Polba-Dadpur News: আধার সংযুক্তিতে গঙ্গাজল কেনা বাধ্যতামূলক! মোদি বলেছেন, দাবি বিজেপি নেতার, পাল্টা তৃণমূলের
Polba-Dadpur News: অভিযোগ, মোবাইল নম্বরে আধার সংযুক্তির জন্য এক দিকে যেমন ৫০ টাকা করে দিতে হচ্ছে, তেমনই বাধ্যতামূলক ভাবে ৩০ টিকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে ২৫০ মিলি গঙ্গাজলও।
সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: সরকারি পরিষেবা পেতে কাটমানি (Cut Money) নেওয়া ঘিরে রাজনৈতিক তরজা আগেই দেখেছে রাজ্য। এ বার সরকারি ডাকঘরে (Post Office) সাধারণ মানুষকে কার্যত ঘাড় ধরে গঙ্গাজল (Holy Ganga Water) কেনানোর নজিরবিহীন দৃশ্য উঠে এল। হুগলির দাদপুরে মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্ত (Aadhar Mobile Link) করতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে পোস্ট মাস্টার আধার কার্ড আটকে রাখছেন বলেও অভিযোগ সামনে আসছে।
হুগলি জেলার (Hooghly News) পোলবা দাদপুর (Polba Dadpur) ব্লকের গোস্বামী মালিপাড়া গ্রামের ঘটনা। সেখানকার ডাকঘরে মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্তিকরণের কাজ চলছে। তার জন্য সকাল থেকেই লাইন পড়ছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, মোবাইল নম্বরে আধার সংযুক্তির জন্য এক দিকে যেমন ৫০ টাকা করে দিতে হচ্ছে, তেমনই বাধ্যতামূলক ভাবে ৩০ টিকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে ২৫০ মিলি গঙ্গাজলও। অন্যথায় সংযুক্তিকরণ আটকে দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, গঙ্গাজলের বোতলে পেস্ট অফিসের স্টিকার থাকলেও, তা কেনার পর কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না ডাকঘর থেকে। কিন্তু আধার সংযুক্তিকরণ করাতে গেলে প্রত্যেককেই তা কিনতে হচ্ছে। তাতে মোবাইল নম্বর এবং আধার সংযুক্তিকরণে সব মিলিয়ে মাথাপিছু ৮০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে পপোস্ট মাস্টার অসীম চক্রবর্তীকে অভিযোগও জানাতে গিয়েছিলেন এক যুবক। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, অভিযোগ জানাতে গেলে পোস্ট মাস্টার তাঁর আধার কার্ডই আটকে রাখেন।
বিষয়টি সামনে আসতেই সোমবার ওই ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল (TMC)। তৃণমূলের জেলা পারিষদ সদস্য মোনজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আধার কার্ড নিয়ে এমনিতেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কখনও বলা হচ্ছে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্ত করতে হবে, কখনও আবার আবার মোবাইলের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্ত করতে বলা হচ্ছে। তাতে সব কাজ ফেলে ডাকঘরে ছুটতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু সেখানে আবার গঙ্গাজল কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’
যদিও এ ব্যাপারে পোস্ট মাস্টারের যুক্তি, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে আমাদের গঙ্গাজল বিক্রি করতে বলা হয়েছে। তাই যাঁরা ডাকঘরে আসছেন, তাঁদের গঙ্গাজল কিনতে বলা হচ্ছে। তবে কাউকে এ নিয়ে জোর করা হয়নি।’’
কিন্তু ডাকঘরে গঙ্গাজল বিক্রি হচ্ছেই বা কেন? জবাবে হুগলির বিজেপি (BJP) যুব মোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘হরিদ্বারের গঙ্গার জল বোতলবন্দি করে ডাকঘরের মাধ্যমে বিক্রির কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তার দাম ৩০ টাকা। কাউকে কিনতে জোর করা হচ্ছে না। তৃণমূল খামোকা ঝামেলা পাকাচ্ছে। ওরা কী চায়! গঙ্গাজলের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীর মহুয়া মদ বিক্রি হোক ডাকঘর থেকে?’’
এই আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণে তেতে উঠেছে এলাকার রাজনৈতিক মহল। এ নিয়ে চুঁচুড়ায় হুগলি জেলার ডাকঘর সদর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহকারি সুপার গীতা বার্লা জানান, ডাকঘরে গঙ্গাজল কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তা কেনার জন্য কাউকে জোর করা হচ্ছে না। যদিও পোলবা দাদপুর ব্লকের বাসিন্দারা পরিষ্কার ভাবেই জানিয়েছেন যে, আধার সংযুক্তিকরণ এবং গঙ্গাজল বাবদ ৮০ টাকা খরচ করলে তবেই কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে।