Weather Update: গভীর নিম্নচাপে পরিণত ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং, দুর্যোগ কেটেছে দক্ষিণবঙ্গে?
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ল্যান্ডফলের পর আরও উত্তর-পূর্বে সরে গিয়ে ক্রমশ দুর্বল হবে নিম্নচাপ। দুর্যোগ কেটেছে দক্ষিণবঙ্গে।
কলকাতা: বাংলাদেশে ল্যান্ডফলের পরেই শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ল্যান্ডফলের পর আরও উত্তর-পূর্বে সরে গিয়ে ক্রমশ দুর্বল হবে নিম্নচাপ। দুর্যোগ কেটেছে দক্ষিণবঙ্গে। আজ থেকে ফের শুষ্ক আবহাওয়া। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। যদিও উপকূলবর্তী এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বইবে। আজ দুপুর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের জন্য জারি থাকছে নিষেধাজ্ঞা। গতকাল ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে বরিশালের কাছে তিনকোণা ও সন্দ্বীপের মাঝে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে। সিত্রাংয়ের প্রভাব সবথেকে বেশি পড়েছে বাংলাদেশে। প্রবল ঝড় ও বৃষ্টিতে বরগুনা, নড়াইল, সিরাজগঞ্জ ও ভোলা জেলায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকাল থেকেই আকাশের মুখভার। দিনভর গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গেও তরাই-ডুয়ার্সে ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়া দফতর বলছে, সিত্রাং এবং অমাবস্যার কটালের জেরে, সমুদ্রে ৬ মিটার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য আগাম সতর্ক উপকূলের জেলাগুলো। তাজপুরে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা ছিল। গার্ডওয়ালের পাশে বোল্ডার ফেলে চলেছে বাঁধ মেরামতি। জলোচ্ছ্বাসের জেরে সমুদ্র তীরবর্তী গ্রামগুলো যাতে প্লাবিত না হওয়ায়, সেই কারণেই এই উদ্যোগ।
মন্দারমণির দাদনপাত্রবাড়, অরকবনিয়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় সমুদ্র বাঁধ না থাকায় তীরবর্তী গ্রামগুলিতে প্লাবনের আশঙ্কা। আতঙ্কে রয়েছে গ্রামবাসীরা। প্রশাসনের তরফে এখনও কাউকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি। অন্যদিকে প্রায় পর্যটকশূন্য শঙ্করপুর। গুটিকয়েক পর্যটক থাকলেও, তাঁদের সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। সমুদ্র কিছুটা উত্তাল। বইছে ঝোড়ো হাওয়া।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে হলদিয়ায়।হলদি নদীতে জলস্তর বাড়ছে। ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি শুরু হয়েছে বৃষ্টি। হলদি নদীর তীরবর্তী এলাকায় মাইকে প্রচার চালাচ্ছে এনডিআরএফ। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছে হলদিয়া-নন্দীগ্রাম ফেরি চলাচল। নন্দীগ্রাম-তেরোপেখিয়া ফেরি চলাচলও আজ ও আগামীকাল বন্ধ। আবহাওয়ার উন্নতি হলে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ফের জলপথ পরিবহণ চালু হবে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায়। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সঙ্গে বইতে শুরু করেছে ঝোড়ো হাওয়া। নদীতে খেয়া পারাপার বন্ধ। গোসাবার সাতজেলিয়ায় গাড়াল, বিদ্যাধরী-সহ একাধিক নদীতে জলস্তর বেড়েছে। প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। ছোট মোল্লাখালি থেকে বয়স্কদের ইতিমধ্যেই ফ্লাড সেন্টারে নিয়ে আসা হয়েছে। পাশাপাশি, কুমিরমারি, আমতলি-সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফেরিঘাটগুলোতে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার করে সতর্ক করা হচ্ছে।
গতকাল বেলা গড়াতেই বকখালিতে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট বাড়ে। পর্যটকশূন্য সৈকত। সমুদ্র কিছুটা অশান্ত ছিল কাল। সকাল থেকে বৃষ্টি চলছে। সমুদ্রের ধারে দোকানপাট বন্ধ। ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার তরফে মাইকে প্রচার চালায় প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের প্রয়োজনে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ফ্রেজারগঞ্জ মত্স্য বন্দরে পুলিশ বোটে করে চলে সতর্কতামূলক প্রচারও।