Krishnanagar News: ‘আপনিও তো হিন্দু মহিলা!’, কৃষ্ণনগরে পুলিশের সঙ্গে তর্ক-ধস্তাধস্তি বিজেপি-র, IC-কে সরাতে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন সুকান্ত
Sukanta Majumdar: বুধবার সুকান্তর সঙ্গে কৃষ্ণনগরে থানা অভিযানে শামিল হন শত শত বিজেপি কর্মী।

কৃষ্ণনগর: জগদ্ধাত্রী পুজোয় পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে কৃষ্ণনগরে থানা অভিযানে বেরিয়েছিলেন বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আর সেই অভিযান ঘিরে তুলকালাম পরিস্থিতি দেখা গেল কৃষ্ণনগরে। থানার সামনে পুলিশের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক থেকে ধস্তাধস্তিতে জড়ালেন বিজেপি-র কর্মীরা। IC-কে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলল বিজেপি। সুকান্তর দাবি, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে হবে IC-কে। (Krishnanagar News)
বুধবার সুকান্তর সঙ্গে কৃষ্ণনগরে থানা অভিযানে শামিল হন শত শত বিজেপি কর্মী। সেখানে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে প্রথমে তর্কাতর্কি শুরু হয় পুলিশের। এক মহিলা পুলিশকর্মীকে বলতে শোনা যায়, "আমরা ২৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ডিউটি করি। সত্যিটা কী আমরা জানি। ভাসানের ডিউটি ২৪ ঘণ্টার বেশি হয়। প্রত্যেক পুলিশ ২৫ ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন।" (Sukanta Majumdar)
এতে বিজেপি-র তরফে বলা হয়, "আইসি-কে ক্ষমা চাইতে হবে।" কিন্তু ওই পুলিশকর্মী পাল্টা জবাবে বলেন, "কেন ক্ষমা চাইবেন আইসি? কী অন্যায় করেছেন? পুলিশ ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়ে ডিউটি করে। আপনারা পুরো সত্য না জেনে কথা বলছেন। আগে জেনে আসুন পুরো সত্যিটা। ২৪ মিনিটের ভিডিও দেখে ২৪ ঘণ্টার বিচার পারেন না।"
এক বিজেপি কর্মীকে বলতে শোনা যায়, "আমার চোখে দেখেছি। উনি গালিগালাজ করছেন।" এতে ওই মহিলা পুলিশকর্মী বলেন, "কাকে করেছেন? চেঁচাবেন না।" এতে বিজেপি-র তরফে তাঁকে বলা হয়, "একদম এভাবে কথা বলবেন না। একেবারে চুপ। এগুলো করতে পারেন না। এতবড় অপরাধ করেছেন। ওপেন গালিগালাজ করেছেন। আপনিও তো হিন্দু মহিলা। এগুলো মেনে নিচ্ছেন?"
ওই মহিলা পুলিশকর্মী বলেন, "কী অপরাধ করেছেন? পুলিশের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। পুলিশের গায়ে হাত তুলেছে।" এতে বিজেপি-র কর্মীরা বলেন, "ক্ষমা চাইতে বলুন। কী করেননি! মিছিলের উপর আঘাত করেছেন। আপনি অপরাধীদের বাঁচাতে চাইছেন। আপনি অপরাধীদের দোসর। তৃণমূলের দালালি করবেন না। লজ্জা করে না! সরকারি পোশাক পরে দালালি করতে লজ্জা করে না! বাড়িতে মা-বোন নেই!" এর পরই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় বিজেপি কর্মীদের। মাঝে দাঁড়িয়ে মধ্যস্থতা করেন পুলিশের কয়েক জন। কিন্তু পরিস্থিতি তেতে ওঠে।
এর পর সুকান্ত বক্তৃতা করতে গিয়ে বলেন, "পুলিশের অফিসার স্বীকার করে নিলেন, পুলিশমন্ত্রী অপদার্থ। ম্যাডাম বলছেন, আমরা ২৪ জন লোক মিলে ২৪ হাজার লোক সামাল দেন। তাহলে এমন অপদার্থ পুলিশ এবং পুলিশমন্ত্রী থাকার চেয়ে না থাকা ভাল। কোতোয়ালি থানার আইসি যেভাবে আমাদের মা-বোনকে...যেভাবে নদিয়ার রাসকে...আমাকে আসতে হয়েছে। আইসি যেভাবে অসভ্য ভাষা প্রয়োগ করেছেন, যেভাবে লাঠিচার্জ করেছেন, আমরা ৭২ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি, এই আইসি-কে পরিবর্তন করতে হবে। নইলে আরও তীব্র হবে আমাদের।"
সুকান্ত আরও বলেন, "পিন্টু মাহাতো অনেক বীরত্ব দেখিয়েছেন। আমি পরিষ্কার বলে যাচ্ছি, পিন্টু মাহাতো ঘুষের টাকায় কী কী করেছে, হিসেব তৈরি রাখুন। আমি ব্যবস্থা করছি। এসপি-কে পরিষ্কার বলছি, হিন্দুদের প্রোগ্রামে, হিন্দুদের সামাজিক অনুষ্ঠানে আপনাদের...পুলিশি অত্যাচারের কথা শুনতে পাচ্ছি এখানে। যেভাবে গালাগালি দিয়েছেন, আমি তো অবাক হয়ে গেলাম! ওঁকে তো খিস্তিশ্রী পুরস্কার দেওয়া উচিত। আজ হিন্দুদের আন্দোলনে, হিন্দুদের পুজোয়, হিন্দুদের সবকিছুতে মমতা ও তাঁর দলদাস পুলিশ একের পর আক্রমণ করছে। এই নদিয়া জেলার পবিত্র মাটিতে হরিনাম-সঙ্কীর্তন বন্ধের চেষ্টা করেছিল চাঁদ কাজি। ইতিহাস পড়েছেন তো! পেরেছিল? তখন তো বাংলার মসনদে হুসেন শাহের মতো লোক ছিল। এখন তো ভারতবর্ষের রাজা নরেন্দ্র মোদি বসে আছেন। বাপের ব্যাটার ক্ষমতা নেই হরিনাম বন্ধ করবে। আজ ট্রেলার দেখলেন এসপি সাহেব। ১০ হাজার লোক নিয়ে আপনারা ঘেরাও করতে পারবেন না!"
ঘটনার সূচনা কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের একটি ভিডিও ঘিরে। ভিডিওটি পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, 'কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের মুহূর্তে হিন্দুদের উপর অন্যায় নির্যাতন চালানোর সময় আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসের মুখের ভাষা থেকেই বোঝা যায় হিন্দুদের কী চোখে দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের পুলিশ ও প্রশাসন'। যদিও কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ গোড়াতেই জানায়, মহিলাদের উত্যক্ত করা এবং হেনস্থার ঘটনা রুখতেই পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং লাগানো উচিত নয়।






















