Duttapukur Incident: ‘ISF-এর কাজ, মুর্শিদাবাদ থেকে লোক আনা হয়’, দত্তপুকুর বিস্ফোরণে দাবি মন্ত্রীর, ‘খামোকা দোষারোপ’, পাল্টা নৌশাদ
Rathin Ghosh: যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিলেন রথীন। বরং ISF-কে কাঠগড়ায় তুললেন তিনি। (Duttapukur Incident)
দত্তপুকুর: আবারও বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়েছে দত্তপুকুরে। গোটা ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছেন স্থানীয়রা। সরাসরি রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ এবং পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছেন তাঁরা। সবাই সব জানতেন, টাকার বিনিময়ে নীরব দর্শক হয়ে বসেছিলেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কিন্তু যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিলেন রথীন। বরং ISF-কে কাঠগড়ায় তুললেন তিনি। (Duttapukur Incident)
রবিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রথীন বলেন, "আমি যা শুনলাম, মুর্শিদাবাদে একজন রয়েছে চিনার শেঠ, রমজান আলি ওরফে কালো। উনি আসলে ISF নেতা। বাড়িতে দলীয় কার্যালয়ও রয়েচে। ওঁর বাড়ির গোডাউনেও এখনও বাজি পাবেন।" কিন্তু স্থানীয়রা যে সামসুল আলির দিকে আঙুল তুলছেন, তিনিই বেআইনি বাজি কারখানার মালিক এবং তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে অভিযোগ করছেন?
প্রশ্নের উত্তরে রথীন বলেন, "সামসুলের বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল রমজান। বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাজি কারখানা চালাচ্ছিল। আজ বিস্ফোরণের পর জানতে পারি। কে, কোথায় গোডাউন ভাড়া দিয়েছে, আমার পক্ষে ব্যক্তিগত ভাবে জানা সম্ভব নয়। ইছাপুর, নীলগঞ্জে আমরা জানি, নারাণপুরে বাজি তৈরি হতো। প্রশাসন সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে কিছু হচ্ছে না নতুন করে। মোচপোলে যাঁরা মারা গিয়েছে, এলাকার তিন জন, বাকিরা মুর্শিদাবাদের। এখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। এবার ওখানে পঞ্চায়েতে জয়ী হয় ISF. আমাদের বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।"
বাজি কারখানার নেপথ্য়ে বোমা তৈরি করা হচ্ছিল কিনা, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীদের অভিযোগ, তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী সামসুল ওরফে 'খুদে'। প্রশাসনের মদতেই তাঁর বাড়িতে বেআইনি বাজি কারখানা এবং বাজির আড়ালে বোমা তৈরি হত বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, বাড়িটি ভাড়া দিয়ে মোটা টাকা রোজগার করেন সামসুল। এখানেই 'মাল' তৈরি হয়। তার পর ওর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ছাদে শুকানো হয়, শেষে মজুত করে রাখা হয় ঘরে। স্থানীয়দের অভিয়োগ, রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীনও সব জানতেন। বছর চার-পাঁচেক আগে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কাজ হয়নি।
যদিও রথীনের বক্তব্য, "আমরা যদি জানতাম, তাহলে তো ব্যবস্থা নিতাম! প্রশাসনকে জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু যদি ঘরে ঘরে বোমা তৈরি হতো, বিষয়টি সামগ্রিক হতো, তাহলে জানাজানি অনেক আগেই হতো।" যদিও রথীনের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। তাঁর বক্তব্য, "গরিবদের কাজে লাগিয়ে অনৈতিক কাজ করায় তৃণমূল, অঘটন ঘটলে বিরোধীদের ঘাড়ে দোষ চাপায়।" বিস্ফোরণে তাঁদের বুথ সভাপতির মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন নৌশাদ।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের মোচপোলের কাঠুরিয়া এলাকায় বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে এখনও পর্যন্ত আট জন মারা গিয়েছেন। আহত তিন শিশু ও মহিলা-সহ বেশ কয়েক জন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় উড়ে গিয়েছে অভিযুক্ত সামসুল আলি ওরফে 'খুদে'র বাড়ির একাংশ। বিস্ফোরণের আগুনে ঝলসে গিয়েছেন বেশ কয়েক জন। উড়ে গিয়েছে হাত-পা। এদিন বিস্ফোরণের শব্দ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বারাসাত শহরও কেঁপে ওঠে।