Mamata Banerjee: 'ধমকালেই অ্যারেস্ট করিয়ে দেব, আর কত খাবে'? হুঁশিয়ারি ক্ষুদ্ধ মমতার
Mamata Banerjee Arrest Warning: ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে এভাবেই বচসায় জড়ালেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষরা। দু’জন কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন এক কর্মাধ্যক্ষ।
আশাবুল হোসেন ও অমিতাভ রথ, কলকাতা: ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই বিবাদে জড়ালেন জেলা পরিষদের তিন কর্মাধ্যক্ষ। পূর্ত বিভাগের টেন্ডার নিয়ে জেলা পরিষদের পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ। যা শুনে প্রথমে তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে জেলাশাসকের কাছ থেকে সব শুনে, বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষকে ভর্ত্সনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামণি মুর্মু বলেন, "আমাদের যে পূর্ত দফতরের টেন্ডার হয়, সেই টেন্ডারটা আমাদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো এবং জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্ত, ওনারা সেই টেন্ডারটা নিজেদের মনোনীত কন্ট্রাক্টর না হওয়ার জন্য একেকটা কাজকে ৭-৮ বার ধরে টেন্ডার করেন। এটা যাতে বন্ধ হয় দিদি, আপনাকে অনুরোধ করছি।"
ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে এভাবেই বচসায় জড়ালেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষরা। দু’জন কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন এক কর্মাধ্যক্ষ। পূর্ত বিভাগের টেন্ডার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই অভিযোগ করেন তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামণি মুর্মু। সরাসরি কাঠগড়ায় তোলেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো ও জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্তকে। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে তৎক্ষণাৎ তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন, 'কাজে মন না থাকলে বসে যান, নইলে দলটা ঘ্যাচাং ফু হয়ে যাবে', নেতাদের বার্তা মমতার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "২ বারের বেশি হলে সেই টেন্ডারকে অ্যালাউ করবে না। মিস্টার এমভি রাও, এটা নোট করুন। একটা তদন্ত করুন এটা, ক’টা হয়েছে।" এরপরই দুই কর্মাধ্যক্ষকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যাদের নামে বলল উজ্জ্বল আর শুভ্রা, তারা কিন্তু নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি করে মেয়েটাকে ধমকাবে না। ধমকালে কিন্তু আমি অ্যারেস্ট করিয়ে দেব। নিজের মনোনীত লোক পাবে না। কত খাবে গো? উজ্জ্বল, তোমার নামে কমপ্লেন আগেও আমি পেয়েছি। আমি তোমাকে অ্যালার্ট করেছি। দিস ইজ দ্য লাস্ট টাইম। আর শুভ্রা কে? আমি কিন্তু ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট চাই।"
মুখ্যমন্ত্রীর কড়া ধমক শুনে পাল্টা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন দুই কর্মাধ্যক্ষ। জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্ত বলেন, "ওর মধ্যে কোনওভাবেই নেই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে ষড়যন্ত্র করে এসব অভিযোগ করছে। সবকিছুই ই-টেন্ডার হয়।" অন্যদিকে, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো বলেন, "দিদি আমাদের সব ই-টেন্ডার হয়। সব অংশগ্রহণকারীর কাগজপত্র ঠিক থাকে না বলে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার সেকশন সেটা অ্যালাউ করে না।"
এরপরই গোটা বিষয়টি ব্যাখা করেন জেলাশাসক। জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, "ম্যাডাম একটা কমিটিতে থাকাকালীন বলেছিল। একজন বিডার শারীরিকভাবে উপস্থিত নেই বলে ওর টেন্ডারটা ক্যানসেল করা হোক। সেটা আমরা অ্যালাউ করিনি।" একথা শুনে এবার বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষকে ভর্ত্সনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তাহলে একটা স্মল কেস। তুমি এটাকে নিয়ে পুরো...এটাকে নিয়ে রাজনীতি কেন করলে ভাই? আমি তো DM-এর থেকে ক্রস চেক করলাম। এটা তোমার ঠিক নয়, না জেনে কথা বলা। তুমি কি বলতে চাও DM-ও টাকা খেয়েছে?"
মামণি মুর্মু যদিও বলেন, "সমস্ত বিষয়টা DM ম্যাডামের নলেজে থেকেই সবকিছু হয়। জেলা পরিষদে আমাদের নিজেদের কোনওরকম কোনও ওপিনিয়ন থাকে না।" এরপরই ধমকের সুরে মমতা বলেন, "এটাতে তোমার ওপিনিয়ন থাকবে কেন? ইউ আর নট অথোরাইজড। এখানে জেলা পরিষদের সভাধিপতি এ ব্যাপারে যদি কোনও অভিযোগ থাকে, মিটিং ডেকে সবার সঙ্গে কথা বলবে।" প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।