Sukanta Majumdar: 'ED-CBI দিয়ে গ্রেফতার করালেই হবে না, জেতার জন্য চাই সংগঠন', দলকে বার্তা সুকান্তর
West Bengal BJP: লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতার মুখে বার বার কেন্দ্রীয় এজেন্সি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা শোনা যেত।
আশাবুল হোসেন, সৌমিত্র রায়, কলকাতা: বিধানসভা, পঞ্চায়েত, লোকসভার পর উপনির্বাচনেও রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। এত হাঁকডাকের পরও কেন আশানুরূপ ফল হল না, কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে দলের অন্দরেই। সেই আবহেই এবার দলীয় বৈঠকে বার্তা দিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, "CBI-কে গ্রেফতার করে নিতে বলুন, আমরা জিতে যাব, সেটা আর হবে না।" (Sukanta Majumdar)
লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতার মুখে বার বার কেন্দ্রীয় এজেন্সি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা শোনা যেত। প্রায় নিত্য়দিনই CBI-ED নিয়ে হুঁশিয়ারি, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট করানোর আশ্বাস, পাশাপাশি তৃণমূলকে শায়েস্তা করার হুঙ্কার শোনা যেত। এর পরও লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় হার হয় দলের। সম্প্রতি উপনির্বাচনেও দখলে থাকা তিনটি বিধানসভা আসন হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে হুঙ্কার ছাড়া উচিত ছিল কি না, তা নিয়ে বিজেপি-র অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে। (West Bengal BJP)
এবার সুকান্ত নিজেও দলকে বার্তা দিলেন। তিনি সাফ বলেন, "ওপার থেকে দাদা CBI-কে বলুন একে অ্যারেস্ট করে নিতে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা জিতে যাব, হবে না। ওকে জেলে ঢুকিয়ে দিন দাদা, জিতে যাব, হবে না।" সুকান্ত আরও বলেন, "অনুব্রত মণ্ডল জেলে ছিল না, এখন আছে কি না জেলে? কিন্তু বীরভূমে কি জিতেছি আমরা? কঠোর পরিশ্রম করে সংগঠন যদি তৈরি করতে পারেন, তাহলে জিতবেন। পরিশ্রম করে সংগঠন তৈরি করতে যদি না পারেন, যে যাকে ইচ্ছে অ্যারেস্ট করুক, কোনও দিন জিততে পারবেন না।"
আরও পড়ুন: Sovan Chatterjee: তৃণমূলে ফিরতে পারেন শোভন? জল্পনার মধ্য়েই প্রকাশ্য়ে দলের মতানৈক্য়
সুকান্তর এই মন্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। ED-CBI নিয়ে দলের অন্দরেই কাউকে কি বিশেষ বার্তা দিলেন তিনি? উঠছে প্রশ্ন। তবে সুকান্ত কারও নাম নেননি। তবে সুকান্ত যখন কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসায় না থেকে সংগঠনের উপর জোর দিতে বার্তা দিয়েছেন, সেই আবহে দলের অন্দর থেকে আরও একটি দাবি উঠতে শুরু করেছে। উপনির্বাচনে হারের পর অর্জুন সিংহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। রাজভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চলাকালীনই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার ঘুষ নিয়ে ভোট করিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন অর্জুন।
অর্জুনের বক্তব্য, "কেন্দ্রীয় বাহিনীর যে নোডাল অফিসার এই বিনীত গোয়েলের সঙ্গে বসে লালবাজার থেকে টাকা নিয়ে ভোট করিয়েছেন। এখন কার সিইও...আমার কাছে ওয়েবকাস্টিং এল, আমি দেখালাম যে চার জন ঘুরে ঘুরে ভোট দিচ্ছে, বলছে না তো! তা তো দেখছি না!"অর্জুনের এই দাবি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিধানসভায় ২০০ পারের ডাক দিয়ে ৭৭-এ থেমে যাওয়া, কলকাতা তথা জেলার পৌরসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া, লোকসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা উপনির্বাচনেও হার জোটে। নিজেদের খামতি, ব্যর্থতা খতিয়ে না দেখে, অন্যকে দোষারোপ করার নীতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই আবহে সুকান্তর এই মন্তব্য ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।