Sand Smuggling: সাইকেল মিস্ত্রির বাড়ি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল ইডি! কে এই জহিরুল?
West Bengal News: শিরোনামে শেখ জহিরুল আলির নাম। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে সুবর্ণরেখা নদীর পাশেই প্রাসাদোপম বাড়ি শেখ জহিরুল আলির।

কলকাতা: ছিলেন সামান্য সাইকেল মিস্ত্রি। এখন তিনিই লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক!
শেখ জহিরুল আলি। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দার নাম আচমকাই রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেছে। ঝাড়গ্রামে তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)।
"টাকা বালি, বালি টাকা।" অনেকে বলছেন, এটাই নাকি এ রাজ্যে দুর্নীতির নতুন ক্যাচলাইন। আর এই নিয়েই আজ একসঙ্গে একটা-দুটো নয়, বাইশ জায়গায় তল্লাশি চালাল কেন্দ্রীয় এজেন্সি ED।
বেহালায় GD মাইনিংয়ের অফিস, রিজেন্ট কলোনিতে বিমা এজেন্টের বাড়ি, কসবায় সৌরভ রায়ের বাড়ি, সল্ট লেকে GD মাইনিংয়ের অফিস, GD মাইনিংয়ের কর্তার বাড়ি, কল্যাণীতে GD মাইনিংয়ের কর্তার বাড়ি, ঝাড়গ্রামে GD মাইনিংয়ের কর্মীদের বাড়ি, GD মাইনিংয়ের চালকের বাড়ি, সৌরভ রায়ের খাদান, মেদিনীপুরে বালি ব্যবসায়ীর বাড়ি, খেজুরিতে পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি - বালি পাচারের তদন্তে একসঙ্গে ২২ জায়গায় তল্লাশি চালাল ইডি! কোথায় গিয়েছে বেআইনি টাকা? কার কার পকেটে গিয়েছে? কালো টাকা কীভাবে সাদা হয়েছে? এই সব প্রশ্নেরর উত্তর খুঁজতেই সোমবার কাকভোর থেকে, রাজ্যজুড়ে অভিযান চালাল কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি! সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী!
তার মাঝেই শিরোনামে শেখ জহিরুল আলির নাম। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে সুবর্ণরেখা নদীর পাশেই প্রাসাদোপম বাড়ি শেখ জহিরুল আলির। তাঁর বালির ব্যবসা রয়েছে। এলাকাতেও বেশ প্রতিপত্তি তাঁর।
একটা সময় সাইকেল মিস্ত্রি ছিলেন জহিরুল। এরপর ভিলেজ পুলিশ হিসাবে কাজ করেছেন। সেখান থেকে রাতারাতি চাকরি ছেড়ে বালি তোলা ও সরবরাহের ব্যবসায় নামেন। এরপরই ফুলেফেঁপে ওঠে জহিরুলের সম্পত্তি। গোপীবল্লভপুরে যেখানে জহিরুলের বাড়ি, যেখানে অধিকাংশ বাড়িই একচালার। তার মাঝেই বিশাল তিনতলা বাড়ি জহিরুলের। চারপাশে সিসিটিভিতে মোড়া। কীভাবে মাত্র কয়েক বছরেই জহিরুলের এত বড় বাড়ি, গাড়ি হল? রকেটের গতিতে উত্থানের নেপথ্যে কী? সদুত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে পুর নিয়োগ এবং কয়লা পাচারের তদন্তের পর, এবার রাজ্যে বালি পাচারের তদন্তেও নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। রাজ্য পুলিশের করা FIR-এর ভিত্তিতে ECIR দায়ের করে বেহালায় GD মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস থেকে শুরু করে, রিজেন্ট কলোনিতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার এজেন্টের বাড়ি, GD মাইনিং-এর সল্টলেকের দফতরের পাশাপাশি, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, খেজুরি, নদিয়ার কল্যাণী-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঝোড়ো অভিযান চালাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ED সূত্রে দাবি, বৈধ বালি খাদান থেকে বেআইনিভাবে বালি পাচার হয়েছে।
বালি খাদান লিজ নিয়ে সেখান থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকে বেশি বালি তুলে চড়া দামে বিক্রি করা হতো। ভুয়ো চালান বানিয়ে ও তা দিয়ে বৈধ নথি তৈরি করে পাচার করা হত বালি। এভাবে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব লুঠ করা হয়েছে হয়েছে বলে ED-র অনুমান।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘সব টাকা ভাইপোর কাছে পৌঁছাচ্ছে এবং SP-রা সব টাকা তোলার দায়িত্বে আছেন। IC-রা সব কাজ ছেড়ে এই বালির কাজ করছে।’
সোমবার ভোরে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে, বেহালার জেমস লং সরণিতে পৌঁছয় ED। এই কোম্পানি পূর্ব পশ্চিম বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জায়গায় খাদান রয়েছে। সেগুলো বৈধভাবে হয় বলে দাবি করলেও সেটাই সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। এখানে GD মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেডের রেজিস্টার্ড অফিস। কিন্তু, তল্লাশিতে এসে ধাক্কা খান ED-র আধিকারিকরা। গোটা এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও, সংস্থার অফিসে বিদ্যুৎ না থাকায় দুপুর গড়িয়ে গেলেও তল্লাশি শুরু করা যায়নি। শেষমেশ বিকেলে বিদ্যুৎ সংযোগ আসার পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা ভিতরে ঢোকেন। রিজেন্ট কলোনির বাসিন্দা, রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার এজেন্ট সঞ্জীব বয়েডের বাড়িতেও হানা দেয় ED। বালি পাচারের কালো টাকা কি বিমাতে লাগানো হয়েছে? উঠছে সেই প্রশ্নও!






















