Paschim Bardhaman: রেলের জমিতে পাট্টা দেওয়ার 'প্রতিশ্রুতি', টাকা তোলার অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল কর্মী
TMC: অভিযোগ অস্বীকার দুর্গাপুরে তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের। পাল্টা তোপ দেগেছেন বিরোধীরা।

মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: রেলের জমিতে পাট্টা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ও নথি তৈরির কথা বলে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে দুর্গাপুরে তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হলেন রেলের জমিতে বসবাসকারীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা।
জমির মালিক রেল। অথচ সেখানে পাট্টা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ও পাট্টা পেতে নথি তৈরির নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে শনিবার রেলের তরফে সেই জমি থেকে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হলে বিপাকে পড়ল প্রায় দেড়শো পরিবার। বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরকে কার্যত ঘিরে ধরলেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় জেলায় আবাস যোজনা নিয়ে যখন ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠছে, তখন চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটল দুর্গাপুরে।
কী অভিযোগ:
দুর্গাপুর স্টেশনের পাশে ঘুসিকডাঙায় রেলের জমিতে বসবাস করে প্রায় ১৫০ পরিবার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন কর্মী, রেলের জমিতে পাট্টা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পাশাপাশি কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়ার নাম করে পরিবার পিছু ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা নেয় তাঁরা। বাসিন্দাদের দাবি, এই হল তৃণমূল কর্মীদের তৈরি করে দেওয়া আদালতের এফিডেভিট। রেলের জমিতে বসবাসকারী সোনু দেবী বলেন, 'উনি বলেছেন, এটা বানিয়ে দিচ্ছি। এটা দেখে আপনাদের তোলা না হবে। রেল এসে বলছে ২৮ তারিখের মধ্যে উঠতে হবে। না উঠলে আমরা বুলডোজার এনে তুলে দেব। তাহলে আমরা কোথায় যাব? টাকা নেওয়া হয়েছিল? হ্যাঁ। নেওয়া হয়েছিল। কত নেওয়া হয়েছিল? দেড় হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল। কাগজটা কোথা থেকে দেওয়া হয়েছিল? এই পার্টি অফিস থেকে। সুনীল কাকুর পার্টি অফিস থেকে। কোন দলের পার্টি অফিস? টিএমসির। টাকাটা কাকে দিয়েছিলে? কাউন্সিলরকেই দিয়েছি। এখানে দিয়েগেছিলাম। গোপাল কে? সুনীল চ্যাটার্জির ছেলে। কোন পার্টি করে? টিএমসি।'
এই পরিস্থিতিতে শনিবার রেলের তরফে পরিবারগুলিকে উচ্ছেদের নোটিস দিয়ে বলা হয়, ২৮ জানুয়ারির মধ্যে এলাকা ফাঁকা করে দিতে হবে। বাসিন্দাদের দাবি, তৃণমূল কর্মীদের তৈরি করে দেওয়া নথি দেখালেও কোনও কাজ হয়নি। এই অবস্থায় অথৈ জলে পড়েন প্রায় সাড়ে তিনশো বাসিন্দা। রবিবার দুর্গাপুর পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর ও বরো চেয়ারম্যান সুনীল চট্টোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন তাঁরা। শাসকদলের নেতাকে কার্যত ঘেরাও করা হয়।
বিরোধীদের তোপ:
প্রশ্ন ওঠে, জমি যদি রেলেরই হয়, তাহলে সেখানে পাট্টার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ও নথি তৈরির নামে কেন টাকা নেওয়া হল? যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর! পাশাপাশি রেল উচ্ছেদ করতে এলে, প্রতিরোধেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনায় তুমুল তুলোধনা করেছে বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'ওই কোম্পানিটাই হচ্ছে চোর কোম্পানি। চুরি ডাকাতি ছাড়া দ্বিতীয় কিছু জানে না। আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। শৌচালয় নির্মাণের টাকা ঝেড়েছে। এত নিকৃষ্ট মানের চোর নথিভুক্ত রাজনৈতিক দল পৃথিবীতে কেউ দেখেনি।'
তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সামনেই সেখানে পুরভোট হবে। তার আগে রেলের জমিতে পাট্টা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতি, লুট লক্ষাধিক টাকা-গয়না






















