Nandigram : স্ত্রী-কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ১২ বছর পর নিজের বাড়ি ফিরলেন নন্দীগ্রামের 'ঘরছাড়া' বিজেপি কর্মী
Nandigram : বিজেপি কর্মী সোমনাথ ভৌমিকের অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েতের তৎকালীন উপপ্রধান সরোজ ভুঁইয়া ও তাঁর দলবলের অত্যাচারে ঘরছাড়া হতে হয় তাঁদের।
বিটন চক্রবর্তী ও শান্তনু নস্কর, নন্দীগ্রাম : নন্দীগ্রামে ১২ বছর পর বাড়ি ফিরলেন ঘরছাড়া এক বিজেপি কর্মী ও তাঁর পরিবার। রবিবার পুলিশি নিরাপত্তায় ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয় তাঁদের। আর এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরেও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
পুলিশি নিরাপত্তায় স্ত্রী কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ১২ বছর পর নিজের বাড়ি ফিরলেন ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী। ভিটেয় ফিরে দেখলেন যেন খণ্ডহরের চেহারা নিয়েছে গোটা বসতবাটি। নির্মীয়মাণ যে বাড়িকে ঘিরে এক সময় কত পরিকল্পনা ছিল, তা যেন সময়ের পলিতে মলিন হয়ে গিয়েছে। বিজেপি কর্মী তথা নন্দীগ্রামের বাসিন্দা সোমনাথ ভৌমিক বলেন, থাকার মতো অবস্থা তো নেই। সারিয়ে সুরিয়ে থাকতে হবে।
রবিবার এই ছবি দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের ভেকুটিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা সোমনাথ ভৌমিক। অভিযোগ, বিজেপি করার অপরাধে ঘরছাড়া করা হয়েছিল তাঁদের। সময়টা ছিল ২০১০ সালের এপ্রিল মাস। রাজ্যে ক্ষমতায় তখন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। সেই সময় ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল তৃণমূলের দখলে। বিজেপি কর্মী সোমনাথ ভৌমিকের অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েতের তৎকালীন উপপ্রধান সরোজ ভুঁইয়া ও তাঁর দলবলের অত্যাচারে ঘরছাড়া হতে হয় তাঁদের। নিজের বাড়ি ছেড়ে হলদিয়ার চৈতন্যপুরে ভাড়া বাড়িতে উঠতে বাধ্য হন তাঁরা। সম্প্রতি ঘরে ফেরার জন্য রাজ্যপাল, নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানান সোমনাথ ভৌমিক। পরিবারের দাবি, রাজভবনের তরফে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা হয়। হলদিয়ার এসডিপিও-ও তাঁদের বাড়ি ফেরাতে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সোমনাথ বলেন, বাবা বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিজেপি করার 'অপরাধে' আমাদের বাড়ি ছাড়া হতে হয়। ভেকুটিয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান ও দলবলের অত্যাচারে ভিটেছাড়া।
যাঁর বিরুদ্ধে ঘরছাড়া করার অভিযোগ, সেই সরোজ ভুঁইয়া গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এবিষয়ে জানতে তাঁকে ফোন করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি। অন্যদিকে, নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, তখন যারা মীরজাফরের কথায় এই সব কাজ করেছে, আজকে তারাই মীরজাফরের সঙ্গে দলবদল করে নিয়েছে। এই সব তাদের কাজ ছিল।
তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির বিজেপি সদস্য অভিজিৎ মাইতি বলেন, সিপিএমের অত্যাচার থেকে বাঁচতে মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আন্দোলন করেছিল। পরে দেখা যায় তৃণমূল সিপিএমের থেকেও বেশি অত্যাচারী। তাই সরোজ ভুঁইয়ারা বিজেপিতে। আমরা চাই, নন্দীগ্রামে সবাই এক সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করুক।
অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায় ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্ট নিয়োজিত কমিটির একটি প্রতিনিধি দল রবিবার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে।