Hooghly: ধনিয়াখালিতে স্বামীর সঙ্গে পরিকল্পনা করে প্রেমিককে খুন, কুয়ো থেকে উদ্ধার মৃতদেহ
Hooghly News: সেখানে যাতায়াতের সুবাদে ভান্ডারহাটির দুলে পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা বেচারাম মালিকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে চাঁপার। জাঙ্গীপাড়ার বাড়িতেও বেচারামের যাতায়াত শুরু হয়।
সোমনাথ মিত্র, হুগলি: প্রেমের পথে বাধা স্বামী। তাই পরিকল্পনা করে প্রেমিককে দিয়ে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ। ঘটনার জেরে স্ত্রী ও প্রেমিককে গ্ৰেফতার করেছে ধনিয়াখালি (Dhaniakhali) থানার পুলিশ। অভিযুক্ত স্ত্রী এর নাম চাঁপা মাল, ও প্রেমিকের নাম বেচারাম মালিক (৩৭)।
ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে?
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ,জাঙ্গীপাড়া থানার মহেশপুরের বাসিন্দা সনাতন মালের সাথে প্রায় ১৬ বছর আগে বিয়ে হয় হরিপালের চাঁপা মালের। চাঁপা মাল তাঁর শারীরিক অসুস্থতার জন্য মাঝে মধ্যে ধনিয়াখালি হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যেত। ধনিয়াখালির ভান্ডারহাটিতে চাঁপার এক আত্মীয়ের বাড়ি। সেখানে যাতায়াতের সুবাদে ভান্ডারহাটির দুলে পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা বেচারাম মালিকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে চাঁপার। জাঙ্গীপাড়ার বাড়িতেও বেচারামের যাতায়াত তৈরি হয়।
গত ২৭শে এপ্রিল চাঁপা মাল ধনিয়াখালি গ্ৰামীন হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসে। তারপরের দিন তাঁর স্বামী সনাতন মাল স্ত্রীকে নিতে ধনিয়াখালি আসেন। সেখানে বেচারাম মালিকের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়। স্ত্রী বাসে করে জাঙ্গীপাড়া বেরিয়ে গেলেও সনাতন থেকে যায় ধনিয়াখালিতে। অভিযুক্ত বেচারাম মালিক সনাতনকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে রাতে খাওয়া দাওয়ার পর প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে সনাতনের মাথায় আঘাত করে অভিযুক্ত বেচারাম। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় কাপড় জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে প্রেমিকার স্বামী সনাতনকে হত্যা করে বেচারাম মালিক। রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ বস্তা বন্দি করে তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে এক কুয়োয় গিয়ে বস্তাবন্দি মৃতদেহ ফেলে দেয়।
কুয়ো থেকে উদ্ধার মৃতদেহ
পরের দিন সেই বাড়ির ভাড়াটিয়া দামু লোহার কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে দেখতে পায় বস্তার মধ্যে কিছু একটা ভাসছে এবং দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। ভাড়াটিয়ার ডাকে প্রতিবেশীরা জড়ো হন, এবং পুলিশ খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারপর তাঁর পরিচয় জানার জন্য খোঁজ শুরু করে পুলিশ। একদিন পর পুলিশ জানতে পারে মৃত ব্যক্তির বাড়ির জাঙ্গীপাড়ার মহেশপুর। জোরকদমে তদন্ত শুরু হবার পর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে বেচারামের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসে। তারপর ভান্ডারহাটির দুলেপাড়া থেকে বেচারামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বেচারাম খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানায়।
গত ১ মে সনাতন মালিক খুনে স্ত্রী চাঁপা মালকে আটক করে পুলিশ এবং চাঁপার প্রেমিক বেচারাম মালিক গ্ৰেফতার করে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে আদালতে পাঠায় ধনিয়াখালি থানা। পরের দিন ২রা মে সনাতনের স্ত্রী চাঁপা মালকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্ৰেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। খুনে মূল অভিযুক্ত বেচারাম মালিক অবশ্য জানিয়েছে, টাকা পয়সা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি হচ্ছিল তাই নেশার ঘোরে এই কাজ করেছি।
ঘটনার পরে পুলিশ অভিযুক্ত বেচারাম মালিককে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত হাতুড়ি সহ অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এবং অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনার পুণঃনির্মান করে পুনরায় তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গেছে।