোলাঘাট, মেচেদা সহ পার্শ্ববর্তী পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার প্রায় ৫০০ বর্গ কিমি এলাকা ভয়াবহ দূষণের শিকার হত কয়েক বছর আগে।
এই অবস্থায় ওই ছাই দূষণের প্রতিকার চেয়ে এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দারা সহ একাধিক সংগঠন লাগাতার আন্দোলনের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে অভিযোগ জানায়। এমনকি গ্রিন বেঞ্চেও অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রিন বেঞ্চের আগে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কয়েক দফায় প্রায় এক কোটি টাকা জরিমানাও করে। নির্দেশ দেওয়া হয়- ৬ টি ইউনিটেই অতি আধুনিক ছাঁকনি যন্ত্র (ইলেট্রো স্ট্যাটিক প্রেসিপিটেটর অর্থাৎ ই.এস.পি.) বসিয়ে ছাই দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। ওই নির্দেশের পর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় দফার তিনটি ও প্রথম দফার তৃতীয় চিমনির মুখে আধুনিক ই.এস.পি মেশিন বসালেও পুরানো মডেলের তৈরি ১ম দফার প্রথম ও দ্বিতীয় চিমনি আধুনিকীকরণ করতে পারেননি। সে কারণে পর্ষদ ওই দুটি চিমনিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়। অন্যদিকে, রাজ্যের অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কম উৎপাদন খরচে বিদ্যুৎ পরিমাণ মতো উৎপাদন করার কারণে ডব্লিউ বি পি ডি সি এল কর্তৃপক্ষ এই কেন্দ্রের প্রথম দফার দুটি ইউনিটে কয়েক বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখে। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ গত কয়েক মাস আগে এক ও দু নম্বর ইউনিটের বয়লার ভেঙে ফেলার পর,আজ চিমনি দুটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।






















