SIR : 'ধন্যবাদ SIR', ২৬ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজে পেলেন বৃদ্ধ দম্পতি
SIR-এর সৌজন্যে মুখে হাসি ফুটল হাবড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত দত্ত ও তাঁর স্ত্রী সান্ত্বনা দত্তর।

সমীরণ পাল, কলকাতা : ২৬ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজে পেলেন বৃদ্ধ দম্পতি। SIR-এর সৌজন্যে মুখে হাসি ফুটল হাবড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত দত্ত ও তাঁর স্ত্রী সান্ত্বনা দত্তর।
১৯৯৯ সালে তাঁদের ছেলে তরুণ দত্ত ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এরপর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। SIR-এর পর্ব শুরু হতেই প্রশান্তবাবু তাঁর নিজের এবং স্ত্রী ও ছেলের ফর্ম পূরণ করে স্থানীয় বিএলওর কাছে জমা দেন। এরপরই ভোটার কার্ড ম্যাপিং করতে গিয়ে হাবড়া ২৫৯ পার্টের বিএলও দেখেন। তরুণের নাম পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানায় রয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, তরুণ ওই এলাকার ভোটার। এরপরই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। ২৬ বছর পর সন্তানের খোঁজ মেলায় খুশি বৃদ্ধ দম্পতি।
কেনই বা চলে গিয়েছিলেন ছেলে? কেনই বা এতদিন মা-বাবার কাছে, ফিরে আসেননি? হারিয়ে যাওয়া ছেলে তরুণ দত্ত জানান, ধান-চালের ব্য়বসা করতেন। অনেক টাকা ঋণ হয়ে যায়। সেই কারণেই বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। বাবা নাকি বকাবকিও করেন। তারপরই অভিমানে বাড়ি ছাড়েন তিনি। তরুণ জানান, তিনি প্রথম দিল্লি যান। সেখানে ৮-১০ বছর ছিলেন। তারপর পিংলায় এসে স্থায়ীভাবে জায়গা কিনে ঘরদোর করে বসবাস শুরু করেন।
তরুণ আরও জানান, এরপর SIR শুরু হয়। ২০০২ সালে তাঁর নাম ছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে একই বিধানসভা এলাকায়। ওখানে নাম এখানে নাম তুলতে গেলে ওখানকার ২০০২ এর লিস্টে নাম দিতে হবে। ওদিকে বাবা প্রশান্ত দত্ত জানালেন, 'আমরা ভেবেছিলাম নানা রকম। হয়তো সে বেঁচে নেই। নানারকম ভাবনা আমাদের মনে আসত। ওর যে আই কার্ড সেটা আমরা নষ্ট করিনি। জমাও দিইনি। আমাদের কাছে আমরা রেখে দিয়েছিলাম। ইদানিং BLO-এসে আমাদের তিনটে ফর্ম দিয়ে যায়।' এরপর BLO র মাধ্যমেই জানতে পারেন, পশ্চিম মেদিনীপুর পিংলা থানায় ছেলের নাম পাওয়া যাচ্ছে।
এমন ঘটনায় আনন্দ ধরে রাখতে পারছেন না তরুণ দত্তর মা। বললেন, 'লটারি পাওয়ার মতো অবস্থা। খুবই ভাল হয়েছে। একমাত্র ছেলে। যাইহোক খুঁজে পেলাম... ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে।'
কিন্তু কীভাবে ঘটল এমন ঘটনা? হাবড়ার BLO তপন ধর জানালেন, বয়স্ক ভদ্রলোক তাঁকে ফর্ম জমা দিয়েছিলেন। তাঁরই ছেলে ছেলে তরুণ দত্ত। ফর্ম জমা দেওয়ার পর যখন তিনি ডিজিটাইস করছিলেন, তখনই দেখেন কোনও একজন BLO ওই নামটিকে ম্য়াপিং করে দিয়েছেন। এরপর তিনিই ওই বিএলও-র থেকে ছবি চেয়ে পাঠান। সেই সূত্রেই পুরো বিষয়টা সামনে আসে।






















