Recruitment Scam: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন! কী কী শর্ত বেঁধে দিল হাইকোর্ট?
Recruitment Corruption Scam:জামিন দিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। তবে তার সঙ্গে শর্তও দেওয়া হয়েছে।
সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন (Recruitment Corruption Scam) পেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। জামিন দিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। তবে তার সঙ্গে শর্তও দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের (High Court) তরফে বলা হয়েছে, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে এই তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। তাঁকে থাকতে হবে কলকাতা পুরসভা এলাকায়। পাশাপাশি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায় ঢুকতে পারবেন না কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। যদি তাঁর পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে সেটি জমা রাখতে হবে নিম্ন আদালতে। এমনই নির্দেশ জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের।
এর আগে SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত মিডলম্যান প্রসন্নকুমার রায়ের জামিন পেয়েছিলেন। এবার প্রায় সাড়ে ১৪ মাস পর একই মামলায় জামিন পেলেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, SSC দুর্নীতি মামলায় টানা জেরার পরে গ্রেফতার করা হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে। নিজাম প্যালেসে টানা ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে CBI। প্রায় ১ বছর আড়াই মাসের মাথায় সেই মামলায় এবার জামিন পেলেন একসময় রাজ্যের শিক্ষাদফতরের হেভিওয়েট।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রায় ২ বছর ধরে, তোলপাড় রাজ্য। অসংখ্য যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য়দের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, প্রাক্তন সচিব অশোক সাহা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় একের পর এক মন্ত্রী, তৃণমূল বিধায়ককে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে হদিশ মেলে বিপুল নগদের। এরপর গত ৯ নভেম্বর, SSC-র নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্ত শেষ করতে CBI-কে ডেডলাইন বেঁধে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে জামিন দিয়ে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায় এখনও পর্যন্ত কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির কোন নথি বা আয় বহির্ভূত সম্পত্তির হিসাব দেখাতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। এক বছরের ওপর হয়ে গেল তদন্ত চলছে, নিয়োগপত্র ও প্রয়োজনীয় নথি বাজেয়াপ্ত করেছে CBI, ফলে তথ্য বিকৃত করার সুযোগ নেই বলেই মনে করছে আদালত। মামলার একটা বড় অংশের সাক্ষী সরকারি আধিকারিক। যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হওয়ায় সাক্ষীদের প্রভাবিত করার বা ভয় দেখানোর সম্ভাবনাও ক্ষীণ বলে পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের।
পাল্টা সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দুটি চার্জশিট দাখিল হয়েছে, তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটও দ্রুত দাখিল করা হবে। নিয়োগ দুর্নীতির সুড়ঙ্গের শেষে আলো দেখা যাবে বলে আশাপ্রকাশ করে আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, সরকারি পদ ব্যবহার করে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতি করলেও এই মুহূর্তে তিনি আর শিক্ষা দফতরের পদে নেই। ফলে একই ধরনের অপরাধ তিনি ফের করতে পারেন সেই সম্ভাবনা নেই। এরপরেই কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে জামিন দেয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে ৭ অগাস্ট প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি, মানিক ভট্টাচার্যর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে জামিন দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। ১৯ অগাস্ট OMR মূল্য়ায়নকারী সংস্থার আধিকারিক নীলাদ্রি দাসকে জামিন দেয় আলিপুরে বিশেষ CBI আদালত।
আরও পড়ুন: আগেও ঘটেছে বিপর্যয়, দায়ের হয়েছে মামলাও, উত্তরাখণ্ডে সুড়ঙ্গ নির্মাণ করছিল এই সংস্থা