Howrah News: ছাত্রী মাত্র ৫ জন, শিক্ষিকা ১৫ জন ; অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে প্রায় শতাব্দী-প্রাচীন নামী এই স্কুল !
Howrah School: মধ্য হাওড়ার এই স্কুলের একসময় খুব নাম ছিল। ক্লাসরুমগুলি ছাত্রীদের কলতানে ভর্তি থাকত। অনেক ছাত্রী এখান থেকে পাশ করে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সুনীত হালদার, হাওড়া : ছাত্রীর অভাবে কার্যত খাঁ খাঁ করছে স্কুল। ক্লাসরুম আছে। শিক্ষিকারাও আছেন। কিন্তু পঠন-পাঠনের জন্য নেই পর্যাপ্ত ছাত্রী। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে মধ্য হাওড়ার শ্রীদুর্গা বালিকা বিদ্যালয়। কবে যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে সে ব্যাপারে জানা নেই এখানকার শিক্ষিকাদের।
মধ্য হাওড়ার শ্রীদুর্গা বালিকা বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা মাধ্যম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে হিন্দি মাধ্যমে পড়ানোর ব্যবস্থা আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা নামমাত্র। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসে মোট পাঁচজন ছাত্রী রয়েছে। এদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে একজন, সপ্তম শ্রেণিতে একজন, অষ্টম শ্রেণিতে একজন এবং দশম শ্রেণিতে দু'জন ছাত্রী পড়ে। এদের পড়ানোর জন্য শিক্ষিকার সংখ্যা ১৫ জন। আবার হিন্দি মাধ্যমে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে কলা বিভাগে খাতায়-কলমে মোট ৪৫ জন ছাত্রী আছে। তিনজন পার্শ্বশিক্ষিকা আছেন। যাদের বেতন দেয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে গোটা স্কুল কোনওরকমে চলছে।
অথচ শ্রীদুর্গা বালিকা বিদ্যালয় হাওড়ার অন্যতম নামী ও প্রাচীন স্কুল। ১৯২৫ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্য হাওড়ার এই স্কুলের একসময় খুব নাম ছিল। ক্লাসরুমগুলি ছাত্রীদের কলতানে ভর্তি থাকত। অনেক ছাত্রী এখান থেকে পাশ করে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ধুঁকতে থাকা এই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের অভিযোগ, স্কুলে নিয়মিত ক্লাস হয় না। ফলে সিলেবাস শেষ হয়নি। অথচ উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় বসার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ফি এবং সরস্বতী পুজোর জন্য প্রত্যেক ছাত্রীর কাছ থেকে ১১০০ টাকা চাওয়া হয়েছে। যা তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।
স্কুলের পঠনপাঠনের উন্নতির জন্য তারা জেলা পরিদর্শকের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এই স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ দীপিকা দাস বর্তমান পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে জানান, সরকারি নীতি এরজন্য দায়ী। শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। অনেক শূন্যপদ খালি। স্কুল চালাতে কম্পোজিট গ্রান্ট এর টাকা না পাওয়ায় শিক্ষিকারা নিজেদের মাইনের টাকা দিয়ে স্কুল চালান।। খরচ বেড়ে যাওয়ার ফলে ছাত্রীদের থেকে টাকা চাইতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি আরও জানান, জেলা শিক্ষা দফতরে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাই এই স্কুলের ভবিষ্যৎ কি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।