Kamduni Verdict : 'উকিল বিক্রি হয়ে গিয়েছে, সরকার পারেনি,' কান্নায় ভাঙলেন প্রতিবাদী মৌসুমী
Kamduni Verdict Update : কামদুনিকাণ্ডের রায় ঘোষণায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ১ জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ২ জনের সাজা পাল্টে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ।
কলকাতা: কামদুনিকাণ্ডের রায় ঘোষণা (Kamduni Verdict) করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন কামদুনির দুই প্রতিবাদী টুম্পা এবং মৌসুমী কয়াল।
কামদুনিকাণ্ডের রায় ঘোষণা ২০১৩-র ৭ জুন কামদুনিতে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল ৯ জন। এই ঘটনার দশ বছর পর এদিন রায় ঘোষণা হল। রায়ের পর আদালত চত্বরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কামদুনি কাণ্ডের অন্যতম প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী কয়াল। তিনি বলেন, “টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকারের উকিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বিচার দিতে পারলেন না।’’
কামদুনিকাণ্ডের রায় ঘোষণায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ১ জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ২ জনের সাজা পাল্টে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ। রেহাই দোষী সাব্যস্ত ইমানুল, ভোলানাথ, আমিনুরও। রায়ে দোষী সাব্যস্ত আনসার আলি মোল্লা, সইফুল আলি মোল্লার ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফাঁসির সাজা হয়েছিল অভিযুক্ত আমিন আলির। এদিন বেকসুর খালাস করা হয়েছে তাকে। এর আগে নিম্ন আদালত রেহাই ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর ও আমিনুর ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। রায়ে রেহাই দেওয়া হয়েছে তাদেরও। এদিন রায়ের পর আদালত চত্বরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে মৃতার ভাই।
২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে সেখানে। ঘটনায় ৮ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে। ২ বছরের বেশি মামলা চলার পর, রায় দেয় নগর দায়রা আদালত। অভিযুক্ত ৬ জনকে দোষী সাব্য়স্ত করা হয়। তথ্য প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করা হয় ২ জনকে। ২০১৬-র জানুয়ারিতে কামদুনির গণধর্ষণ, খুনের মামলায় সাজা ঘোষণা করে নগর দায়রা আদালত। ৩ জনকে মৃত্য়ুদণ্ড এবং ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় দোষীরা ওই রায়কে চালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায়। এদিন সেই মামলার রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট।
এই রায় প্রসঙ্গে এদিন টুম্পা কয়াল বলেন, 'আমরা অনেক আশা নিয়ে হাইকোর্টে এসেছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম যারা দোষী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়। রাজ্য়ের মানুষ দেখেছিল আমাদের আন্দোলন, আমরা নিরপেক্ষ ভাবে আন্দোলন করেছিলাম। আমরাও আরও ভরসা করেছিলাম আমাদের সরকারের উপরে। আমাদের সরকার গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে যারা দোষী তারা শাস্তি পাবে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা হাইকোর্টে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি।'
কলকাতা হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণ ছিল যে, অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকেই সাত-দশ বছর সংশোধনাগারে রয়েছেন। সেই কারণেই মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন এবং বাকিদের রেহাই দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করায় টুম্পা বলেন, 'আমার কিছু বলার নেই। আমাদের রাজ্যে যেখানে একের পর এক মায়ের কোল খালি হচ্ছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা যে হাইকোর্টে এই রায় পাব এই আশাটাই করিনি। আমরা আস্থা রেখেছিলাম বিচারপতির উপর। আজকে আমাদের কামদুনিতে হয়েছিল। আমরা সুপ্রিম কোর্ট যাব। আমরা শেষ দেখে যাব।'
আরও পড়ুন: Kamduni Case: 'ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড..', কামদুনিকাণ্ডের রায় ঘোষণা হাইকোর্টের