Matua Community Agitation: 'এক সপ্তাহের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা না চাইলে, নবান্ন অভিযান', হুঁশিয়ারি আন্তর্জাতিক মতুয়া পরিষদের
ধর্মগুরুর নামের ভুল উচ্চারণের প্রতিবাদে, হুঁশিয়ারি দিল আন্তর্জাতিক মতুয়া পরিষদ। একই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন শুভেন্দু অধিকারীও।

কলকাতা: এক সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী (Cm Mamata Banerjee) ক্ষমা না চাইলে, ১৫ ফেব্রুয়ারি নবান্ন (Nabanna) অভিযান হবে। ধর্মগুরুর নামের ভুল উচ্চারণের প্রতিবাদে, হুঁশিয়ারি দিল আন্তর্জাতিক মতুয়া পরিষদ। একই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন শুভেন্দু অধিকারীও (Suvendu Adhikari)। মতুয়ারা তৃণমূলের সঙ্গেই আছে। দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
ভুল উচ্চারণের প্রতিবাদ: মুখ্য়মন্ত্রীর মতুয়া-ধর্মগুরুর নামের ভুল উচ্চারণের প্রতিবাদে, পথে নেমেছে মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশ। এবার এনিয়ে একেবারে নবান্ন অভিযানের হুঁশিয়ারি দিল তারা। পাল্টা মতুয়াদের একাংশকে নিয়ে রাজনীতির চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
আন্তর্জাতিক মতুয়া পরিষদের আহ্বায়ক সুকেশ চৌধুরীর কথায়, এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী যে বাড়িতে একাধিকবার গেছেন তিনি জানেন, তারপরও তিনি ভুল করে বলেছেন আমরা বিশ্বাস করি না। ইচ্ছাকৃতভাবে তাচ্ছিল্য অবজ্ঞা সুরে তিনি বলেছেন।
বৃহস্পতিবার মালদায় প্রশাসনিক সভায় বক্তব্য রাখার সময়, মতুয়াদের ধর্মগুরুর নাম উচ্চারণে ভুল করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে তা স্বীকারও করেন তিনি। কিন্তু, এই ইস্য়ুকে হাতছাড়া করতে নারাজ বিজেপি। এই ইস্য়ুতে বিতর্কের জল আরও কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।
ঠিক কী হয়েছিল? ভোট এলেই মতুয়ারা বিজেপির বন্ধু হয়ে যায়। ক্য়া ক্য়া করে চিৎকার শুরু হয়ে যায়। গত ৩১ জানুয়ারি সরাসরি বিজেপি নিশানা করলেন তৃণমূল নেত্রী। জবাব দিতে দেরি করেনি গেরুয়া শিবির। সেদিনই মতুয়াদের ধর্মগুরুর নাম ভুল বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে সেই থেকেই শুরু হয় চাপানউতোর। মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা না চাইলে আন্দোলন হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘ। বিষয়টি নিয়ে পথে নামবেন বলে ঘোষণা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। মুখ্যমন্ত্রীর মতুয়া ধর্মগুরুদের ভুল নাম বলা নিয়ে অব্যাহত বিতর্ক। আজ উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় বিক্ষোভ দেখাল মতুয়াদের একাংশ। তৃণমূল ভোট চাইতে এলে মতুয়াদের লাঠি নিয়ে তৈরি থাকার নির্দেশ দিলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যাবলেন, মতুয়াদের জন্য আমরা কিন্তু সবটা করেছি। আর বিজেপি ভোট এলে হঠাৎ করে গিয়ে একটু ভাত খেয়ে বলবে, আমি মতুয়ার বন্ধু হয়ে গেলাম। ক্যা ক্যা করে চিৎকার করবে। ওদের বলুন ক্যা ক্যা করবার জন্য কাক আছে, কা কা করে। তুমি কেন ক্যা ক্যা করছ? এনআরসি-র নামে?
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। আর যে কোনও ভোটে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে মতুয়া ভোটব্য়াঙ্ক বড় ফ্য়াক্টর। মঙ্গলবার মালদার সভা থেকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মুখে উঠে এল মতুয়া প্রসঙ্গ! গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে caa চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মতুয়াদের ঢালাও সমর্থন পেয়েছিল বিজেপি।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে, মতুয়া অধ্যুষিত দু’টো কেন্দ্র। বনগাঁ এবং রানাঘাট, তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। পরবর্তীকালে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৬টি আসনেই বিজেপি জয়লাভ করে। তৃণমূল পায় মাত্র একটি আসন।
কিন্তু পুরভোটে মতুয়া অধ্য়ুষিত এলাকার সমীকরণ আমুল পাল্টে যায়। বনগাঁ, কল্যাণী এবং হরিণঘাটা, ৩টে পুরসভাতেই বিজেপি হেরে যায়। মতুয়া অধ্যুষিত নদিয়া জেলার ১০টা পুরসভার মধ্যে বিজেপি একটাতেও জিততে পারেনি। শান্তিপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয় শাসকদল।
এই প্রেক্ষাপটে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, মতুয়া ভোট টানতে ফের CAA ইস্য়ুকে হাতিয়ার করলেন তৃণমূল নেত্রী। বাংলায় প্রায় ২ কোটি ৮৭ লক্ষ মানুষ নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের। যার সিংহভাগই মতুয়া। যার মধ্যে ৩১টি সংরক্ষিত আসনে কার্যত নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নেয় মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক। এবার পঞ্চায়েত ভোটে মতুয়ারা কোন দিকে ঝুঁকবে, সেটাই দেখার।


















