Arabul Islam: নিজের ঘর খুইয়ে রাস্তায়, খোলা আকাশের নীচে বসে পরিষেবা আরাবুলের
South 24 Parganas: তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েও, সেই আরাবুল ইসলামকে বসতে হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে টেবিল-চেয়ার পেতে।
রঞ্জিত হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: খোলা আকাশের নীচে বসে পরিষেবা দিচ্ছেন ভাঙড়ের এককালের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা, আরাবুল ইসলাম। জেল থেকে ফিরে আসার পর পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে নিজের ঘর খুইয়েছেন তিনি। এনিয়ে তৃণমূলের কর্মাধ্য়ক্ষকেই তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন আরাবুল। এদিকে আরাবুলকে নাটকবাজ বলে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষও। তৃণমূলের এই কোন্দল নিয়ে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
এককালে তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। ভাঙড়ে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। এখন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েও, সেই আরাবুল ইসলামকে বসতে হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে টেবিল-চেয়ার পেতে। জেল থেকে মুক্তির পর, নিজের অফিসে আসতে পারলেও, এখনও ঘরে ঢুকতে পারেননি ভাঙ়ড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। তৃণমূলেরই আরেক কর্মাধ্য়ক্ষের বিরুদ্ধে কার্যত বিষোদগার করেছেন তিনি। তৃণমূল নেতা ও ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলাম বলেন, "একজন অযোগ্য়, অপদার্থ একজন কর্মাধ্য়ক্ষ আমার ঘরে বসে আছে। যে জমি কেলেঙ্কারিতে, একাধিক কেলেঙ্কারি আছে তার নামে। জোর করে জমি লিখে নেওয়া থেকে শুরু করে, প্রোমোটার থেকে শুরু করে, কোম্পানির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করে, আজকে হার্মাদের হাতে তুলে দিচ্ছে, আর ভাঙড়ের মানুষ শোষণ হচ্ছে।''
ভাঙড়ে ISF কর্মীর খুনের মামলায় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন আরাবুল ইসলাম। প্রায় ৭ মাস পর, গত ৩ জুলাই জেল থেকে মুক্তি পান তিনি। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এতদিন ভাঙড় ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে ঢুকতে পারেননি সভাপতি আরাবুল ইসলাম। ২৯ নভেম্বর, আদালত নির্দেশ দেয়, সপ্তাহে ২ দিন পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে যেতে পারবেন আরাবুল। কিনতু, দোসরা ডিসেম্বর, নিজের অফিসে ঢুকতে গিয়েই ধাক্কা খান আরাবুল। পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে তাঁর নেমপ্লেট সরিয়ে সেই ঘরে বসছেন তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভানেত্রী সোনালি বাছার ও বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ খায়রুল ইসলাম। আরাবুলকে দেখেও ঘর ছাড়েননি তাঁরা। বৃহস্পতিবার দেখা গেল, নিজের ঘর না পেয়ে, খোলা আকাশের নীচে চেয়ার-টেবিল পেতে বসে, পরিষেবা দিচ্ছেন ভাঙড় ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলাম।
এদিন আরাবুল বলেন, "যে হার্মাদ ক্য়ানিং থেকে এসে এখানে লুটে খাওয়ার চেষ্টা করছে, যে হার্মাদ আজকে দলের নাম করে দলকে হেয় করার চেষ্টা করছে, আজকে সেই হার্মাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ। এখানে বহু মানুষ সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। সেই কারণে BDO অফিসে আমি BDO সাহেবের ঘরেই বসতাম। ২-৩ দিন বসেছি। সেখানে BDO সাহেবের কাজ করতে গেলে অসুবিধা হয়।''
এবিষয়ে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতি বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ খায়রুল ইসলাম বলেন, "এটা কারও বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। এটা পঞ্চায়েত সমিতির ঘর। পঞ্চায়েত সমিতির সব সদস্য় সব কর্মাধ্য়ক্ষ বসে সিদ্ধান্ত নেয়, কে কোন ঘরে বসবে। সেটা ওঁর জানা দরকার। ৩ তলায় একটা দারুণ ঘর দিয়েছে। ঘর দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যাবে। এরকম ঘর আমরাও পাইনি। সেই ঘর ওঁর জন্য় বরাদ্দ করা হয়েছে। উনি ওখানে নিচ্ছেন না। উনি খুনি, তোলাবাজ আমরা জানতাম। কিন্তু আজকে দেখছি ওঁর মতো নাটকবাজ, ভাঙড়ে নয়, সারা পৃথিবীতে দেখা নেই। ফিল্ম জগতে নেমে যেতে পারে। দুটো পয়সা রোজগার হবে। উনি তো তোলাবাজ।''
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Bangladesh: আইনের শাসন থেকে শান্তি ফেরানোর দাবি, এবার এপার বাংলায় রাস্তায় আইনজীবীরা