Howrah দিঘা, ডায়মন্ডহারবারে নেই জোগান, বন্ধ বাংলাদেশ থেকে আমদানিও, মন খারাপ ইলিশ-প্রিয় বাঙালির
ফি বছর রান্না পুজোর আগে ইলিশের চাহিদা তুঙ্গে থাকে...
সুনীত হালদার, হাওড়া: ফি বছর রান্না পুজোর আগে ইলিশের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। গত বছরেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। তবে হাওড়া মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি করায় পরিস্থিতি অনেকটা সামালে যায়।
কিন্তু এবছর রান্না পুজোর আগে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। দিঘা, ডায়মন্ডহারবার অথবা বাংলাদেশ থেকে ইলিশের আমদানি না থাকায় কার্যত হাহাকার দেখা দিয়েছে জলরে রুপোলি শস্যের। তাই রান্না পুজোয় পছন্দমতো ইলিশ না পেয়ে মন খারাপ বাঙালির।
প্রতিবছর বিশ্বকর্মা পুজোর আগে রান্না পুজোর দিনে ইলিশের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। ক্রেতারা একটা এক কিলো সাইজের ইলিশের জন্য ভিড় জমান বাজারে। মাছ বিক্রেতারাও মাছ কেনার জন্য ভিড় জমান হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারে।
কিন্তু অন্য বছর ইলিশের যোগান থাকলেও এবছর কার্যত খাঁ খাঁ করছে। পাইকারি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, স্থানীয় দিঘা, শঙ্করপুর অথবা কাকদ্বীপ বা ডায়মন্ডহারবার থেকে সেভাবে ইলিশের যোগান নেই।
আবার ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার ইলিশ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু, গত বছর বাংলাদেশ সরকার সদিচ্ছার কারণে এই সময়ে ইলিশ মাছ পাঠালেও এবারে পাঠায়নি।
ফলে বাজারে চাহিদা থাকলেও যোগান না থাকায় বিক্রেতারা মাছ দিতে পারছেন না। পাইকারি মাছ বিক্রেতা সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানিয়েছেন, রান্না পুজোর চাহিদার কথা ভেবে গত বছর তিনি বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি করেছিলেন।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এবছর এখনও পর্যন্ত ইলিশ পাঠায়নি। মায়ানমার থেকে যেটুকু মাছ এসেছিল সেগুলো আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। তাই বাজারে ইলিশ নেই।
সামান্য যেটুকু স্টক থেকে অথবা চোরাই পথে আসছে তার দাম পাইকারি বাজারে ১৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা। যা খুচরো বাজারে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হতে পারে।
উল্লেখ্য, হাওড়া পাইকারি মাছ বাজার থেকে কলকাতার সবকটি বড় বাজারে মাছ যায়। খুচরো বিক্রেতারা এখান থেকে মাছ কিনে নিয়ে গিয়ে ওই সব বাজারে বিক্রি করেন।
খুচরো বিক্রেতা বাপ্পা ধুল বলেন, গতবারে বাংলাদেশের ইলিশ আসায় বাজার বেশ ভালো ছিল। কিন্তু এবারে বড় সাইজের মাছ নেই। যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো ছোট সাইজ, ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম সাইজের মাছের দাম কিলো প্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বড় সাইজের মাছের এত দাম যে স্থানীয় বাজারে তা বিক্রি করতে অসুবিধা হচ্ছে।
এদিকে ক্রেতারা ভালো ইলিশ না পেয়ে কার্যত হতাশ। এক ক্রেতা জানান, প্রতি বছর রান্না পুজোয় আত্মীয়-স্বজনদের নেমন্তন্ন করে খাওয়ান। সেটা আর এ বছরে হবে না।
তবে আশার কথা শুনিয়েছেন হাওড়া মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা। দুর্গা পুজোর আগে ইলিশের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তাঁরা।
ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করেছেন কিছুদিনের মধ্যেই ওই দেশের সরকার তাঁদের জন্য আড়াই হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দেবে। এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছেন ব্যবসায়ীরা।