Sikkim Flash Flood: মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম, একাধিক এলাকায় আটকে হাজার হাজার পর্যটক
Sikkim Cludburst: সেনা সূত্রে খবর, এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পর্যটককে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ। কাদা বালির স্তূপের মধ্যে চলছে সন্ধান।
সন্দীপ সরকার, সিকিম: মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমে (North Sikkim) ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর কেটে গেছে বেশ কয়েক দিন। এখনও চুংথাং, লাচুং এবং লাচেনে আটকে রয়েছেন দেড়হাজার পর্যটক। তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে লাচুং, ছাতেন, থাঙ্গু, চুংথাঙের সেনা ক্যাম্পে (Army Camp)।
সেনা সূত্রে খবর, এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পর্যটককে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ। কাদা বালির স্তূপের মধ্যে চলছে সন্ধান। ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে সেনাবাহিনীর হেল্প লাইন। খাবার, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা ছাড়াও আটকে থাকা পর্যটকদের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের যোগাযোগ করানোর চেষ্টা করছেন সেনা জওয়ানরা। যে কোনও প্রয়োজনে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের সেনা ক্যাম্পে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ড্রোন উড়িয়ে, স্পেশাল রেডারের মাধ্যমে অথবা সেনা কুকুর নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা।
এদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার রানিহাটি থেকে সিকিমে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন দম্পতি। বিপর্যয়ের পর থেকে খোঁজ না মেলায় চিন্তায় দিন কাটছিল নির্মল বাইন ও অঞ্জনা বাইন চৌধুরীর আত্মীয়দের। পরিবারের দাবি, গতকাল শিলিগুড়ির সেনা ক্যাম্প থেকে ফোন করে জানানো হয়, নিরাপদেই আছেন বাইন পরিবারের ছেলে-বউমা। তবে তাঁরা আটকে রয়েছেন সিকিমে। বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছে বাগদার পরিবার।
অন্যদিকে, সিকিমে নিখোঁজ কোচবিহারের রফিকুল হক। বাড়ি কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের পানিশালা এলাকায়। পরিবার সূত্রে খবর, মাসছয়েক আগে সিকিমের লাচুঙে রাজমিস্ত্রির কাজে যান বছর চল্লিশের রফিকুল। মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ শেষবার স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় তাঁর। বিপর্যয়ের পর থেকেই ওই পরিযায়ীশ্রমিকের মোবাইল ফোন বন্ধ। যোগাযোগ করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে বাড়ির লোকজনের। এদিন নিখোঁজ পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়ি গিয়ে আশ্বাস দেন কোচবিহার ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। রফিকুলের সন্ধান পেতে জেলা প্রশাসন তৎপর বলে তিনি জানান।
সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টি-বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এ পর্যন্ত ৬৯টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তিস্তার জলে বাংলায় ভেসে এসেছে ৪২টি দেহ। এঁদের মধ্যে ৭ জওয়ানও রয়েছেন। নিখোঁজ ১৪২ জন। আটকে রয়েছেন প্রায় ৭ হাজার পর্যটক। সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর সিকিমের সিংথাম। ভয়াল তিস্তা গিলে খেয়েছে সেতু। সিংথামে ইস্ট পয়েন্ট হাইস্কুলের নীচের তলা পুরোটা কাদায় ডুবে গেছে। গাছের ওপর উঠে গিয়েছে স্কুল বাস। সেবক-রংপো রেললাইন তৈরির কাজে ব্যবহৃত পে লোডার, ক্রেন সব কিছু খেলনা গাড়ির মতো এদিক-ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। সিংথামে তিস্তা পাড়ে একটি বাড়িও আস্ত নেই। এর মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ।