Murshidabad: 'কয়েক জায়গায় বিরোধীরা থাকলে মহাভারত অশুদ্ধ হওয়ার কিছু নেই', হুমায়ুনের বক্তব্য ঘিরে তৃণমূলে দ্বন্দ্ব !
TMC : তৃণমূলের বিরোধী দল ভাঙানো নিয়ে, এবার তৃণমূলের অন্দরেই ক্ষোভের সুর !
আবির দত্ত, ভরতপুর : তৃণমূলের (TMC) 'দল ভাঙানো' নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই ক্ষোভের সুর ! এনিয়ে সরব হলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। এমনকী তাঁর সাফ কথা, কয়েকটা জায়গায় বিরোধীরা থাকলে তাতে মহাভারত অশুদ্ধ হওয়ার কিছু নেই। হুমায়ুনকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন রানিনগরের তৃণমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেন।
তৃণমূলের বিরোধী দল ভাঙানো নিয়ে, এবার তৃণমূলের অন্দরেই ক্ষোভের সুর ! শুধু তা-ই নয়, এনিয়ে সামনে চলে এল তৃণমূলের দুই বিধায়কের দ্বন্দ্ব ! জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি-বিরোধী জোট INDIA তৈরির পরও প্রথমে পুরুলিয়ার ঝালদা এবং তারপর মুর্শিদাবাদের রানিনগরে কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়েছে তৃণমূল।
ঝালদায় কংগ্রেস ভাঙিয়ে তাদের হাতে থাকা পুরসভা দখল করেছে তারা। আর রানিনগরে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের ঠিক আগের দিন কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির ২ সদস্যকে দলে নেয় তৃণমূল। তা নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য় করলেন তৃণমূলেরই বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি বললেন, "২৬টি ব্লকের মধ্যে যদি তিনটি বা চারটি ব্লক বিরোধীদের থাকে, তাতে মহাভারত অশুদ্ধ হওয়ার মতো কিছু নেই। ২০ শতাংশ যদি বিরোধী থাকে, তাদের দল ভাঙিয়ে, কাউকে কাজে লাগিয়ে, প্রশাসনের আধিকারিককে ব্যবহার করা...এই ধরনের করাটা আমি অন্তত সমর্থন করি না।"
পাল্টা জবাব দিয়েছেন রানিনগরের তৃণমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেন। তিনি বলেন, "ওঁর ও তো দলবদল কংগ্রেস থেকেই। একবার কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসেন, আবার বিজেপিতে যান, আবার কংগ্রেসে আসেন, আবার তৃণমূলে আসনে। এটা উনি বলতে পারবেন কেন দলবদল করেন।"
এই পরিস্থিতিতে রানিনগর নিয়ে প্রকাশ্য়ে দুই তৃণমূল বিধায়কের বাগযুদ্ধ। হুমায়ুন কবীর আরও বলছেন, "কোটি কোটি টাকার খেলা চলছে। একটা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে আমার পক্ষে আনার জন্য আমাকে ২৫ লক্ষ ৩০ লক্ষ টাকা বের করতে হবে ? কেন ? কীসের জন্য ? মানুষ যাঁর পক্ষে রায় দিয়েছেন তিনি থাকুক না। পাঁচ বছর চালাক না। এগুলো ঠিক হচ্ছে না। এতে আগামীদিনে মানুষ আমাদের আরও বেশি ভুল বুঝবেন।" এর জবাবও দিয়েছেন সৌমিক, "তাঁরা কিন্তু স্ব-ইচ্ছায় এসেছেন। কোনও রকম ভয় বা প্রলোভনে আসেননি। এনিয়ে বলার জেলার ও রাজ্যের নেতৃত্ব। তাঁদের নির্দেশে আমি রানিনগরে সংগঠনের কাজটা দেখছি।"
২৭ আসনবিশিষ্ট রানিনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম-কংগ্রেস জোট জিতেছিল ১৪টিতে। তৃণমূল জয়ী হয় ১৩টিতে।
এই পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের আগেই কংগ্রেস ভাঙায় তৃণমূল। এই প্রেক্ষাপটে পঞ্চায়েতের ফল নিয়েও রানিনগরের তৃণমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেনকে খোঁচা দিয়েছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন। তাঁর মন্তব্য, "ভোটের যা ফল হয়েছে তাতে রেকর্ড মার্জিনে তিনি জিতেছেন। তার পরে দুই বছরের কিছু সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। তাহলে সেখানে ফল কেন খারাপ হবে ? সেটা পর্যালোচনা করা উচিত। ব্যর্থতা আছে। " সৌমিকের পাল্টা জবাব, "রানিনগর নিয়ে ওঁকে অত ভাবতে হবে না। নিজের বিধানসভা এলাকায় সেভাবে ঢুকতেও পারেন না। নিজের এলাকা উনি দেখুন।"
তৃণমূলের দল ভাঙানো নিয়ে বিরোধীদের ক্ষোভ নতুন নয়। কিন্তু, এনিয়ে খোদ তৃণমূল বিধায়কের ক্ষোভ তাতে নতুন মাত্রা যোগ করল।