Jhargram News: দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল, ২৭ বছর বাদে শাস্তি পেল সিপিএম নেতা খুনে দোষী সাব্যস্ত
Jhargram Murder : ২৭ বছর ধরে আইনি লড়াই চালানোর পর অবশেষে দোষী সাব্যস্ত হয়ে শাস্তি পেল ঝাড়গ্রামের এক সিপিএম নেতাকে খুনে অভিযুক্ত। আদালতের এই রায়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে মৃতের পরিবার।
অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে আইনি লড়াই চালানোর পর অবশেষে সুবিচার পেল ঝাড়গ্রামে (Jhargram News) খুন হওয়া সিপিএম (CPM) নেতার পরিবার। একজন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনালেন বিচারক। এর ফলে কিছুটা হলেও ২৭ বছর ধরে বুকের ভেতর চেপে রাখা কষ্ট লাঘব হল খুন হওয়া সিপিএম নেতার পরিবারের সদস্যদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ১৫ জুলাই ঝাড়গ্রামের ঢ্যাংবহরা গ্রামের বাসিন্দা জাহ্নবী বেরা নিজের চাষের জমি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় সুন্দর সরেন ও ছবিলাল দে সহ একাধিক ঝাড়খণ্ড পার্টির সদস্য সিপিআইএমের জাম্বনী লোকাল কমিটির সদস্য জাহ্নবী বেরাকে সামনে থেকে গুলি করে। গুলিটি জাহ্নবীর ডানদিকের পেটে লাগলেও দৌড়তে থাকেন তিনি। এদিকে গুলির আওয়াজ পেয়ে স্থানীয় এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে গেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সঙ্গে সঙ্গে গুলিবিদ্ধ সিপিএম নেতাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে।
সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২২ জুলাই মারা যান গুলিবিদ্ধ ওই সিপিএম নেতা। মৃত্যুকালীন জবানবন্দী ও মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু হয়। এরপর একে একে গ্রেফতার হয় অভিযুক্তরা। তবে কিছুদিনের মধ্যে জামিনও পেয়ে যায় তারা। তারপর জাহ্নবী বেরার পরিবারের সদস্যদের চাষাবাদ বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে।
বাধ্য হয়ে কোনও রকমে দুই নাবালক শিশুকে নিয়ে লালগড়ে বাপের বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বাঁচেন জাহ্নবী বেরার স্ত্রী। সেখানেই বড় হয়ে ওঠে ছেলেরা। বর্তমানে জাহ্নবী বেরার বড় ছেলে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, চরম খারাপ অবস্থার মধ্যে বড় হলেও বাবার দোষীরা যাতে শাস্তি পায় তার জন্য কোর্টে আসা বন্ধ করিনি। প্রথমে মায়ের হাত ধরে আসতাম এখন একাই আসি। কোর্টের উপর আস্থা ছিল তাই দীর্ঘ ২৭ বছর পর হলেও সাজা পেল অভিযুক্ত। এতে বাবার আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।"
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় মোট আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও বিচার চলাকালীন দুজনের মৃত্যু হয়। বাকিরা প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পায়। তবে সুন্দর সোরেনকে দোষী সাব্যস্ত করে মহামান্য বিচারক বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করেন। ঝাড়গ্রাম এডিজে ১ নম্বর আদালতের বিচারক সুন্দর সোরেনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এর ফলে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আজ কিছুটা শান্তি এসেছে বেরা পরিবারে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: North 24 Parganas:'কালকের মধ্যে দখলমুক্ত করে দিন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে' সতর্কবার্তা তৃণমূল বিধায়কের