West Medinipur : নথি বা ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই মৃতদেহ সৎকার পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামীণ শ্মশানে ! উঠছে প্রশ্ন
West Medinipur : প্রশ্ন উঠছে তাহলে কীভাবে দিনের পর দিন পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন অবৈধভাবে শেষকৃত্য চলছে ?
অমিত জানা, মেদিনীপুর : নদিয়ার হাঁসখালিতে (Hanskhali) ডেথ সার্টিফিকেট (Death Certificate) ছাড়াই নাবালিকার সৎকার নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামীণ শ্মশানে কোনও নথি বা ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই চলে মৃতদেহ সৎকারের কাজ। শ্মশানে নেই কোনও রেজিস্টার। কোথাও আবার নদীর চরেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় দেহ। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন এলাকার বিডিও।
এপারে বাংলা, ওপারে ওড়িশা। মাঝ বরাবর নিজের খেয়ালে বয়ে চলেছে সুবর্ণরেখা। নদীর চরে কোথাও পড়ে পোড়া কাঠ, কোথাও পড়ে রয়েছে মাটির কলসি, এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে শেষকৃত্যের চিহ্ন। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে এভাবেই সুবর্ণরেখা নদীর পাড়ে শেষকৃত্য করা হয়। বেলমুলা, মানিকাডাঙর, পানশুলা-সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের আত্মীয় বিয়োগ হলে দাহকার্য সারেন বালির চরেই।
আরও পড়ুন ; মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাইরে বেরিয়েছিলেন, পিংলায় এবার গৃহবধূকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ
ধু-ধু প্রান্তরে নেই নজরদারির বালাই। নির্জন নদীর চরে এভাবেই কোনও ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই চলছে দেহ সৎকার। দাঁতনের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ প্রামাণিক বলেন, নদীর চরে ফাঁকা জায়গা পড়ে আছে। আমরা কয়েকটা গ্রাম মিলে দাহ করি। এখানে দাহ করতে চার থেকে পাঁচটি গ্রামের মানুষ আসেন। নদীর পাড়ে আমরা দাহ করি। পোড়ানোর জন্য বা পরে ডেথ সার্টিফিকেট লাগে না। গ্রামের মানুষ আমরা সবাইকে সবাই চিনি। তাই মিলেমিশে সৎকার করি।
অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায়, কালী মন্দির সংলগ্ন একটি গ্রামীণ শ্মশান থাকলেও সেখানে নেই কোনও নিয়মনীতির বালাই। শ্মশান সূত্রে খবর, সৎকারের জন্য লাগে না কোনও ডেথ সার্টিফিকেট। দাহ কার্য সম্পন্ন হওয়ার পর নেই কোনও বার্নিং সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা।
বেলদার শ্মশানকর্মী গঙ্গাধর দেবনাথ বলেন, এখানে সাতটি বুথের মানুষজন মৃতদেহ সৎকারের জন্য আসেন। আমাকে এসে বলার পর আমি গেট খুলে দিই। সৎকার করার সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমি দিয়ে দিই। মৃতদেহ নিয়ে এসে সৎকার করতে এলে নথি আমি দেখতেও চাই না, ওঁরাও দেখান না। আমাদের এখানে সার্টিফিকেট দেওয়ার কোনও ব্যবস্থাই নেই।
নিয়ম অনুযায়ী, ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া শ্মশানে দাহকার্য সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কীভাবে দিনের পর দিন পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন অবৈধভাবে শেষকৃত্য চলছে ? অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে কেউ ময়নাতদন্ত এড়িয়ে তড়িঘড়ি মৃতদেহ পুড়িয়ে দিলে দেখবে কে ?
নারায়ণগড়ের বিডিও কৃশানু রায় বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা গ্রাম পঞ্চায়েতে একজন নোডাল অফিসার থাকেন। তিনি জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্র দেন। শ্মশানে সৎকারের ক্ষেত্রে রেজিস্টার মেইন্টেইন করা হয় কি না সেই সঠিক তথ্য আমার কাছে নেই। তবে এটা মেনটেন করা উচিত। আমরা নিশ্চিত করব যাতে এরপর ঠিকঠাকভাবে করা হয়। কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও পুলিশ তার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। অভিযোগ থাকলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।
সম্প্রতি নদিয়ার হাঁসখালিতেও ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই নিহত নির্যাতিতার দেহ সৎকার করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।