Mamata Banerjee :'কান্নাকাটি করতে হবে না, ছুটতে হবে না', নতুন বছর শুরুর আগেই সন্দেশখালিতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
'কোনও দুষ্টু লোকের খপ্পরে পড়বেন না। আর মনে রাখবেন কোনও মেয়েরা, কেউ ডাকল আর চলে গেল, সেটাও যাবেন না।' সতর্ক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নতুন বছরের শুরুর আগেই কল্পতরু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে যে সন্দেশখালি তৃণমূলকে কার্যত চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল, সেই সন্দেশখালিতে গিয়েই একগুচ্ছ জনমোহিনী ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। জিতে নিতে চাইলেন সন্দেশখালির মহিলাদের মন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ জুড়ে রইলেন মহিলারা। এই মহিলারাই ছিলেন লোকসভা ভোটের আগে শাহজাহান-বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রধান মুখ। শাসক দলের বিরুদ্ধে একের পর এক ভয়ঙ্কর অভিযোগ তোলা থেকে শুরু করে লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা, সবেতেই প্রথমের সারিতে ছিলেন মহিলারা। সেই মহিলাদের কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী বললেন, পুরনো কথা আমি মনে রাখি না।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'সন্দেশখালির মা-বোনেদের অভিনন্দন। অনেক দূর থেকে অনেক কষ্ট করে এসেছেন, আপনাদের প্রণাম জানাই। আপনারা এই মাটিকে সমৃদ্ধ করেছেন'। মেয়েদের সতর্ক করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, 'কোনও দুষ্টু লোকের খপ্পরে পড়বেন না। মেয়েরা কেউ ডাকলেই চলে যাবেন না। আপনাদের অধিকার, আপনাদের নিজস্ব অধিকার। আমি জানি, এখানে অনেক টাকার অঙ্কের খেলা হয়েছে। পরে দেখলেন তো সবটাই ভাঁওতা, মিথ্যে বেশিদিন চলে না। আমি চাই, সন্দেশখালির মেয়েরা, ছেলেরা ১ নম্বর স্থানে আসুক'। তিনি সকলকে আশ্বস্ত করে দিয়ে বললেন, 'আগামী দিনে আপনাদের বিধবা ভাতার জন্য কান্নাকাটি করতে হবে না, ছুটতে হবে না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যাঁরা পাচ্ছেন, যাঁরা এখনও পাননি, পাবেন, মনে রাখবেন, শুধু ষাট বছর পর্যন্ত নয়, যত দিন বেঁচে থাকবেন এই ভাতা পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ সারা জীবনের জন্য এটা মা-বোনেদের অধিকার, সম্মান'
মুখ্যমন্ত্রী আরো জানালেন '২৬ জানুয়ারির পর দুর্গম এলাকায় আরেকবার দুয়ারে সরকার হবে। যাঁরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথীতে এখনও নাম লেখাতে পারেননি, তাঁরা যাতে এই সুযোগ-সুবিধা পান, তাই এই ব্যবস্থা। জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই প্রকল্প চলবে', সন্দেশখালি গিয়ে কথা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সন্দেশখালির মানুষকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'সবাই ভাল থাকবেন। আর মিলেমিশে থাকবেন। কোনও দুষ্টু লোকের খপ্পরে পড়বেন না। আর মনে রাখবেন কোনও মেয়েরা, কেউ ডাকল আর চলে গেল, সেটাও যাবেন না। আপনাদের অধিকার আপনাদের নিজস্ব অধিকার।'
গত ৫ জানুয়ারি, রেশন দুর্নীতির তদন্তে, সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে রক্তাক্ত হতে হয় ED-র আধিকারিকদের। ভাঙচুর করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়ি। মহিলাদের ধর্ষণ থেকে শুরু করে শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অত্যাচার, নির্যাতনের ভুরি ভুরি অভিযোগ ওঠে। সেই সময় আন্দোলনকারীরা চেয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী একবার এলাকায় আসুন। বছর শেষ হওয়ার আগেই সেখানে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। মহিলাদের কথা মাথায় রেখেই করলেন একাধিক জনদরদী ঘোষণা।