Malda Ganga Erosion: ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙছে গঙ্গার পাড়, ঘুম ছুটেছে মালদার কালিয়াচকে
এদিকে, ভাঙন প্রতিরোধের দায় কার তা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর
করুণাময় সিংহ, মালদা : মালদার কালিয়াচকে বীরনগর এলাকায় গঙ্গার ভাঙন অব্যাহত। প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পাড় ভাঙছে। ভয়াবহ যে ভাঙনের জেরে ঘুম ছুটেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এদিকে, ভাঙন প্রতিরোধের দায় কার তা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর। ইতিমধ্যে ভাঙনের কারণে দুর্গতদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।
বেশ কয়েকদিন ধরেই মালদার কালিয়াচকে গঙ্গার ভাঙন দিনে দিনে ভয়ঙ্কর চেহারা নিচ্ছে। পাড় গিলতে গিলতে গ্রামের বসতির দিকে এগিয়ে আসছে গঙ্গা। অসহায় বাসিন্দারা ঘর বাড়ি ছেড়ে সরে যাচ্ছেন। জল দেখলেই এখন বুক কাঁপে মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা বন্দনা স্বর্ণকারের। দু’মাস আগে স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। ভরসা বলতে ছিল বাড়িটা, আর একটু জমি। গঙ্গার করাল গ্রাস তা-ও কেড়ে নিয়েছে। সর্বস্ব হারানোর নিঃস্ব চাউনি সঙ্গী করে বন্দনা স্বর্ণকার বলছিলেন, 'আমার জমি ছিল। বাড়ি ছিল। সবই এখন গঙ্গায়। দু-মাস আগে স্বামী মারা গেছেন। এখন কোথায় থাকব, কী খাব, ভেবে পাচ্ছি না।' বন্দনার মতোই এলাকার বহু মানুষ এই মুহূর্তে কার্যত সহায় সম্বলহীন।
পর পর বাড়ি গিলে খাচ্ছে গঙ্গার স্রোত, কালিয়াচকে আশ্রয়হারা বহু- দেখুন ভিডিও
কিন্তু, মানুষ যখন বিপদে, তখন তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে এনিয়ে শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলি। তৃণমূল বিধায়ক ও সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেছেন, 'ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধের কাজ না শুরু করলে আন্দোলনের পথে হাঁটব। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে কেন্দ্র ও ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।' অপরদিকে, বিজেপি নেতা ও বৈষ্ণবনগরের প্রাক্তন বিধায়ক স্বাধীন সরকার বলেছেন, 'ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। জলের লেভেল উঁচু থাকায় বাঁধের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। কেন্দ্র এবং রাজ্য, দুই সরকারকেই ভাঙন রোধের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। গত কয়েক বছরে কয়েক হাজার পরিবার ভাঙনের কারণে উদ্বাস্তু হয়েছে। অযথা রাজনীতি না করে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা উচিত রাজ্য সরকারের।' সোমবার ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান মোথাবাড়ির তৃণমূল বিধায়ক ও সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসকও।
আরও পড়ুন- গঙ্গায় ফের শুরু হয়েছে ভাঙন, একে একে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি