DA Agitation: 'অনেক চিৎকার করেছেন, এবার...', ডিএ আন্দোলন নিয়ে পরামর্শ মন্ত্রী মানসের
Manas Bhunia: ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করায় আক্রমণ করলেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে। এসেছে পাল্টা জবাবও।
কলকাতা: BDO অফিস থেকে BLRO অফিস, এগ্রিকালচার অফিস। বহু জায়গায় ঘিরে রেখেছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি। রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার নিশানায় বাম সমর্থিত সরকারি কর্মচারী সংগঠন। ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করায় আক্রমণ করলেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে। এসেছে পাল্টা জবাবও।
কী বললেন মন্ত্রী?
'অনেক চিৎকার করেছেন, এবার ১৫ দিন বাড়িতে বিশ্রাম করুন। মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মীদের পাশে, কিন্তু তাঁকে অহেতুক আক্রমণ করছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। লাল পতাকা, পদ্ম-পতাকা ছেড়ে এবার মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থেকে বাংলার উন্নতিতে সামিল হোন। শক্তিশালী নেতাদের নিয়ে যন্তরমন্তরে অবস্থান করুন, রাজ্যের পাওনা আদায় করে আনুন', ডিএ আন্দোলনকারীদের কটাক্ষ রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার।
তৃণমূল বিধায়ক ও জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, 'আমার সরকারি কর্মচারীরা, এখনও অনেক জায়গায় কো-অর্ডিনেশন কমিটি ঘিরে রেখেছে, বিশেষ করে BDO অফিস, BLRO অফিস, BLD অফিস, এগ্রিকালচার অফিস। আমি নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি তালিকা তৈরি করুন, কারা এরা? এরা মমতা ব্যানার্জির কর্মসূচিকে টেনে ধরার চেষ্টা করছে, ওই যে যৌথ মঞ্চ দেখুন আজকেও অবস্থানে বসেছে, ভাবা যায়।'
বকেয়া DA-সহ অন্যান্য দাবিতে, শুক্রবার নিজেদের আন্দোলন একেবারে নবান্নের কাছে নিয়ে গিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। আর পরের দিনই ওই মঞ্চ ও বাম সমর্থিত সরকারি কর্মচারী সংগঠন, কো অর্ডিনেশন কমিটিকে নিশানা করলেন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তাঁর তোপ, 'চার পার্সেন্ট ডিএ ডিক্লেয়ার হয়ে গেল, আগে ৩-৩ ছয় শতাংশ। পঞ্চম পে কমিশনের শেষ অবধি, ষষ্ঠ পে কমিশনের প্রথম অবধি ১২৫ শতাংশ লিঙ্ক করে দিয়েছে বেসিক পে-র সঙ্গে। এবার ১০। ১৩৫ হয়ে গেল। ২৭৭৮ কোটি টাকা আমরা দেব। আমি তাই যৌথ মঞ্চকে বলছি, একটু বিশ্রাম করুন বাড়িতে গিয়ে। মমতার পাশে দাঁড়ান।'
পাল্টা তোপ:
পাল্টা প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে, রাজ্য কো অর্ডিনেশন কমিটি। মন্ত্রীর বক্তব্যকে ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে মন্তব্য করা হয়েছে সেখানে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'উনি বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা হিসেব দিচ্ছেন, তাতে তো বকেয়া ৮২ শতাংশ হয়ে যাচ্ছে। আদতে বিষয়টি এই। আর উনি বলছেন বিজেপি-সিপিএম মিশে যাচ্ছে, হ্যাঁ ঠিকই বলেছে সব রং মিশে গেলে সাদাই হয়।'
শনিবার উত্তরবঙ্গের তিন জেলা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি মিলিয়ে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন মানস ভুঁইয়া। সেখানেই সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের পাশাপাশি, বিরোধী দলগুলিকেও নিশানা করেন তিনি। তাঁর তোপ, 'জলপাইগুড়ি শহরে এসে আমি ফেডারেশন, ঘরে গিয়ে আমি সিপিএম এর কমরেড! কোচবিহারে এসে আমি ফেডারেশন, আমি মাথাভাঙায় গিয়ে বিজেপি! আলিপুরদুয়ারে এসে আমি ফেডারেশন, জয়গাঁওতে গিয়ে আমি বিজেপি! চলবে না, চলবে না, চলবে না।'
মন্ত্রীকে পাল্টা জবাব সিপিএম, বিজেপির। সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'দেখুন মানস ভুঁইয়া বা ওই জাতীয় নেতারা, যাঁদের নীতি-আদর্শের প্রতি কোনও বিশ্বাস ভরসা নেই, যাঁদের নিজেদের যখন বেতন বাড়ে, তখন সেই বেতন নেওয়ার জন্য হাত কাঁপে না।' ৪ শতাংশ ডিএ দেওয়া নিয়ে তাঁর তোপ, 'মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের ব্যাপার না কি, যে তাঁর বয়াম থেকে লজেন্স বের করে দিলেন। এটা একটা তাঁর আইনি পাওনা। সরকারের প্রধান হিসেবে তাঁর তো হিসেব রাখা উচিত ছিল, যে DA দিতে হবে। সেসব না করে তিনি মেলা-খেলা-বিজ্ঞাপন।'
বকেয়া DA-সহ অন্যান্য দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলন, রবিবার ৩৩২ দিনে পড়েছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে তারা ডোর টু ডোর ক্যাম্পেন শুরু করবে। ১৯ জানুয়ারি কলকাতায় হবে মহামিছিল। হাওড়া, শিয়ালদা ও হাজরা মোড় থেকে তিনটে মিছিল এসে মিশবে শহিদ মিনারে। জানুয়ারির শেষে ধর্মঘট ডাকার পরিকল্পনা আছে তাদের।
আরও পড়ুন: 'বাংলায় সত্যিকারের সান্তা ক্লজের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়', কেন বললেন ফিরহাদ?