TMC Rift In Birbhum: বীরভূমে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, 'ভাইজান'-এর অনুষ্ঠানে গরহাজির চন্দ্রনাথ-আশিস
Birbhum News: বন মহোৎসবে হাজির হওয়া
ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতন: বীরভূমে ফের একবার প্রকাশ্যে এল তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বনমহোৎসবের সরকারি অনুষ্ঠানে গরহাজির থাকলেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক চন্দ্রনাথ সিনহা ও প্রধান অতিথি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে দায়িত্ব নিয়ে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করলেন জেলাসভাধতি কাজল শেখ। রাজ্যের মন্ত্রী ও বিধানসভার ডেপুটি মেয়র। যা দেখে কটাক্ষ করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির দাবি, ভাইজানকদিকে আর কোর কমিটির বাকি সদস্যরা একদিকে। যতদিন যাবে ততই তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দলের ঘটনা ক্রমশ প্রকাশ্য আসবে। চন্দ্রনাথ সিনহা ও আশিস বন্দ্যোপ্যায় কেন অনুপস্থিত ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কাজল শেখ।
সাত দিনব্যাপী বন মহোৎসবের সরকারি অনুষ্ঠানে গরহাজির থাকলেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। অনুপস্থিত থাকলেন প্রধান অতিথি আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবার বোলপুরের সেই অনুষ্ঠানে দেখা না গেলেও এই দিনই শান্তিনিকেতনের গোয়ালপাড়া এলাকায় একটি বেসরকারি স্কুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে।
এদিকে এই বিষয়ে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, "এটা তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। একদিকে ভাইজান অন্য দিকে কোর কমিটির বাকিরা। এ এখন চলবে।"
বোলপুরে থাকা সত্ত্বেও সেখানেই হওয়া বন মহোৎসবের মতো সরকারি অনুষ্ঠানে খোদ উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রিত মন্ত্রীর গরহাজির থাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সেই অনুষ্ঠানেই উপস্থিত জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ জানালেন, এটা মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান, মন্ত্রীর আসা উচিত ছিল বলেই তিনি মনে করেন। কাজলের এই মন্তব্যের পরে শাসকদলের অন্দরেও জল্পনা দানা বেঁধেছে। কেন গরহাজির, সে প্রশ্নে চন্দ্রনাথ বলেন, “সামনে একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সহ অন্য আরও অনুষ্ঠান ছিল। তাই ওখানে যেতে পারিনি।”
ডেপুটি স্পিকার আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা যা করি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে করি। আমার যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু টিআরডিএ -এর মিটিং পড়ে গিয়েছিল।"
চলতি বছরে বীরভূমে প্রায় ২০০ হেক্টর বনসৃজনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বন দফতর। সোমবার সরকারি ভাবে বন মহোৎসবের মূল অনুষ্ঠানটি রাখা হয়েছিল বোলপুরের কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েত সংলগ্ন মাঠে। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করার কথা ছিল মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের। আমন্ত্রণপত্রেও উদ্বোধক হিসেবে তাঁর নাম ছিল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী ও লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহের। চন্দ্রনাথের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন আশিস, অভিজিৎ ও শতাব্দী।
চন্দ্রনাথের পরিবর্তে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। সরকারি অনুষ্ঠানে উদ্বোধক থেকে শুরু করে প্রধান অতিথির অনুপস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনাও।
সভাধিপতি বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যজুড়ে এই বন মহোৎসব হচ্ছে। স্বভাবতই বন দফতর থেকে আমাদের জেলার মন্ত্রীকে উদ্বোধক ও ডেপুটি স্পিকারকে প্রধান অতিথি হিসেবে , জেলার মেন্টর অভিজিৎ সিংহ-কে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তাঁরা কেন আসেননি, সে ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে, তাঁদের আসা কিন্তু উচিত ছিল বলে আমি মনে করি।” কাজলের সংযোজন, অনুষ্ঠানটি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হচ্ছে। অন্যান্য জায়গায় এমন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বিধায়কেরা উপস্থিত থাকছেন। এই জেলাতেও যাঁরা দারিয়ে আছেন, তাঁদের শামিল হওয়া উচিত ছিল।
এই বিষয়ে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, "ভাইজান একদিকে আর কোর কমিটির বাকিরা এক দিকে। যত দিন যাবে তৃণমূলের কোন্দল তত সামনে আসবে। তৃণমূল টিকে আছে তোলাবাজি, কাটমানির উপরে। সংগঠন বলে কিছু নেই।
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "বন দফতরের মত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যাদের আমন্ত্রণ ছিল তাদের আসা উচিত ছিল। ধন্যবাদ জানাই জেলা সভাধিপতি-কে এই রকম গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের গুরুত্ব তিনি বুঝে হাজির হয়েছেন।"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।