SSC Case: বাগ-রিপোর্টে 'দুর্নীতি', চাকরি বাতিলে দায় কাদের ? 'যোগ্য়-অযোগ্য় আলাদা করতে পারতেন মুখ্য়মন্ত্রীই'
BJP On SSC Case Bag Committee Report:' যোগ্য়-অযোগ্য় আলাদা করতে পারতেন মুখ্য়মন্ত্রীই', কী বলছেন বিজেপি রাজ্য়সভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য ?

উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা: SSC ২০১৬-র প্যানেল বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়, অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে, বাগ কমিটির রিপোর্টের কথা। প্রায় তিন বছর আগে ২০২২-এর ১১ এপ্রিল, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন অনুসন্ধান কমিটি। যাদের রিপোর্টে ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছিল, শিক্ষা নিয়ে কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে এ রাজ্য়ে।
বিজেপি রাজ্য়সভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, স্বচ্ছ-অস্বচ্ছ, যোগ্য়-অযোগ্য়, চাল আর কাঁকড় এটাকে আলাদা করতে পারত মুখ্য়মন্ত্রীই, তৃণমূল কংগ্রেস, পর্ষদ, তাঁর সরকার। কিন্তু তাঁরা সেটা করেননি কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত লোককে বাঁচানোর জন্য়। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই দূষিত হয়ে গেছে এবং এমনভাবে দূষিত ও কলুষিত হয়ে গেছে যে, সংশোধনের রাস্তা নেই। ২০১৬-র SSC-র পুরো প্য়ানেল বাতিল করতে গিয়ে, এমনই মন্তব্য় করেছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
অযোগ্যদের জন্য চাকরি হারাতে হয়েছে হাজার হাজার যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের।কিন্তু, ঠিক কীভাবে হয়েছিল সেই প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি? এই ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে বাগ কমিটির রিপোর্টের কথা। যেখানে ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছিল, শিক্ষা নিয়ে কীভাবে দুর্নীতি করা হয়েছে। ২০২২-এর ১১ এপ্রিল, SSC-র গ্রুপ D নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করেছিল অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন অনুসন্ধান কমিটি।
যা বাগ কমিটির রিপোর্ট নামে পরিচিত। প্রায় দেড় হাজার পাতার সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, বাগ কমিটির সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল,দুর্নীতিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমতিতে যুগ্মসচিব যে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল তা বেআইনি। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছিল,৬০৯টি ভুয়ো সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল।
সেই সুপারিশপত্রের হিসেব রাখার জন্য আলাদা রেজিস্টার ছিল।SSC’র চেয়ারম্যানকে অন্ধকারে রেখেই সেই সুপারিশপত্র দেওয়া হত।বাগ কমিটির দেড় হাজার পাতার চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট এসেছিল এবিপি আনন্দর হাতেও। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, অনুসন্ধান কমিটির সামনে পেশ হওয়া নথিতে দেখা যায়, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে এবং নতুন প্যানেল আপলোড হওয়ার আগে বেশ কিছু প্রার্থীর র্যাঙ্ক পরিবর্তন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের রায়ের কপিতেও উল্লেখ করা হয়েছে,স্ক্যান করা OMR শিটের মিরর কপি সংরক্ষণ করেনি SSC।SSC-র কম্পিউটার সফটওয়্যারে থাকা নম্বর এবং নয়ডায় পঙ্কজ বনসলের অফিস থেকে উদ্ধার করা তিনটি হার্ড ডিস্কে পাওয়া তথ্যের মধ্যে, উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি রয়েছে।
আর তিন বছর আগে হাইকোর্টে জমা দেওয়া রঞ্জিতকুমার বাগের অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্টে OMR শিট নিয়েও মারাত্মক তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। সেখানে দাবি করা হয়েছিল, প্রাথমিকভাবে উত্তরপত্র বা OMR শিট মূল্যায়নের জন্য NYSA কমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেডকে বরাত দেয় SSCপরে ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করে, এনডি ইনফোসিস্টেম সংস্থাকে আনা হয়। নিয়ম অনুযায়ী অন্য সংস্থাকে বরাত দিতে হলে, বোর্ড মিটিং করতে হয়। কিন্তু, এক্ষেত্রে SSC’র তরফে কোনও ধরনের বোর্ড মিটিং ছাড়াই অন্য সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়।
তৎকালীন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হার বয়ান থেকে জানা যায়, সংস্থা বদলের জন্য কোনও বোর্ড মিটিং হয়নি।দু’টি সংস্থাই অনুসন্ধান কমিটির কাছে জানায়, তারা কোনও পুনর্মূল্যায়নের কাজ করেনি।ফলে, পুনর্মূল্যায়ন ছাড়াই একাধিক প্রার্থীর নম্বর কী করে বাড়ল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের অনুসন্ধান কমিটি।এখন অযোগ্য়দের সঙ্গে যোগ্য়দেরও চাকরি বাতিল হয়ে গেল।কিন্তু এর দায় কাদের?





















