TMC 21 July Rally: ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে এবার বড় চমক, কাল মঞ্চে মমতার পাশে থাকবেন 'UP কা লড়কা'
Akhilesh Yadav: রবিবার তৃণমূলের একুশে জুলাই সমাবেশ।
কলকাতা: রাত পোহালেই কলকাতায় তৃণমূলের ২১ জুলাই সমাবেশ। আর সেখানে এবার থাকছে বড় চমক। কারণ জাতীয় স্তরে তৃণমূলের শরিক, I.N.D.I.A জোটের সঙ্গী, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও কাল তৃণমূলের ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন। শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর জানালেন জোড়াফুল শিবিরের নেতা কুণাল ঘোষ। (TMC 21 July Rally)
রবিবার তৃণমূলের একুশে জুলাই সমাবেশ। সেই উপলক্ষে কলকাতার ধর্মতলায় জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। সেই আবহেই অখিলেশের আগমনের কথা জানালেন কুণাল। তিনি জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে থাকার জন্য অখিলেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে কাল ধর্মতলার সমাবেশে হাজির থাকতে চলেছেন অখিলেশ। (Akhilesh Yadav)
তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অখিলেশের এই উপস্থিতি জাতীয় রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী শিবিরে মতানৈক্যের খবরে যখন সরগরম চারিদিক, সেই সময়ও মমতা এবং অখিলেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া চোখে পড়ে। কংগ্রেসের হাতে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব তুলে দেওয়ার পরিবর্তে রাজ্যগুলিতে যে যেখানে শক্তিশালী, তাঁদের বেশি গুরুত্ব দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। তাঁর সেই দাবিতে সমর্থন জানান অখিলেশও। এমনকি I.N.D.I.A জোটের বৈঠকে তৃণমূলের সঙ্গে প্রায় সব বিষয়েই একমত ছিল সমাজবাদী পার্টি। নির্বাচনের পর অখিলেশের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
.@MamataOfficial র আমন্ত্রণ। কাল 21/7 @AITCofficial র ধর্মতলা সমাবেশে আসছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 20, 2024
মমতার পাশে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অখিলেশের এই উপস্থিতি বিজেপি-র জন্য যেমন রাজনৈতিক বার্তাবহ, তেমনই I.N.D.I.A জোটের জন্যও এই সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। বিরোধী জোটে কংগ্রেসের আধিপত্যের বিরোধিতা করতে গিয়ে বার বার আঞ্চলিক দলগুলির মজবুত অস্তিত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মমতা এবং অখিলেশরা। এবারের লোকসভা নির্বাচনেও তা প্রমাণিত হয়েছে। ফলে মমতা এবং অখিলেশের রাজনৈতিক অবস্থান যে এক, তা বোঝানো যাবে কংগ্রেসকে।
তবে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অখিলেশের এই উপস্থিতিকে বামেরা কীভাবে নেবেন, সেই প্রশ্নও উঠছে। কারণ তৃণমূলের এই 'শহিদ দিবস' পালনের নেপথ্য কারণ বাংলার বাম জমানার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ১৯৯৩ সালে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দাবিতে বেরনো আন্দোলনই রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল, যাক অগ্রভাগে ছিলেন মমতা। জাতীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে বিজেপি বিরোধী শিবিরে তৃণমূলের শরিক বামেরাও। রাজ্যে যদিও মুখ দেখাদেখি নেই তাদের মধ্যে। তাই অখিলেশকে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে হাজির করে মমতা বামেদেরও বার্তা দিচ্ছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
Tomorrow comes another 21st July!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 20, 2024
21st July is a blood-soaked day in the history of Bengal. 13 lives were brutally taken away by the repressive regime of CPI( M) on this day in 1993. I lost 13 of my co-fighters on this day in my battle against repression. 21st July is therefore…
এদিন ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের আগে এদিন বার্তা দিতে গিয়ে সেই রক্তঝরা অধ্যায়ের কথা স্মরণও করিয়ে দেনন মমতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, '২১শে জুলাই বাংলার ইতিহাসে রক্তঝরা এক দিন। অত্যাচারী সিপিআইএম-এর নির্দেশে সেদিন চলে গিয়েছিল তরতাজা ১৩টি প্রাণ। হারিয়েছিলাম আমার ১৩ জন সহযোদ্ধাকে। তাই ২১শে জুলাই আমার কাছে, আমাদের কাছে একটা আবেগ। ২১শে জুলাই আজ বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অন্তরঙ্গ অংশ। প্রতি বছর এই ঐতিহাসিক দিনে শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায় আমরা বীর সেই শহিদদের তর্পণ করি, দেশ ও দশের জন্য আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকেই এই দিনে আমরা স্মরণ করি, নির্বাচনে আমাদের যে গণতান্ত্রিক জয় তাকে মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করি। ধর্মতলায় শহীদ স্মরণ তথা মা-মাটি-মানুষ দিবস অনুষ্ঠানে আমি বাংলার সকল মানুষকে আমন্ত্রণ জানাই। সবার সাগ্রহ উপস্থিতিতে এবারের সমাবেশও অন্যান্যবারের মতো সাফল্যমণ্ডিত হবে, এই বিশ্বাস আমি রাখি। ২১শে জুলাই অশ্রু সজল রক্তে লেখা নাম, শহীদ স্মরণে রইলো মোদের হাজার হাজার সেলাম। ' 'শহীদ স্মরণে রইলো মোদের হাজার হাজার সেলাম।”
আগামী কালকের সমাবেশের জন্য ইতিমধ্যেই জেলা থেকে কলকাতায় আসতে শুরু করেছেন তৃণমূল কর্মীরা। প্রত্য়েকবারের মতোই কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, নেতাজি ইন্ডোর, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রেনে, বাসে। চড়ে কলকাতায় আসতে শুরু করেছেন তৃণমূলের কর্মী, সমর্থকরা।