Maha Juddha Exclusive : 'আদিপুরুষের স্ক্রিপ্ট রাইটারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, কিন্তু...', মণিপুর ইস্যুতে কৌশিকের নিশানায় প্রধানমন্ত্রী
Kaushik on TMC : কৌশিক মনে করেন, 'লাগাতার দুর্নীতি ও হিংসার অভিযোগে বিধ্বস্ত তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটাকে পিছিয়ে দিয়েছে।'
কলকাতা : প্রসঙ্গ ছিল- পঞ্চায়েত নির্বাচনের বেলাগাম হিংসা । তা নিয়ে বক্তব্য রাখতে উঠে বিজেপিকে তুলোধনা বিশিষ্ট অভিনেতা তথা নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেনের (Kaushik Sen)। উঠে এল মণিপুর (Manipur) প্রসঙ্গ। অশান্তি-বিধ্বস্ত মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এখন পর্যন্ত কোনও বিবৃতি সামনে না আসা নিয়ে তুললেন প্রশ্ন। একই সঙ্গে বিজেপিকে 'ফ্যাসিস্ট' শক্তি বলে আক্রমণ শানালেন। কৌশিক মনে করেন, 'লাগাতার দুর্নীতি ও হিংসার অভিযোগে বিধ্বস্ত তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটাকে পিছিয়ে দিয়েছে।'
কৌশিক বলছেন, "এই মুহূর্তে যে দলটি ভারত পরিচালনা করছে, তার নাম ভারতীয় জনতা দল। ভয়াবহ দল। এরকম ফ্যাসিস্ট শক্তি ভারতের বুকে কখনো আসেনি। এই ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইটাকেও তৃণমূল পিছিয়ে দিল। একটা ভোটে জয়ী হওয়া, আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে তাকে সমূলে উৎপাটন করা-দুটো ভিন্ন জিনিস। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন ২০ জুন ইলন মাস্কের সঙ্গে দেখা করছেন, ঠিক সেই সময় মণিপুর থেকে একটা প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মাত্র ১০ মিনিট দেখা করার জন্য মাথা কুঁড়ে মরেছে। প্রধানমন্ত্রী দেখা করেননি। আজ পর্যন্ত আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে একটা স্টেটমেন্ট দেননি। মণিপুরের এই প্রতিনিধিদলে একজন পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বলেছেন, আমরা ভিখারি নই। মণিপুরের ব্যাপারে মাত্র ১০ মিনিট সময় চেয়েছিলাম। উনি আদিপুরুষের যিনি স্ক্রিপ্ট লেখেন তাঁর সঙ্গে দেখা করার সময় পেয়েছেন, কিন্তু মণিপুরের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করার সময় পাননি।"
গত মে মাস থেকে থেকে একের পর এক হিংসার ঘটনায় বিধ্বস্ত মণিপুর। কিন্তু, এনিয়ে কোনও কথা খরচ করেননি প্রধানমন্ত্রী। সেরাজ্যে অশান্তি থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে দিনকয়েক আগে মণিপুরের পরিস্থিতির কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে যান তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। যাতে ছিলেন- বিজেপির দুই ও কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি। কিন্তু, দিনকয়েক ধরে রাজধানীর বুকে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকলেও, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাননি। এরকম একটা ঘটনা নিয়ে স্বভাবতই নিজের ক্ষোভ চাপা রাখতে পারেননি কৌশিক।
কেন্দ্রের শাসকদলকে একহাত নিয়ে তিনি বললেন, "আজ সিলেবাস থেকে মুঘল সাম্রাজ্যবাদ, ডারউইনবাদ, গুজরাত অশান্তি নেই, গাঁধী-হত্যা নেই। ইকবালকে জানবে না পরের প্রজন্ম। গিরিরাজ সিং বলে বিজেপির একজন এমপি আছেন। প্রধানমন্ত্রী যখন নতুন পার্লামেন্টের উদ্বোধন করে ঘটা করে মহাত্মা গাঁধীর পায়ে ফুল দিচ্ছেন, এই গিরিরাজ সিং যিনি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী, তিনি বলছেন, নাথুরাম গডসে হিন্দুস্থান কা সপুত। ভারতে এই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করাটা তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে দিল। তৃণমূল শুধু দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে নিজেদের ক্ষতি করছে তা-ই নয়, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি করছে তা-ই নয়, এই বছর ঘুরলে লোকসভা নির্বাচন, আমরা দেখছি কীভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে একের পর এক কিনে নিচ্ছে বিজেপি। অজিত পাওয়ার ইত্যাদির বিরুদ্ধে মামলা চলছে। প্রত্যেকে বিকিয়ে দিচ্ছে বিজেপির কাছে। বিরোধী শক্তিরা তৈরি হবে কী করে ? নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতে একটা ইমেজ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু, সেটা নষ্ট হয়ে গেছে। কে বিশ্বাস করবে, তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে ?"