Purba Bardhaman: ৬ বছর পর বাড়ি ফিরল অভিযুক্ত, পুলিশে খবর দিতেই গায়ে আগুন
Katwa News: পুলিশকে জানালে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন বলে স্ত্রীর অভিযোগ। এরপর সুযোগ বুঝে বুধবার দুপুরে কাটোয়া থানায় গিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানান বধূ।
রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: খুনের অভিযোগ ছিল। তারপর থেকে দীর্ঘদিন ধরে ফেরার ছিলেন ওই ব্যক্তি। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। একদিন-দুদিন নয়, দীর্ঘ ৬ বছর। তারপরে হঠাৎ ফিরে আসেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার শ্বশুরবাড়িতে। অভিযোগ সেখানেও এসেও হুমকি দেন স্ত্রী ও সন্তানকে। পুলিশে খবর দিলে মেরে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখেছিলেন স্ত্রী। রাতের বেলায় সুযোগ বুঝে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান স্ত্রী। সোজা চলে আসেন থানায়। তারপর ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়।
কী হল তারপরে?
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই বাড়িতে গেলে দেখা যায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে বাড়িতে। তখনই দেখা যায়, গায়েও আগুন দিয়েছেন ওই অভিযুক্ত। কোনওমতে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় অভিযুক্ত যুবকের। কাটোয়ার জেলেপাড়ার ঘটনা। এই ঘটনার তদন্তে নেমে চোখ কপালে উঠেছে জেলা পুলিশের।
কী উঠে এসেছে তদন্তে?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের অক্টোবরে এলাকার এক যুবককে গুলি করেন, কাটোয়ার মাধাইতলার বাসিন্দা তন্ময় রায়। সেই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তখনই তন্ময়ের খোঁজে বাড়িতে আসে পুলিশ। তখনই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যান তন্ময়। জানা যায়, তিনি কেরলে পালিয়ে গিয়েছিলেন। স্থানীয়দের সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলের খোঁজে বারবার বাড়িতে পুলিশ আসায়, আত্মহত্যা করেন অভিযুক্তের বাবা-মা। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ ছিল না তন্ময়ের। তারপরে দীর্ঘ ৬ বছর পর শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন তন্ময়। মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই বাড়ি ফেরেন তিনি। বাড়ি ফেরার খবর যাতে পুলিশকে না জানানো হয় তার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশকে জানালে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন বলে স্ত্রীর অভিযোগ। এরপর সুযোগ বুঝে বুধবার দুপুরে কাটোয়া থানায় গিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানান বধূ। তারপরেই বাড়িতে ও গায়ে আগুন দেন ওই অভিযুক্ত যুবক।
মৃতের স্ত্রী মৌসুমী রায় বলেন, 'আমাকে আর ছেলেকে মারার চেষ্টা করে। থানা থেকে পুলিশ আসার সময় দেখি পেট্রোল ঢেলে গায়ে আগুন লাগায়, বাড়িতে আগুন ধরিয়েছে।'
ওই পরিবারের পড়শি জয়ন্ত দাস বলেন, 'অনেকদিন ধরে ঝামেলা চলছিল শুনতাম, পারিবারিক বিষয়। ছেলে বউকে আটকে রেখেছিল।'
একাধিক অভিযোগ?
বছর আটত্রিশের যুবকের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি তাঁর স্ত্রীর। তিনি বলেন, 'ওরকম অনেক রকম কেস। কেরলেও কেস আছে। সালারে, কাটোয়ায় অনেক কেস আছে। ওই ভয়ে রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে ঢোকে পাঁচিল টপকে। আমাকে ব্ল্যাকমেল করছিল।' মৃতের বিরুদ্ধে আর কী কী মামলা রয়েছে তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কল্যাণময় আর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি নন, নয়া কমিটিতে দায়িত্বে এ বার রামানুজ