![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
Howrah News: ৩০ বছর আগের নৌকা ফিরিয়ে আনছে হাওড়ার পরিবার, জায়গা পাচ্ছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে
Howrah Boat: একটা সময় সমুদ্রে মাছ ধরতে জেলেরা এক বিশেষ ধরনের নৌকা ব্যবহার করতেন। যার পোশাকি নাম 'ছোট।' ৩০ বছর পর হাওড়ায় একটি পরিবারের হাতে তৈরি হচ্ছে আস্ত সেই নৌকা।
![Howrah News: ৩০ বছর আগের নৌকা ফিরিয়ে আনছে হাওড়ার পরিবার, জায়গা পাচ্ছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে Howrah s family create a special boat , which will go to British Museum Howrah News: ৩০ বছর আগের নৌকা ফিরিয়ে আনছে হাওড়ার পরিবার, জায়গা পাচ্ছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2022/11/01/0238c97b6ccd7d96f2033530ecdc58741667297785739484_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
সুনীত হালদার , হাওড়া: একটা সময় সমুদ্রে (Sea) মাছ ধরতে জেলেরা এক বিশেষ ধরনের নৌকা (Boat) ব্যবহার করতেন। যার পোশাকি নাম 'ছোট।' সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যায় সেই নৌকা। ৩০ বছর পর হাওড়ার শ্যামপুরে একটি পরিবারের হাতে তৈরি হচ্ছে আস্ত সেই নৌকা। গোটা তৈরি প্রক্রিয়া ক্যামেরাবন্দি করে ডকুমেন্টেশন করা হচ্ছে। যাতে সময়ের গহ্বরে এই বিশেষ প্রযুক্তি হারিয়ে না যায়। এই ডিজিটাইজড ডকুমেন্ট রাখা হবে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। আর নৌকাটি রাখা হবে গুজরাটের ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে বিশেষ নৌকা তৈরীর এই প্রযুক্তি।
নদীমাতৃক পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন নদীতে জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন যুগ যুগ ধরে। মাছ ধরতে ব্যবহার হয় হরেক রকম নৌকা । নদীর গভীরতা, জলের চরিত্র এবং স্রোত অনুযায়ী নৌকার গঠন হয়। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে মাছ ধরতে জেলেরা ব্যবহার করে চ্যাপ্টা অংশের নৌকা যা ডিঙি, বেতনাই বা বাছরি নামে পরিচিত। পাতান বা জলুই দিয়ে নৌকার কাঠ আটকানো হয়। তবে এই নৌকা দিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরা যায় না। বাতাসের ধাক্কায় যে কোন মুহূর্তে উল্টে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। শ্যামপুরের ডিহিমঙ্গলঘাটে একটি পরিবার আছে যারা সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য বিশেষ ধরনের নৌকা ছোট তৈরি করে। বাড়ির প্রবীণ সদস্য ৭০ বছরের পঞ্চানন মন্ডল ৩০ বছর আগে শেষ নৌকা তৈরি করেছিলেন। এরপর বাড়ির চার ছেলেকে নিয়ে আরেকটি ছোট তৈরিতে হাত দিয়েছেন। সৌজন্যে ভারত ব্রিটেন যৌথ প্রকল্প। এনডেঞ্জার্ড মেটেরিয়াল নলেজ প্রজেক্টের অধীনে গোটা প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে। ব্রিটেনের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন পি কুপার, হরিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বসন্ত সিন্ধে এবং কলকাতার নৃতত্ত্ববিদ স্বরূপ ভট্টাচার্য গোটা প্রকল্পের দেখভাল করছেন।
শ্যামপুরের ডিহিমঙ্গলঘাট এলাকায় রূপনারায়ণ নদীর চরে জোরকদমে কাজ এগিয়ে চলেছে। তারা জানিয়েছেন ৩০ থেকে ৪০ দিন সময় লাগবে। এরপর এই নৌকা পাড়ি দেবে গুজরাটের ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে। কিভাবে এই নৌকা তৈরি করা যায় তার গোটা প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তি ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে। সেটা প্রামাণ্য দলিল হিসাবে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রাখা হবে। স্বরূপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন এটি একটি হারিয়ে যাওয়া প্রযুক্তি তাই সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এই নৌকার বিশেষত্ব হল নৌকার নিচের অংশ গভীর এবং সূচালো। এমন ভাবে কাঠের পাঠাতনগুলি ইংরেজি অক্ষর ভি এর মত লাগানো হয় যাতে ঢেউ অথবা বাতাসের ধাক্কাতেও নৌকা জলে স্থির থাকতে পারে। হারিয়ে যাওয়ার আগে এটা শেষ স্মৃতি। নৌকা তৈরির প্রধান কারিগর পঞ্চানন মন্ডল জানিয়েছেন তিনি ৩০ বছর আগে শেষবার এই ধরনের নৌকা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু নদীতে চর পড়ে যাওয়ার কারণে এই ধরনের নৌকার ব্যবহার কমে গেছে।
আরও পড়ুন, 'সরকার ফেলে দেওয়াতে তাঁরা বিশ্বাসী নন', ‘ডিসেম্বর ডেডলাইন’-র পর মন্তব্য সুকান্ত-র
নিজের চার ছেলেকে নিয়ে তিনি এই কাজ করছেন। পঞ্চাননবাবুর বড় ছেলে অমর মন্ডল জানিয়েছেন তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে শিরিষ, বাবলা, অর্জুন এবং সাইবিলাতি কাঠ বাঁকানো হয় যা নৌকা তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে। এই কাজ করতে পেরে তারা খুশি। অধ্যাপক জন পি কুপার বলেন প্রথাগত প্রযুক্তির মাধ্যমে নৌকার কারিগররা নৌকা তৈরি করেন। ছোট এর বিশেষত্ব হল কাঠের পাঠাতনগুলোকে ধাতু দিয়ে এমনভাবে জোড়া হয় তাতে নৌকার আকৃতি ভি এর মত হয়। সহজেই নদীর জলকে কাটতে সাহায্য করে। এখানকার বিশেষ প্রযুক্তি তাকে আকর্ষিত করেছে। তাই গোটা পদ্ধতিকে ডকুমেন্টেশন করছেন। সময় বহমান নদীর মত। আর নৌকা সেই নদীর বুকে ভেসে চলে। নৌকা তৈরীর এই বিশেষ প্রযুক্তি হারিয়ে যাওয়ার আগে যেভাবে ডকুমেন্টেশন করা হচ্ছে তা থেকে আশার আলো দেখছেন নৌকার গবেষকরা।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)