Tangra News: নলি কেটে খুন করল কে? হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই ভাই, 'সুস্থ হলেই গ্রেফতার..', ট্য়াংরাকাণ্ডে বড় সিদ্ধান্ত পুলিশের !
Tangra Murder Case: ট্য়াংরাকাণ্ডে বড় সিদ্ধান্ত পুলিশের !

কলকাতা: আত্মহত্য়া নয়, খুন, ট্য়াংরাকাণ্ডে নিহত ৩ মহিলার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এটা কার্যত স্পষ্ট। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই ভাই, সুস্থ হলেই গ্রেফতার, সিদ্ধান্ত পুলিশের। ২ ভাইকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে পুলিশ প্রহরায়। ট্যাংরাকাণ্ডে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হবে ২ ভাইকে, পুলিশ সূত্রে খবর। হাসপাতালে এখন পুলিশি পাহারায় রয়েছেন ২ ভাই।
খুনি কে? বাড়ির দুই বউ সুদেষ্ণা দে এবং রোমি দে-র হাতের শিরা এবং নলি কেটে খুন করল কে? খুনি কি তাঁদের স্বামীদের মধ্য়েই কেউ? প্রণয় এবং প্রসূন, এই দুই ভাইয়ের মধ্য়ে কেউই মহিলাদের খুন করে? 'এই ঘটনার এক সপ্তাহ আগেই, গোটা পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাড়ির বড়রা'। পুলিশ সূত্রে দাবি, হাসপাতালে ভর্তি ২ ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কীভাবে নিজেদের শেষ করবেন, তা নিয়ে দফায় দফায় নিজেদের মধ্য়ে আলোচনাও করেন ২ ভাই এবং তাঁদের স্ত্রীরা, পুলিশ সূত্রে খবর। ১০ ফেব্রুয়ারি, প্রথমে ছোট ভাই প্রসূনকে আত্মহত্য়ার পরিকল্পনা জানায় দাদা প্রণয় দে । ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২ ভাই, স্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে। তারপর ঠিক করে, ঋণের ভার থেকে মুক্তি পেতে, মৃত্য়ু ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। দুই ভাইয়ের দাবি অনুযায়ী, স্ত্রীরা আত্মহত্য়ার সিদ্ধান্তে সম্মতি দেন, পুলিশ সূত্রে দাবি। তবে সেই সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি বাড়ির ২ ছোট ছেলে-মেয়েকে।
পুলিশ সূত্রে খবর,'১৭ তারিখ, সোমবার পরিবারের ৬ সদস্য় একসঙ্গে ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়ে আত্মহত্য়া করবে বলে ঠিক করে। ওষুধগুলো বের করে রাংতাগুলোকে নষ্ট করে দেওয়া হয়, যাতে কেউ টের না পায়, কাগজে রাখা হয় মেডিসিন। কিন্তু পায়েসে ওষুধের গন্ধ থাকায় তা খেতে চায়নি প্রণয় ও প্রসূনের সন্তান, দুই ভাই-বোন। কিন্তু বাড়ির বড়রা তখন সবাইকে শেষ করে দিতে মরিয়া। তাই পায়েসে মেশানো হয় তুলসি পাতা ও নিমপাতা। আহত প্রণয় ও প্রসূন জানিয়েছেন, সেই পায়েস বাড়ির সবাই খায়। এরপর রাতে, একটি ঘরে প্রণয়, তাঁর স্ত্রী ও নাবালক ছেলে ঘুমিয়ে পড়ে।আরেকটি ঘরে ঘুমোতে যান প্রসূন ও তাঁর স্ত্রী রোমি। তাঁদের মেয়ে প্রিয়ম্বদা ঘুমোয় আরেকটি ঘরে।
ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়েও, ১৮ তারিখ, মঙ্গলবার সকালে ঘুম ভেঙে যায় বড় ভাই প্রণয়ের। প্রণয় শৌচাগারের দিকে যেতে গিয়ে দেখেন, জেগে রয়েছেন ছোট ভাই। তিনি জানান, তাঁর মেয়ের মৃত্য়ু হয়েছে, স্ত্রী রোমি ঘুমে অচেতন, তাঁর মৃত্য়ু হয়নি। একই অবস্থা ছিল প্রণয়ের স্ত্রী সুদেষ্ণা ও তাঁদের ছেলের, তাঁরা ঘুমে অচেতন ছিলেন। এরপর ২ ভাই মিলে ঠিক করে, স্ত্রীদের দু'হাতের শিরা ও নলি কেটে দেবে, পুলিশ সূত্রে দাবি। তারপর মৃত্য়ু নিশ্চিত করতে, শ্বাসরোধ করা হয়, প্রসূন ও রোমির মেয়ে প্রিয়ম্বদার। সেই কারণেই তাঁর ঠোঁটের ওপর কালশিটের দাগ। এরপর ২ ভাই, নাবালক কিশোরকেও একইভাবে হাতের শিরা কেটে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সেই সময়ই ঘুম ভেঙে যায় কিশোরের। তখন নীচে এইসমস্ত কিছু ফেলে ২ ভাই ও নাবালক পুত্র চলে যায় বাড়ির তিনতলায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ঘরের সব আলো, মোবাইল ফোন।
তবে, পুলিশ সূত্রে খবর, এক ভাই জানিয়েছেন ফোন বন্ধ করার আগে ১ পাওনাদার ফোন করেন, বাড়িতে আসবেন বলে জানান কিন্তু দে ব্রাদার্সকে জানিয়ে দেন, তাঁদের কাছে খবর আছে, বাড়িতে রেড হবে, তাই আসতে বারণ করা হয়। এরপরই অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা বাড়ি, যেমনটা জানিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। দে ব্রাদার্স চায়নি, মৃত্য়ু হোক তাঁদের পরিবারের একমাত্র পুত্রসন্তানের, পুলিশ সূত্রে খবর
নাবালককে কোনও একটি হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে, দুই ভাই আত্মহত্য়া করবেন বলে ঠিক করেন। কিন্তু তা মেনে নেয়নি কিশোর, পুলিশ সূত্রে খবর। বাবা ও কাকাকে ছেড়ে যেতে চায়নি কিশোর।
পুলিশ সূত্রে খবর, আহতরা জানিয়েছেন, এরপরই ৩ জনেই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মহত্য়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে ঠিক হয়, উলুবেড়িয়ার কাছে একটি লরির পিছনে ধাক্কা মারবেন। কিন্তু, লরি চালক ফেঁসে যেতে পারে, সেই কথা ভেবে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি, পুলিশ সূত্রে খবর। বাড়ির তিনতলায়, একটি কর্নারে একটি রক্তমাখা পোশাক পাওয়া গেছে, তার পাশেই পড়েছিল ছুরি, পুলিশ সূত্রে খবর। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, খুনের পর, আততায়ী কি এখানেই পোশাক বদল করেছিলেন? একটি মাত্র পোশাক, তবে কি খুনি একজনই? নাকি একাধিক? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
আরও পড়ুন, মালদার দুলাল সরকারের মত 'খুন' হতে হবে ? এবার TMC নেতা কৃষ্ণেন্দুকে হুমকি ফোন, ' টাকা না দিলে..' !
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
