Child Theft: শিশুপাচার চক্রের ঘটনায় তদন্তে একের পর এক 'লিঙ্ক', রাজডাঙার আইভিএফ সেন্টারে হাজির আনন্দপুর থানার পুলিশ
Anandapur Police Station:আইভিএফ সেন্টারের আড়ালে শিশুপাচার চক্রের ঘটনায় তদন্তে নেমে একের পর এক 'লিঙ্ক' খুঁজে পেয়েছে কলকাতা পুলিশ।
সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: আইভিএফ সেন্টারের (IVF Centre) আড়ালে শিশুপাচার (Child Theft) চক্রের ঘটনায় তদন্তে নেমে একের পর এক 'লিঙ্ক' খুঁজে পেয়েছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। এদিন তদন্তের সূত্র ধরে ধৃতদের অন্যতম মমতা পাত্রকে একটি আইভিএফ সেন্টারে নিয়ে আসেন আনন্দপুর থানার আধিকারিকরা। বেশ কিছুক্ষণ সেখানকার কর্ণধারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
কী ঘটল?
শুক্রবার রাজডাঙা মেন রোডের কসবা শান্তিপল্লির একটি আইভিএফ সেন্টারে এসেছিলেন আনন্দপুর থানার আধিকারিকরা। নিয়ে এসেছিলেন শিশু পাচারচক্রে ধৃত, অন্যতম অভিযুক্ত মমতা পাত্রকে। সূত্রের খবর, মমতার বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথিপত্র পাওয়া গিয়েছে যা থেকে জানা যায় যে তিনি 'সারোগেট মাদার' হয়েছিলেন। কিন্তু গোটা প্রক্রিয়াটি কি নিয়ম মেনে হয়েছিল? কোন পথে এগোনো হয়? এসবই জানতে মমতাকে নিয়ে আইভিএফ সেন্টারের কর্নধারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আনন্দপুর থানার আধিকারিকরা।
প্রেক্ষাপট...
হালেই শিশু বিক্রির চক্রের তদন্তে নেমে চোখ কপালে উঠে যায় পুলিশের। অভিযোগ ছিল, আইভিএফ সেন্টারগুলির আড়ালে ৪ থেকে সাড় ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সদ্যোজাতকে নিঃসন্তান দম্পতিদের হাতে তুলে দেওয়ার টোপ দেওয়া হত। রীতিমতো পরিকল্পনা করে এই কাজ চলত। প্রাথমিক ভাবে উঠে আসে, এ জন ওই দম্পতিকে নিজের বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হত। সদ্যোজাতকে হাতে পাওয়ার পরই বাড়ি ফিরতেন দম্পতি। সম্প্রতি আনন্দপুর থানা এলাকায় এক মহিলার কন্যাসন্তান নিখোঁজ হয়ে যায়। কন্যাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সন্তান ছাড়াই ফিরে আসেন ওই মহিলা। সেখান থেকেই গোটা শিশু বিক্রির চক্রের হদিশ মেলে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে সিআইডি তদন্তে গোটা রাজ্যেই ছড়িয়ে থাকা শিশু পাচার চক্রের একটি জাল উঠে এসেছিল। তার পাঁচ বছর পর আনন্দপুর থানা এলাকার এই ঘটনা চমকে দিয়েছে অনেককেই। জানা যায়, এক নিঃসন্তান দম্পতি কয়েকদিন আগে আইভিএফ সেন্টারে যান। প্রথমে তাঁরা চিকিৎসকদের পরামর্শ নেন। তার পর, সেখানেই এক মহিলার সঙ্গে ওই দম্পতির পরিচয় হয় বলে তদন্তে উঠে এসেছে। জানা যাচ্ছে, ওই মহিলাই দম্পতিকে জানান, ৪-সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১০-২০ দিন বয়সি সদ্যোজাত শিশু তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই কাজের জন্য অগ্রিম বাবদ ওই মহিলাকে কিছু টাকাও দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। টাকা হাতে পেতেই তিনি দম্পতিকে জানিয়ে দেন, নিজেদের বাড়িতে তাঁরা থাকতে পারবেন না। এক বছরের জন্য বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ভাড়া নিতে হবে। কোথায় ভাড়া নিতে হবে, সেটিও তিনি বলে দেবেন। এক বছর পর দম্পতির হাতে সদ্যোজাতকে তুলে দেওয়া হবে। বাড়ি ফিরে তাঁরা বলবেন, আইভিএফ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা করিয়েই এই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এভাবেই গোটা প্রক্রিয়া চলে। কিন্তু আনন্দপুরের ঘটনায় একটু গণ্ডগোল হয়েছিল। যাঁর শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ, তাঁর মায়ের কাছে সন্তানকে দেখতে না পেয়ে পড়শিরাই পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ আধিকারিকরা মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রথমে তিনি কিছু স্বীকার করেননি, কিন্তু পরে সবটা প্রকাশ্যে আসে। সেই তদন্তের সূত্র ধরেই এদিনের আইভিএফ সেন্টারে অভিযান।
আরও পড়ুন:চাঁদের আরও কাছাকাছি চন্দ্রযান-৩, কক্ষে প্রবেশ কালই