Kolkata Police-Army Tussle: সেনাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, কিন্তু পুলিশেরই বাতিল গাড়ির ধাক্কায় বাইক চালকের মৃত্যুতে কোথায় পদক্ষেপ ? উঠছে প্রশ্ন
Kolkata Police: বিভিন্ন দুর্ঘটনা বা দুর্ঘটনায় যদি কারো মৃত্যু হয়, কোনও গাড়ি যদি কলকাতার রাস্তার হাই স্পিডেও যায়, তাহলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

কলকাতা : ভারতীয় সেনার ক্ষেত্রে এতটা সক্রিয়, কিন্তু তৃণমূল বিধায়কের গাড়ির দুর্ঘটনার মুখে যেখানে একজন মারা গেছেন, সেক্ষেত্রেও কি সি সি টিভি ফুটেজ প্রকাশ করবেন আপনারা ? সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্নের উত্তরে কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক ওয়াই শ্রীকান্ত বলেছেন, "ওখানকার সি সি টিভি ফুটেজ আমরা খতিয়ে দেখছি। যখন অ্যাভেলেবেল হবে তখন প্রকাশ করব। এটা Fatal Accident। তদন্ত চলছে। যে তথ্য আছে সেটা এখন দিচ্ছি না। লোকাল থানা যখন তদন্ত করছে, তার তথ্য বেরিয়ে যাবে। এনিয়ে চিন্তা করার কোনও বিষয় নেই।" অথচ, বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগে সেনার ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে FIR রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। আর এনিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।
বিভিন্ন দুর্ঘটনা বা দুর্ঘটনায় যদি কারো মৃত্যু হয়, কোনও গাড়ি যদি কলকাতার রাস্তায় হাই স্পিডেও যায়, তাহলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে এখন যথেষ্ট সচেনত এই ট্রাফিক বিভাগ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সব ঘটনার ক্ষেত্রেই কি কলকাতা পুলিশ সমানভাবে কড়া ? নাকি কলকাতা পুলিশ বিভিন্ন ঘটনার সাপেক্ষে বিভিন্ন ঘটনা বিচার করে ব্যবস্থা নিচ্ছে ? কলকাতা পুলিশ কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোথায় কী রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে তা নিয়ে একটা প্রশ্ন উঠছে।
কেন ?
তার কারণ, আজ প্রায় একই সময়ে ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনা। একটি ঘটনায়, বিবাদী বাগে মহাকরণের সামনে সকাল ১১টা নাগাদ সেনার ট্রাক আটকায় কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, মহাকরণের সামনে বিপজ্জনকভাবে ডানদিকে U-টার্ন নেয় সেনার ট্রাক। পিছনেই ছিল পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার কনভয়। সকালে লালবাজারে যাচ্ছিলেন পুলিশ কমিশনার। যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ট্রাফিক আইন ভাঙায় সেনার ট্রাক থামানো হয়। আধঘণ্টা টানাপোড়েন চলার পর সামনে পুলিশের জিপ, পিছনে পুলিশের বাইক রেখে সেনার ট্রাক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল হেয়ার স্ট্রিট থানায়। কিন্তু বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে সেনার গাড়ি। সেনা সূত্রে খবর, ফোর্ট উইলিয়াম থেকে ট্রাকে করে দুই সেনা আধিকারিক পাসপোর্ট অফিসে যাচ্ছিলেন। তখনই কলকাতা পুলিশ ট্রাক আটকায়। বিপজ্জনকভাবে চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেনা। এই ঘটনায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় সেনার গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের কলকাতা পুলিশ হেড কোয়ার্টারসের ট্রাফিক সার্জেন্টের। সেনার গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে FIR রুজু হেয়ার স্ট্রিট থানায়। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগে মামলা । সেনার গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মোটর ভেহিকল অ্যাক্টে মামলা রুজু পুলিশের।
লালবাজারে ডিসি ট্রাফিক সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘটনার কথা বিস্তারিত জানান। পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট করে দেন, পুরো কলকাতা শহরে সমস্ত রোড ট্রাফিক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তাঁরা একই ধরনের কড়া ব্যবস্থা নিতে চান। তাঁরা একই ধরনের কড়া ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে, অপর একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পদক্ষেপ নিয়ে।
কী সেই ঘটনা ?
এদিনই তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লার কনভয়ের পাইলট কারের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক বাইক আরোহীর। পুলিশের সেই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ২০২৪ সালের ১০ অগাস্ট বাতিল হয়ে গেছে ! এক বছর আগেই রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও পুলিশের গাড়ি বলেই কি সাতখুন মাফ? পাবলিক ভেহিক্যালস ডিপার্টমেন্ট পুলিশের গাড়িটি লক করে দেয়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই পুলিশের গাড়িটিকে লক করে দেয় পরিবহণ দফতর। অতিরিক্ত দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে লক করা হয়েছিল। বাইকে ধাক্কা মারা পুলিশের গাড়ির বিমা সংক্রান্ত তথ্য পরিবহণ দফতরের কাছেই নেই। এম পরিবহণ অ্যাপেই পুলিশের গাড়ির তথ্য আপলোড। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, এই ঘটনায় পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে ? ফিটনেস সার্টিফিকেট না থাকা একটা গাড়ি রাস্তায় নামল কী করে ? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। লালবাজারে যত গাড়ি কেনা হয় তা কমিশনার অফ পুলিশের নামে রেজিস্ট্রেশন হয়। এরকম একটা গাড়ির ফিটনেস না থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় নামছে, রাস্তায় চলছে এবং তার ধাক্কায় মানুষ মারা যাচ্ছে। তাহলে এর দায় কে নেবে ? যা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ডিসি ট্রাফিকের সেই কড়া সুর শোনা গেল না।






















