Memari : রেললাইনে আটকে পড়েছে টোটো, এগিয়ে আসছে ট্রেন ! 'দেবদূতের' মতো চালকের পাশে এসে দাঁড়ালেন জনপ্রতিনিধি
Toto Driver in Trouble : আশপাশ দিয়ে একের পর এক লোক চলে গেলেও কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। এই পরিস্থিতিতে কী করবেন বুঝতে উঠতে পারছিলেন না টোটো চালক
কমলকৃষ্ণ দে, মেমারি : এ যেন 'স্নায়ুর' লড়াই ! রেলগেট বন্ধ করছেন গেটম্যান। ট্রেনও চলে এসেছে কাছাকাছি । এমন সময় প্রসূতিকে হাসপাতালে আনতে যাওয়ার পথে টোটো নিয়ে রেললাইনে আটকে পড়েছেন চালক। প্রাণপনে টোটোকে (Toto) লাইন থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু, না ! কিছুতেই একার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আশপাশ দিয়ে একের পর এক লোক চলে গেলেও কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। এই পরিস্থিতিতে কী করবেন বুঝতে উঠতে পারছেন না টোটো চালক। আর সেই সময়ই 'দেবদূতে'র মতো ঘটনাস্থলে এসে হাজির মেমারি পুরসভার চেয়ারম্যান (Memari Municipality Chairman) স্বপন বিষয়ী।
রেলগেট পার হওয়ার সময় টোটোওয়ালার অসহায় অবস্থা দেখে তিনি নিজেই টোটোটিকে ঠেলে তুলতে এগিয়ে আসেন। হাত লাগান। তাঁকে দেখে এগিয়ে আসেন একজন। তিনজনের চেষ্টায় কোনও রকমে টোটোটিকে টেনে তোলা হয়। মেমারির ইলামপুর লেভেল ক্রসিংয়ের ঘটনা।
মেমারি শহরে তিনটে লেভেল ক্রসিং রয়েছে। একটি জিটি রোডের উপর চেকপোস্টে। বাকি দুটি কৃষ্ণবাজার ও ইলামপুরে। কার্যত তিনটি লেভেল ক্রসিং-এর রাস্তার অবস্থা বেহাল। অভিযোগ, যার ফলে বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে। এজন্য রেলের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন পুরপ্রধান।
ঘটনাটা কী ?
প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য যাচ্ছিলেন টোটোচালক। কিন্তু শহরের ইলামপুরে লেভেল ক্রসিং পার হতে গিয়ে টোটোর চাকা রেললাইন ও পিচ রাস্তার মধ্যে গর্তে ঢুকে যায়। দু’দিকের লাইনেই ট্রেন দেখা যাচ্ছে। রেলগেটও অর্ধেক অবস্থায় আটকে গিয়েছে। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে স্কুটি নিয়ে যাচ্ছিলেন মেমারির পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী। তিনি পরিস্থিতি দেখে স্কুটি রেলগেটের পাশে দাঁড় করিয়ে চালকের সঙ্গে টোটোকে গর্ত থেকে তুলতে হাত লাগান। কয়েক মিনিটের মধ্যে টোটোর চাকা গর্ত থেকে তাঁরা তুলে ফেলেন। টোটো লেভেল ক্রসিং পার করার পরেই রেলগেটও পড়ে। ট্রেন লেভেল ক্রসিং পার করতে পারে।
পুরপ্রধান বলেন, এটা আমার কর্তব্য। মানুষ আমাদের জনপ্রতিনিধি করেছে পরিষেবা দেওয়ার জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে এ কাজ করেছি। রেলের উদাসীনতার বিরুদ্ধে এই লড়াই আমাদের চলবে। কেন্দ্র যেখানে বুলেট ট্রেন চালাচ্ছে, সেখানে লেভেল ক্রসিংগুলোর অবস্থা বেহাল। পিচ বলতে কিছু নেই। ১০ ইঞ্চির বেশি গর্ত হয়ে গেছে যত্রতত্র। আমরা ঠিক করতে গেলেও রেল কাজ করতে দিচ্ছে না। আগামীকাল রেলকে এ বিষয়ে চিঠি দেব।
টোটো চালক সারু কর্মকারের দাবি, ওই অবস্থা দেখে কেউ এগিয়ে আসেনি। কিন্তু পুরপ্রধান আমার অসহায় অবস্থা দেখে স্কুটি রেখে এক প্রকার ছুটতে ছুটতে আমার কাছে আসেন। আমার সঙ্গেই টোটোকে গর্ত থেকে তুলতে হাত লাগান।
আরও পড়ুন ; 'পড়াশোনায় অমনযোগী' হওয়ায় বকুনি মায়ের, ছাত্রীর দেহ উদ্ধার বর্ধমানে