Success Story: দৃষ্টিহীনতা কাড়তে পারেনি জেদ, লড়াই করেই দেশের IFS অফিসার বিনো
Beno Zephine: দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন IFS অফিসার বিনো জেফিন। ২০১৫ সালে তিনি সিভিল সার্ভিসে নিযুক্ত হন। কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি ? কতটা লড়াই করতে হয়েছে তাঁকে ?
Success Story: সাফল্যের পথে বাধা আসবেই। আর সেই বাধাকে জয় করে এগিয়ে চলাই সাফল্যের অন্যতম সূত্র। UPSC পরীক্ষা দেশের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। বহু সাধারণ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষা পাশ করে IPS, IAS বা IRS হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। লড়াই অনেক। কিন্তু সেই লড়াই অনেকগুণে বেড়ে গিয়েছিল বিনোর জীবনে। দৃষ্টিহীন হয়ে কীভাবে প্রস্তুতি নিতেন তিনি ? কীভাবেই বা দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন IFS অফিসার হয়ে ওঠেন বিনো জেফিন (Beno Zephine)? এ কাহিনি তাঁরই অদম্য জেদের কথা, এ কাহিনি তাঁর সাফল্যের আড়ালের যন্ত্রণাময় দিনগুলির কথা। তাঁর কাহিনি আদপে ধৈর্য, সংকল্প এবং বাঁধ ভাঙার সাহসের কথা বলে।
পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ
চেন্নাইতে জন্ম হয় বিনোর। তাঁর বাবা লিউক অ্যান্থনি চার্লস পেশায় ছিলেন সামান্য রেলকর্মী এবং তাঁর মা মেরি পদ্মজা ছিলেন গৃহকর্ত্রী। জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন বিনো। কিন্তু এই দৃষ্টিহীনতা তাঁর জেদকে কেড়ে নিতে পারেনি। চেন্নাইতেই দৃষ্টিহীনদের স্কুল লিটল ফ্লাওয়ার কনভেন্টে পড়াশোনা শুরু করেন বিনো (Beno Zephine)। তারপর চেন্নাইয়ের স্টেলা মেরিজ কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক উত্তীর্ণ হয়ে তিনি স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন লয়োলা কলেজে। IFS হওয়ার আগে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন বিনো জেফিন।
UPSC-র প্রস্তুতি
তবে তাঁর ইচ্ছে ছিল সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার। আর সেই স্বপ্নকে সামনে রেখে UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন বিনো। সিভিল সার্ভিস হওয়ার জন্য তাঁর সবথেকে বড় বাধা ছিল দৃষ্টিহীনতা। কিন্তু তাতেও দমে যাননি তিনি। ২০১২ সালে প্রথম পরীক্ষায় বসেন বিনো (Beno Zephine)। কিন্তু প্রিলিমসে পাশ করলেও সেবারে মেনস পরীক্ষায় সফল হননি তিনি। তবে লড়াই থামেনি। ২০১৩ সালে ফের পরীক্ষায় বসেন বিনো জেফিন। আর সেবারেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। ৩৪৩ র্যাঙ্ক অর্জন করে স্বপ্নপূরণ হয় বিনোর। ২০১৫ সালে যখন IFS অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন বিনো জেফিন, তাঁর বয়স তখন মাত্র ২৫ বছর।
কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ?
দৃষ্টিহীন হওয়ার কারণে বিনোকে (Beno Zephine) একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের সাহায্য নিতে হয়েছিল যার নাম JAWS অর্থাৎ Job Access With Speech। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে দৃষ্টিহীনরা কম্পিউটারে পড়াশোনা করতে পারেন। কম্পিউটার স্ক্রিন বা মোবাইলেও এই সিস্টেমের সাহায্যে পড়া যায়। কোনও টেক্সট এই মাধ্যমে অডিয়ো হিসেবে শোনানো হয়। তাঁর মা পাশে ছিলেন সবসময়। সমস্ত পড়া, নোট ইত্যাদি তাঁর মা পড়ে দিতেন আর শুনে শুনেই মনে রাখতেন বিনো। স্টাডি মেটেরিয়াল পড়ার জন্য ব্রেইল পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন বিনো। কিন্তু এত সমস্যা সত্ত্বেও তাঁর মন থেকে হারিয়ে যায়নি স্বপ্ন।
প্রত্যাশীদের জন্য উপদেশ
বিনোর লড়াই বুঝিয়ে দিয়েছে মানুষের সফল হওয়ার পিছনে আসলে লুকিয়ে থাকে জেদ আর প্রবল ইচ্ছে। আর মানুষের আসল শক্তি হল তাঁর মানসিক শক্তি, তাঁর স্পিরিট, অদম্য জেদ আর কঠোর সংকল্প। এসবের দ্বারা অনায়াসে পৃথিবীর সমস্ত বাধা, এমনকী শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও জয় করা যায়।
আরও পড়ুন: IRS Success Story: সপ্তাহান্তে কয়েক ঘণ্টা পড়েই UPSC জয় দেবযানীর, তাঁর সাফল্যের মূলমন্ত্র কী ?
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI