(Source: Poll of Polls)
Kalipuja 2025: অন্ডালের মা খাদান কালী, নেই মূর্তি, নেই বাঁধানো মন্দির, এক পাথরেই অগাধ বিশ্বাস ভক্তদের
Andal Khadan Kali: প্রতি বছর কালীপুজোয় হাজারও মানুষ ভিড় করেন এই মন্দিরে। কেউ মানত করতে আসেন। কেউ বা মানসিক পূরণের পর ছুটে আসেন মায়ের দরবারে।

মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্ডাল : আজ কালীপুজো। শক্তি আরাধনায় মেতেছে বাংলার প্রতিটি কোণা। আলোর উৎসবে মাতোয়ারা বাঙালি। বিভিন্ন কালী মন্দিরে সকাল থেকেই দেখা গিয়েছে পুণ্যার্থীদের ভিড়। বেলা যত গড়াবে, ভিড়ের পরিমাণ আরও বাড়বে। এমনই দৃশ্য প্রতি বছর দেখা যায় অন্ডালের খাদান কালীর পুজোয়। কথিত আছে বহুদিন আগে এখানে খাদানে পড়ে গিয়েছিল কয়লা বোঝাই লরি। বেশ কয়েকদিন আটকে ছিল এই লরি। পরে তা উদ্ধার করা হয়। সকলেই বলেন, এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছিল মা কালীর কৃপায়। তারপর থেকেই আরও জমজমাট হয়েছে অন্ডালের খাদান কালীর পুজো।
অণ্ডালের পলাশবন বাবুইসোল কলোনির বাসিন্দাদের মনে রয়েছে এক বিশ্বাস, এক আশ্রয়, এক ভরসা। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক অলৌকিক ইতিহাস, যার সবটুকুতে রয়েছেন মা খাদান কালী। নামেই রয়েছে এই পুজোর বৈশিষ্ট্য। খনির বুক চিরে জীবিকা চলে যাঁদের, তাঁদেরই জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছেন এই মা। এখানে নেই কোন মূর্তি বা ঝাঁ-চকচকে মন্দির। যে অঞ্চলে পুজো হয় তার চারিদিকশুধু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা, ছাদ বলতে কোনও আচ্চাদন নেই। এটাই বৈশিষ্ট্য মা খাদান কালীর পুজোর। মা এখানে পূজিত হন শ্যামা রূপে। এক পাথরেই হয় দেবীর আরাধনা।
কয়েক শত বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো শুরু করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মতিলাল চক্রবর্তী। সেই সময় থেকে আজও ওই পাথরকেই মা কালী হিসেবে মেনে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই পাথরই আসচলে মা খাদান কালী। লোকমুখে শোনা যায়, বহু বছর আগে খনিতে কয়লা বোঝাই একটি লরি হঠাৎ আটকে যায়। একদম খাদানের গভীরে আটকে গিয়েছিল লরিটি। যতই চেষ্টা করা হচ্ছিল লরি বের করার, তত বারই জুটছিল ব্যর্থতা। শেষ পর্যন্ত তখনকার লোডিং বাবু মানত করেন,'মা খাদান কালীর' কাছে। আশ্চর্যজনকভাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই লরিটি ওপরে তোলা সম্ভব হয়। সেই থেকেই যেন নতুন করে শুরু হয় মায়ের জাগরণ।
তারপর থেকে ঝোপজঙ্গল কেটে গড়ে ওঠে মন্দির। শুরু হয় নিয়মিত পুজো। আর ধীরে ধীরে এই নিত্য পুজোর মাধ্যমে মা খাদান কালী হয়ে ওঠেন এলাকার হৃদস্পন্দন, সকলের ভরসার জায়গা। প্রতি বছর কালীপুজোয় হাজারও মানুষ ভিড় করেন এই মন্দিরে। কেউ মানত করতে আসেন। কেউ বা মানসিক পূরণের পর ছুটে আসেন মায়ের দরবারে। আবার কেউ শুধু এক ঝলক মায়ের দর্শনে শান্তি খুঁজতেও আসেন খাদান কালীর পুজোয়। পুরোহিত অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “এই পাথরেই মায়ের শক্তি বিরাজমান। অনেকেই মানত করে ফল পেয়েছেন। তাই ভক্তির ঢেউ আরও বাড়ছে।” সেবায়েত অমিত ঘোষ যোগ করেন, “মা যেন আমাদের রক্ষা করেন। খনিতে যারা কাজ করেন, তাঁরা মায়ের আশীর্বাদেই নিরাপদে থাকেন বলে বিশ্বাস।”























