West Bengal Education : চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই কার্যকর হবে ৪ বছরের অনার্স কোর্স
West Bengal Education : ৩৪ বছর পর ২০২০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতিতে বদল আনে মোদি সরকার। প্রথম থেকেই যার বিরোধিতা করেছে রাজ্য সরকার।
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী , কলকাতা : মোদি সরকারের নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে সংঘাতে জড়িয়েছিল কেন্দ্র এবং রাজ্য। অবশেষে মোদি সরকারের শিক্ষানীতির কিছু অংশ মানল রাজ্য। বাংলায় কার্যকর হবে জাতীয় শিক্ষানীতি। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই কার্যকর হবে ৪ বছরের অনার্স কোর্স।
বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনেই সিদ্ধান্ত, জানাল রাজ্য। স্নাতকে ভর্তিতে কেন্দ্রীয় অনলাইন প্রক্রিয়া এবারও কি বিশ বাঁও জলে? আগের পদ্ধতিতেই স্নাতকে ভর্তির পথে শিক্ষা দফতর, খবর সূত্রের।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, 'স্নাতকস্তরে আমরা ৪ বছরের পঠনপাঠন চালু করতে চলেছি। স্নাতকস্তরে ভর্তি হতে চলেছে যে ৭ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী তাদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। রাজ্যের বাইরে পড়তে যাওয়ার প্রবণতা কমবে। বিভ্রান্তি যাতে না ছড়ায় সেজন্য আমরা এখনই কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির কথা বলছি না। কলেজগুলি আলাদা আলাদা ভাবে ভর্তির ব্যবস্থা করবে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের কাজ জরুরি ভিত্তিতে চলবে। আমরা চেষ্টা করব সম্ভব হলে এই ব্যবস্থাটিকে এবছরই যাতে চালু করতে পারি' জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
৩৪ বছর পর ২০২০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতিতে বদল আনে মোদি সরকার। প্রথম থেকেই যার বিরোধিতা করেছে রাজ্য সরকার। যেখানে প্রি-স্কুল থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সর্বস্তরেই খোলনলচে বদলে ফেলা হয়। তবে এই বিরাট রদবদল করা হয় এমন একটা সময়, যখন সংসদ বন্ধ ছিল। বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, শিক্ষা কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়। তাহলে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই শিক্ষানীতি ঘোষণা করে দেওয়া হল কেন? সংসদ খোলা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হল না কেন? মোদি সরকার অবশ্য নতুন শিক্ষানীতিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে দাবি করেছে। বিধানসভা ভোটের প্রচারে এবার সেই শিক্ষানীতিই মেনে নিল রাজ্য।
২০২০ সালে যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি আনা হয়, তাতে একগুচ্ছ পরিবর্তন ছিল। যেখানে বলা হয়-
১. ইউজিসি, এআইসিটিই- র মতো উচ্চশিক্ষার নিয়ামক সংস্থা তুলে একটিমাত্র নিয়ামক সংস্থা হবে।
২. স্নাতক স্তরের কোর্সের মেয়াদ হবে ৪ বছর।
৩. স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সের মেয়াদ হবে ১ অথবা ২ বছর।
৪. পাঁচ বছর ইন্টিগ্রেটেড পদ্ধতিতেও স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর করা যাবে।
৫. নতুন শিক্ষানীতিতে তুলে দেওয়া হয়েছে এম ফিল কোর্স।
৬. কলেজে স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর স্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির হাতে।
৭. কলেজগুলিকে প্রশাসনিক সহ অর্থনৈতিক স্বশাসন দেওয়া হচ্ছে।
৮. একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান, কলা বিভাগের তফাৎ থাকবে না।
৯. কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লেও তার সঙ্গে বাংলা, সঙ্গীতের মতো বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ থাকবে।
১০. নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ৮ টি সেমিস্টারের কথা বলা হয়েছে।
১১. পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত আঞ্চলিক ভাষায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
১২. প্রাক-প্রাথমিকে যোগ হবে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণী, এরপর তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম শ্রেণীকে রাখা হয়েছে প্রাথমিকে, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণী উচ্চ প্রাথমিক।
১৩. স্কুল শিক্ষায় ত্রি ভাষা নীতি চালু করা হবে। যেখানে আঞ্চলিক, ইংরেজি ভাষার সঙ্গে সংস্কৃতকেও রাখার কথা বলা হয়েছে।