Independence Day 2021 Special : করোনা আবহেও তুঙ্গে চাহিদা, দিন-রাত এক করে উনসানিতে চলছে জাতীয় পতাকা তৈরির কাজ
গতবছর এই সময়টা একেবারেই ভাল যায়নি ব্যবসার দিক থেকে। স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় রীতিমতো সমস্যায় পড়েন শ্রমিকরা।
হাওড়া, সুনীত হালদার : আর মাত্র ২ দিন পরেই স্বাধীনতা দিবস। তেরঙ্গা, জাতীয় সঙ্গীত, কুচকাওয়াজ, দেশাত্মবোধক বার্তা - সবকিছু নিয়ে আরও একটা উদযাপনের দিন, স্মরণের দিন, শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের দিন, গর্বিত হওয়ার দিন । আসমুদ্রহিমাচলের একসুরে গাওয়ার দিন, আগামীর শপথ নেওয়ার ক্ষণ। সরকারি অফিস থেকে সাধারণের বাড়ির ছাদ - সবখানে উড়বে সেদিন স্বাধীন ভারতের তেরঙা পতাকা। বছরের এই সময়টা বরাবরই পতাকা বিক্রেতাদের কাছে বিশেষ দিন। করোনা আবহে গত বছর পতাকার চাহিদায় ঘাটতি ছিল। এ বছর তা অনেকটাই কেটেছে।
হাওড়ার উনসানি গ্রাম। অনেকেই এখানে জাতীয় পতাকা তৈরি করেন। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সেই বিক্রি বেড়েছ বলেই জানালেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে ৩-৪ মাস আগে থাকতেই জাতীয় পতাকা তৈরির কাজ শুরু করে দেন তাঁরা। এলাকার এক ব্যবসায়ী রাজু হালদার জানালেন, এই বছর চাহিদা বেশ ভাল। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ টি পতাকা তৈরি হচ্ছে তাঁর কারখানায়। শ্রমিকদের মধ্যেও তাই যথেষ্ট আনন্দ-উদ্দীপনা। গতবছর এই সময়টা একেবারেই ভাল যায়নি ব্যবসার দিক থেকে। স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় রীতিমতো সমস্যায় পড়েন তাঁরা। তবে এবছর দ্বিতীয় ঢেউতে নাকাল হওয়ার পরেও জাতীয় পতাকার চাহিদাটা একেবারেই কম নয়। যদিও বছরের বড় একটা সময় শ্রমিকরা কাজ করতে পারেননি।
পতাকা ব্যবসায়ীরা জানালেন, '' পতাকার সবচেয়ে ছোট মাপ হল ৮ ইঞ্চি লম্বা, ১২ ইঞ্চি চওড়া । সবচেয়ে বড় মাপের পতাকা হল ৪৮ ইঞ্চি লম্বা ও ৭২ ইঞ্চি চওড়া পতাকা। কারখানা থেকে বেশ কয়েকরকমের পতাকা শুধুমাত্র কলকাতার বিভিন্ন বাজার সহ রাজ্যের প্রায় সব জেলায় সরবরাহ করা হয়।'' এছাড়াও বিহার, অসম, ঝাড়খন্ড, ত্রিপুরা, উড়িষ্যা এবং দিল্লিতেও এই জাতীয় পতাকা পাঠানো হয়। তবে লকডাউনের প্রভাব পড়েছে এই কারখানাতেও। কিছুদিন আগে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও আংশিক লকডাউন চালু হওয়ায় পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে।
এখন এখানকার কারিগরদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সেলাই মেশিনে হাত লাগিয়েছেন। যে করেই হোক অর্ডার অনুযায়ী কাজ শেষ করতে হবে। কারিগররা জানান এই কাজ নিয়ে তারা গর্ব অনুভব করেন। বিভিন্ন জায়গায় যখন তাদের হাতে তৈরি পতাকা ওড়ে তখন দেখতে তাদের খুব ভালো লাগে। কারখানার মালিক জানিয়েছেন এই কাজ করতে পেরে তিনি খুশি। সামান্য লাভ রেখে দেশের প্রতি টান থেকে তারা এই কাজ করেন। আর এই ভালোবাসা থেকেই নিজের বাড়িটাকেও জাতীয় পতাকার রঙে সাজিয়েছেন তিনি ।