Mamata Banerjee - PK : প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন? কী বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
Rift Between Mamata Banerjee, Prashant Kishor? ওয়েবসাইটের তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা কে আপলোড করল? কাদের জন্য এই বিভ্রান্তি তৈরি হল?
কলকাতা : প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সংস্থার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দলের গাঁটছড়া শেষের পথে। আইপ্যাকের ( I-PAC) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পথে এগোচ্ছে তৃণমূল। আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরভোটের প্রার্থীতালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি-ক্ষোভ-বিক্ষোভের আবহে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
১০৭টি পুরসভার ভোটের জন্য শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু, সূত্রের খবর, ওয়েবসাইটে যে তালিকা আপলোড করা হয়, তাতে দেখা যায়, দু’টি তালিকার মধ্যে বেশ কিছু অমিল রয়েছে। এরপরই জেলায় জেলায় শুরু হয় বিক্ষোভ। যার জেরে ফের বৈঠকে বসেন তৃণমূলের শীর্ষনেতারা। তারপর জানিয়ে দেওয়া হয়, সাংবাদিক বৈঠকে যে প্রার্থীতালিকা দেখানো হয়েছে, তা-ই চূড়ান্ত। কিন্তু, তাহলে ওয়েবসাইটের তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা কে আপলোড করল? কাদের জন্য এই বিভ্রান্তি তৈরি হল? আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অগোচরে তৃণমূলের অফিশিয়াল পেজে যেভাবে একটি প্রার্থী তালিকা বেরিয়ে গেল এবং দলকে সেই তালিকা আসল নয় বলে জানাতে হল, তার জন্য প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাকেই দায়ী বলে মনে করছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। জানা গিয়েছে, তৃণমূলনেত্রীও একই মত পোষণ করেন।
বিষয়টি এত দূর গড়িয়েছে যে ক’দিন আগে প্রশান্ত কিশোর টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান, তৃণমূলের সঙ্গে বাংলা, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে তাঁরা আর কাজ করতে চান না। সূত্রের খবর, তৃণমূলনেত্রী এই বার্তাকে কার্যত হুঁশিয়ারি বলে মনে করেন। তৎক্ষণাৎ প্রশান্ত কিশোরকে জবাব দেন ‘থ্যাঙ্ক ইউ।’ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা রবিবার বলেন, পরামর্শদাতা সংস্থার সঙ্গে আদৌ কী চুক্তি হয়েছে, তা দেখতে হবে। কোনও চুক্তি হয়ে থাকলে তা অবিলম্বে বাতিল করার জন্য যা দরকার, করা হবে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের পর প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল তৃণমূল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে এসেছিলেন পিকে।
এখন পুরভোটের প্রার্থী নিয়ে বিভ্রান্তি এবং বিক্ষোভের আবহে, আইপ্যাক-তৃণমূলের বিচ্ছেদের জল্পনা নিয়ে, আক্রমণ শানাতে দেরি করেনি বিরোধীরা। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান এবং এরাজ্যের সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য আনন্দবাজারের প্রতিবেদনের ছবি ট্যুইট করে লিখেছেন, বাংলা-সহ যেসব রাজ্যে আইপ্যাক তৃণমূলকে সাহায্য করছিল, সেখানে এই সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে উদ্যোগ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলকে নতুন মোড়ক দিতে এবং দলের সম্প্রসারণে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত উদ্যোগ ছিল আইপ্যাক। এটা ভাইপোর ডানা ছাঁটতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরেকটা পদক্ষেপ। দ্বন্দ্ব বাড়ছে।
প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার সঙ্গে কি তৃণমূলের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এটা ইন্টারনাল ব্যাপার। যদিও, তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ নাম না করে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। মদন মিত্রের দাবি, ' পার্টির ভিতরে এজেন্সি ঢুকে দলকে দুর্বল করছে। অভিষেক ও মমতার ফাঁকের সুযোগ পেয়ে গলে গিয়ে নাম খাইয়ে দিচ্ছে। পার্টির ভিতরে এজেন্সি ঢুকে মিসগাইড করা হচ্ছে'
সব মিলিয়ে, পুরভোটের আগে তৃণমূল ও প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।