এক্সপ্লোর
Advertisement
রবিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত নিজের এলাকায় 'বন্দি' অনুব্রত, নয়া নির্দেশ কমিশনের
বীরভূম: রবিবার সন্ধে ছ’টা পর্যন্ত নিজের বিধানসভা এলাকার বাইরে বেরোতে পারবেন না অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমে ভোটের আগে শেষবেলায় নির্দেশ কমিশনের। এর আগে অবশ্য অনুব্রতকে বিকেলে নিজের বিধানসভা এলাকায় ফিরতে বলায় ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কার্যত তর্কাতর্কি বাধে জেলা তৃণমূল সভাপতির।
নজরবন্দি অবস্থাতেই ভোটের আগের দিন প্রায় গোটা বীরভূমে ঘুরে বেড়ালেন অনুব্রত মণ্ডল। আর নির্বাচন কমিশনের টনক নড়ল শেষবেলায়। শনিবার বিকেলে কমিশন নির্দেশ দেয়, অনুব্রত মণ্ডল যে বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার, রবিবার সন্ধে ছ’টা পর্যন্ত তিনি সেই এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, কমিশন এই নির্দেশ দিতে এত দেরি করে ফেলল কেন?
বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি এদিন দিনভর একের পর এক বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়েছেন। দরজা বন্ধ করে পার্টি অফিসে বৈঠক করেছেন। শেষবেলায় তাঁকে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ফিরিয়ে আর লাভ কী? অনুব্রত কি আর শেষবেলার জন্য কোনও কাজ ফেলে রেখেছেন? অনুব্রতকে নজরবন্দি করে রাখা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ জানিয়ে এদিন দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ জানায় সিপিএম। অনেকে বলছেন, বিরোধীদের এই অভিযোগ যে অমূলক নয়, তা তো অনুব্রতর বেপরোয়া মেজাজেই স্পষ্ট।
নজরবন্দি অবস্থাতেই, শনিবার দিনভর অনুব্রত মণ্ডল চষে ফেললেন বীরভূম। যা দেখে বিরোধীদের প্রশ্ন, এমন নজরবন্দি করে কী লাভ!
শুক্রবার রাত ২টো থেকে বোলপুরে অনুব্রতর বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। শনিবার সকাল, আটটা নাগাদ পৌছে যান ভিডিগ্রাফার এবং স্থানীয় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। সবাই বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সকাল এগারোটা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন অনুব্রত মণ্ডল। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা নানুর। সেখানে দলীয় পার্টি অফিসে ঢুকে বৈঠক। বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনী, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, ভিডিওগ্রাফার।
নজরবন্দি হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন
নানুরের পর লাভপুরেও একই ছবি। পার্টি অফিসের ভিতরে ঢুকে দলীয় প্রার্থী মনিরুল ইসলাম-সহ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন অনুব্রত মণ্ডল। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকলেন ভিডিওগ্রাফার, কেন্দ্রীয় বাহিনী। নানুর থেকে সাঁইথিয়া হয়ে ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ষাটপলশা গ্রাম। এখানে তো অনুব্রত মণ্ডল পার্টি অফিসে ঢোকার পর শাটারই নামিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের থেকে পাওয়া নিরাপত্তাকর্মীদের কাঁধে ভর করে গাড়িতে উঠে সোজা তারাপীঠ। সেখানে একটি হোটেলে গিয়ে হাসানের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মাল-সহ দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সেরে, মুরারই। সেখানেও পার্টি অফিসের দরজা বন্ধ করে বৈঠক। এখানেও বাইরে দাঁড়িয়ে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, ভিডিওগ্রাফার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। তা হলে আর কমিশনের নির্দেশ মতো সর্বক্ষণের নজরবন্দি করা হল কোথায়? বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি রাখার নামে তাঁর নিরাপত্তার বহরটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতদিন তাঁর নিরাপত্তায় থাকত রাজ্য পুলিশ। এখন কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই প্রেক্ষাপটে, দিনের শেষে তৎপর হয় কমিশন। শনিবার বিকেলে রামপুরহাট পার্টি অফিস থেকে বেরনোর সময় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে বলেন, আপনি নিজের বিধানসভা এলাকায় ফিরে যান। যা শুনে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে একবার কার্যত তর্কাতর্কিতেও জড়িয়ে পড়েন জেলা তৃণমূল সভাপতি। নির্দেশ মানা তো দূরের কথা, উল্টে অনুব্রতই কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, আপনার কাছে লিখিত নির্দেশ আছে। থাকলে দেখান। এরপর অনুব্রত সদর্পেই জানিয়ে দেন শুধু রামপুরহাট নয়, বোলপুর ফেরার পথে তিনি দুবরাজপুর এবং সিউড়িতেও থামবেন। এরপর কমিশন নির্দেশ দেয়, রবিবার সন্ধে ৬টা পর্যন্ত নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের বাইরে যেতে পারবেন না অনুব্রত মণ্ডল। কমিশনের নির্দেশের পর অবশ্য দুবরাজপুরে আর গাড়ি থামাননি অনুব্রত। সব শুনে বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, অনুব্রত তো যা করার করেই ফেলেছেন। ভোটের আগের দিন জেলার একের পর এক বিধানসভা কেন্দ্র ঘুরে বেড়ালেন। দরজা বন্ধ করে বৈঠক করলেন। এত কিছুর পর হুঁশ ফিরল কমিশনের!
নির্বাচন ২০২8 (Elections) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
খবর
জেলার
খবর
Advertisement