SSC Case: পরীক্ষার আগে ও পরে, দফায় দফায় ৬ লক্ষ টাকা কুন্তলকে, দাবি চাকরিপ্রার্থীর
Kuntal Ghosh: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল।
ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এবিপি আনন্দের অন্তর্তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্য়কর তথ্য়। দফায় দফায় ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষকে (Kuntal Ghosh)। কিন্তু চাকরি তো মেলেইনি, উল্টে একটা টাকাও ফেরত পাননি। ইডি-র হাতে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা (Trinamool Youth Congress) সম্পর্কে, এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বলাগড়ের বাসিন্দা পিয়ালি চৌধুরী।
বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বলাগড়ের বাসিন্দা পিয়ালি চৌধুরী
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (SSC Case) গ্রেফতার হয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল। তার পরই টাকা দেওয়ার বিষয়টি সামনে এনেছেন পিয়ালি। এতদিন কেন খোলসা করেননি! উত্তরে তিনি বলেন, "বেআইনিভাবে যদি ১০০ টাকা নেওয়ার কথাই স্বীকার করে থাকি, তাহলে তো সেদিনই আমাকে CBI গ্রেফতার করতে পারত।"
পিয়ালি জানিয়েছেন, তিনি ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। পরীক্ষার আগে এবং পরে কিছু কিছু করে টাকা দিয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন হাজার হাজার চাকরি প্রার্থী। তাতেই ক্রমশ মানসিক ভাবে বল পাচ্ছেন অনেকে। ভয় কাটিয়ে এগিয়ে আসছেন সামনে। তাঁদের মধ্যেই একজন পিয়ালি।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট। স্কুলে চাকরি দেওয়ার নামে তিনি প্রায় ১৯ কোটি টাকা নিয়েছেন বলে বিস্ফোরক দাবি করেছেন মানিক ভটাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল।
আরও পড়ুন: Bidyut Chakraborty: 'উনি নোবেল পাননি', জমি বিতর্কে অর্থনীতিবিদকে বেনজির আক্রমণ বিশ্বভারতীর উপাচার্যের, অমর্ত্য বললেন...
কিন্তু কী ভাবে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিলেন কুন্তল? চাকরি পেতে তাঁকে টাকা দিয়েছিলেন কারা? কুন্তল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই এই প্রশ্নগুলি উঠেছে বার বার। সেই আবহেই প্রথম বার সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন এমন একাধিক চাকরিপ্রার্থী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা, যাঁরা প্রকাশ্যে দাবি করলেন, কুন্তল ঘোষকে টাকা দেওয়ার কথা।
স্কুল নিয়োগ দুর্নীতিতে এবিপি আনন্দ'র এক্লক্লুসিভ অর্ন্ততদন্তে এমনই তথ্য সামনে এল। পিয়ালি বাংলায় স্নাতকোত্তর পাস করেন। নিজেকে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ বলে দাবি করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, চাকরি পেতে তিনি তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তলকে ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি তো মেলেইনি, উল্টে এক টাকাও ফেরত পাননি বলে দাবি তাঁর।
এবিপি আনন্দের তরফে এ দিন পিয়ালিকে জিজ্ঞেস করা হয়, কোথায় টাকা দিতে যেতেন তিনি! জবাবে পিয়ালি জানান উত্তর কলকাতার অফিসে। বাড়িতেও দেওয়া হয়েছিল। কোথায় ঠিক জানেন না। তাঁর বাবা গিয়ে দিয়ে এসেছিলেন। পুরো ৬ লক্ষ টাকা।
পিয়ালির চাকরির জন্য তাঁর মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে ৬ লক্ষ টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। এর পর বার বার কুন্তলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন পিয়ালি। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। টাকা ফেরত চেয়ে একাধিকবার তৃণমূলের যুব নেতাকে মেসেজও পাঠিয়েছেন চাকরিপ্রার্থী, কিন্তু তারও উত্তর আসেনি বলে জানিয়েছেন পিয়ালি।
পিয়ালির চাকরির জন্য তাঁর মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে ৬ লক্ষ টাকা বেরিয়ে গিয়েছে
পিয়ালির মা জানিয়েছেন, বার বার টাকা ফেরত চেয়ে ফোন করেছেন তাঁর মেয়ে। কিন্তু কুন্তল টাকা ফেরত দেননি। পিয়ালির বিয়ে দেওয়ার টাকাও এখন জোগাড় করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু শুধুই কি পিয়ালি, এমন কত পিয়ালি প্রতারিত রয়েছেন? কত প্রতারক রয়েছেন? আড়ালে থাকা রাঘববোয়ালের সংখ্যাই বা কত? কোনও দিনও কি তাঁদের হদিশ মিলবে, উত্তর অধরা।