![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
Anubrata Mandal : হাজিরা এড়ানো থেকে নাটকীয় গ্রেফতার, শিব-ট্যুইস্ট থেকে রাজনৈতিক তরজা, বছরভর আলোচনায় অনুব্রতর গ্রেফতার-নামা
Cow Smuggling Scam : দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বস্তিতে অনুব্রত। এই সময় ওয়ারেন্ট জারি করতে পারবে না ইডি। অনুব্রত-গ্রেফতার নামায় এর পরে ঠিক কী রয়েছে ? উত্তর দেবে নতুন বছর।
![Anubrata Mandal : হাজিরা এড়ানো থেকে নাটকীয় গ্রেফতার, শিব-ট্যুইস্ট থেকে রাজনৈতিক তরজা, বছরভর আলোচনায় অনুব্রতর গ্রেফতার-নামা Year Ender 2022 Regional Politics Anubrata Mandal arrest saga remain hot cake of the year Anubrata Mandal : হাজিরা এড়ানো থেকে নাটকীয় গ্রেফতার, শিব-ট্যুইস্ট থেকে রাজনৈতিক তরজা, বছরভর আলোচনায় অনুব্রতর গ্রেফতার-নামা](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2022/12/23/d1851846ff63a167da2dd7959905bc76167174299976752_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা : বছর-পারের মুখে আপাতত কেষ্ট-কাহানিতে শিব-ট্যুইস্ট। যার জেরে ইডি-র হেফাজত থেকে আপাতত রাজ্য পুলিশের হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) গ্রেফতার হয়ে বছরের প্রায় অর্ধেকটা সিবিআই-ইডির হেফাজতে আসানসোল জেলে কাটানোর পর আপাতত বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির ঠিকানা তাঁর জেলারই জেল।
অভিযোগ তৎকালীন দলীয় কর্মীকে মারধরের। তবে তা কতটা গুরুতর ? নাকি বিরোধীদের অভিযোগ মতো 'দিল্লি যাত্রা ঠেকানোর মরিয়া চেষ্টা'! সেটা ক্রমশ প্রকাশ্য। এর মাঝে অবশ্য দিল্লি হাইকোর্টের থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন কেষ্ট। রাজ্য রাজনীতির দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার বিরুদ্ধে আগামী ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি আগে পর্যন্ত ইডি ওয়ারেন্ট জারি করতে পারবে না বলেই রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের রায়ের ওপর নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। তবে গরু পাচারকাণ্ডের জল নতুন বছরে কোনদিকে গড়াবে? শেষপর্যন্ত কী দিল্লি-যাত্রা ঠেকাতে পারবেন অনুব্রত? তার থেকেও বড় প্রশ্ন যা রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে তা হল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে অনুব্রতকে রাজ্যের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা বলেই রাজ্যের শাসকদলের যে অভিযোগ, তা কী ফলবে ? ওই সময় কোথায় থাকবেন অনুব্রত ? কী-ই বা হবে গরু পাচার মামলার ভবিষ্যৎ ? সামনের বছরে ঘটনাক্রম কোন পথে যায় সেটার অপেক্ষার মাঝেই একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক, চলতি বছরের অনুব্রত গ্রেফতার-নামাতে।
সবমিলিয়ে রাজ্যবাসী যেমন নতুন বছরের অপেক্ষায়, তেমনই আগামী বছরে অনুব্রত ঘটনাক্রম কোনদিকে যায়, সেটা জানতে- রাজনৈতিক মহলের উৎসাহের শেষ নেই। এমনিতেই বরাবর তাঁর বিভিন্ন 'ডায়লগ'-র জন্য শিরোনামে থাকতেন অনুব্রত মণ্ডল। আপাতত জেলে থাকলেও শিরোনাম থেকে মোটেই খুব একটা দূরে জাননি বীরভূমের তৃণমূল কর্মীদের কেষ্ট-দা। তিনি গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে থাকলেও দল যে তাঁর পাশেই, সেটা বারবার সামনে এসেছে। প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সমালোচনার সঙ্গে অনুব্রত-র প্রশংসা করেছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গরু পাচার মামলার তদন্ত শুরু পর থেকেই সিবিআই একাধিক নথিতে অনুব্রত মণ্ডলের নাম পাওয়ার কথা সামনে আনে বছরের শুরুতেই। তারপর একের পর এক সমন পাঠানো হয় তাঁকে। বেশ কয়েকবার যা এড়িয়ে যান কেষ্ট। মে মাস নাগাদ তাঁর অসুস্থতা ও সিবিআইয়ের সমন পাঠানোর তৎপরতা দুই-ই কার্যত শীর্ষে পৌঁছয়। যে পর্বে বেশ কয়েকদিন এসএসকেএমে ভর্তিও ছিলেন অনুব্রত। একাধিক সমস্যার কথাও আসে সামনে। যে ঘটনাক্রম গত মে মাসের।
অগাস্টের শুরুতে অবশ্য গোটা ঘটনায় ঘটে নাটকীয় পট পরিবর্তন। দিনটা ১১ অগাস্ট। সাতসকালে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি কার্যত ফিল্মি কায়দায় ঘিরে ফেলে সিবিআইয়ের দল। বেশ কয়েকঘণ্টা জেরার পর তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলের মধ্যে সিবিআইয়ের তরফে সরকারিভাবে জানানো হয়, গ্রেফতার করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। তারপর থেকে আসানসোল জেলই ক'দিন আগে পর্যন্ত ছিল তাঁর ঠিকানা। তবে মাঝের গ্রেফতার-পর্বের সময়টা ছিল রাজ্য রাজনীতির মতোই ঘটনাবহুল।
কখনও সিবিআই বিচারককে জনৈক আইনজীবীর অনুব্রত-র জামিন চেয়ে হুমকি চিঠি, কখনও জেল থেকেই দলীয় কর্মীদের বার্তা, কেষ্ট-দা থেকেছেন তাঁর ছন্দেই। অপরদিকে পাল্টা একাধিক দাবি ও তথ্য-প্রমাণ সামনে এনে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে রাখতে সক্ষম হয়েছে সিবিআই। গরু পাচার থেকে প্রাপ্ত টাকা বিভিন্নভাবে চালকল থেকে শুরু করে অন্য নানাভাবে অনুব্রত মানি লন্ডারিং করেছেন বলে অভিযোগ করে সিবিআই। তাঁর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী সায়গল হোসেন ও অনুব্রত সরাসরি টাকা নিতেন বলেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযোগ তোলে। সঙ্গে তারা চালাতে থাকে একাধিক জায়গায় খানা তল্লাশি।
যে পর্বেই সিবিআইয়ের সঙ্গে তদন্তে যুক্ত হয় ইডিও। তাঁরা অনুব্রত-র হঠাৎ বেড়ে যাওয়া সম্পত্তির বিভিন্ন বিষয় সামনে তুলে ধরতে থাকে। এমনকি বেশ কয়েকবার জেরার মুখে পড়তে হয় অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকেও। তাঁর সম্পত্তিবৃদ্ধিও ঘুরপথেই বলে অভিযোগ শানায় ইডি। ইডি-র তরফে চার্জশিটে সামনে আনা হয় একের পর এক অনুব্রত-ঘনিষ্ঠের লটারি প্রাপ্তির চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। এরই মাঝে গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সিবিআইয়ের থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ইডি। হঠাৎ সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে চলে টানা জিজ্ঞাসাবাদ। মাঝে মাঝেই অনুব্রত-র বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতারও অভিযোগ তোলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারপর দিল্লিতে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়ে থাকা সায়গলের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে অনুব্রতকে জেরা করার প্রক্রিয়াও শুরু করে ইডি। এর মাঝে অবশ্য বারবারই তিনি ভুল কিছু করেননি বলে সাফ জানান অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে শানান প্রতিশোধমূলক রাজনীতির অভিযোগও।
এর মাঝেই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট অবশ্য ইডিকে ছাড়পত্র দেয় শেষমেশ অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করার। কিন্তু প্রাক্তন তৃণমূল কর্মী শিবঠাকুরের অভিযোগ ও তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুলিশ আগের অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে পেশ করে তাঁদের হেফাজতে পায় অনুব্রত মণ্ডলকে। যে প্রসঙ্গে বীরভূম তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'হ্যাঁ, কৌশল-ই তো'। অনুব্রত-র দিল্লি যাত্রা রুখতে 'কৌশল' কাজে দেয়, নাকি পুলিশের কাছে জমা অভিযোগ কাজে লাগিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে বিপাকে ফেলার নতুন অস্ত্র পায় কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি, এখন সেটাই দেখার। প্রভাবশালী তত্ত্বে একাধিকবার জামিনের আর্জি খারিজ হয়েছে ইতিমধ্যেই, 'কৌশল' এবার কেষ্ট-র বিপক্ষে যায় কি না, সেই উত্তর দেবে নতুন বছরই।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)